৯ দফা দাবিতে লংগদুতে ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দশ লক্ষ টাকা জমা দিয়েছে ইউপিডিএফ লংগদুতে প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে অর্ধশত একর বনভূমি ! পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণে প্রধান উপদেষ্টা এবং সরকারের নীতি সহাবস্থানের পক্ষে বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে বিধি নিষেধ প্রত্যাহারের দাবি
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। জামিনে মুক্তদের জেল গেইটে পুনঃ গ্রেফতার বন্ধ করা, আনন্দ প্রকাশ চাকমাসহ ইউপিডিএফ ও দেশের রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেনে করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট ২০২৪) সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ২য় তলা জহুর হোসেন চৌধুরী হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সংগঠক মাইকেল চাকমা।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে সংস্কার কার্যক্রমের প্রাথমিক ও আশু পদক্ষেপ হিসেবে অন্তর্বর্র্তীকালীন সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো:
১) অবিলম্বে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত সকল শহীদের নাম প্রকাশ ও হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ফ্যাসিস্টদের গ্রেফতার পূর্বক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
২) অবিলম্বে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলে আটক ইউপিডিএফ ও তার সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মুক্তি দিতে হবে; আদালত থেকে জামিন লাভের পর জেল গেট থেকে পুনরায় গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে; এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নামে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা ও হুলিয়া প্রত্যাহার করতে হবে।
৩) ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে নব্য মুখোশ বাহিনী ও মগ পার্টি ভেঙে দিতে হবে এবং তাদের মধ্যে যারা খুন, গুম, অপহরণ ও সন্ত্রাসের সাথে জড়িত তাদের গ্রেফতার পূর্বক শাস্তি দিতে হবে।
৪) স্বনির্ভর গণহত্যা ও পানছড়িতে চার যুব নেতা হত্যাসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল হত্যাকান্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করতে হবে এবং তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে যুক্ত করতে হবে।
৫) অবিলম্বে নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।
৬) অবিলম্বে বান্দরবানে চলমান কেএনএফ-বিরোধী অভিযানের নামে বম জাতিগোষ্ঠীকে নিশানা করে জাতিৎ-নিধন অভিযান বন্ধ করতে হবে এবং শিশু ও নারীসহ আটককৃত বমদের মুক্তি দিতে হবে।
৭) খাগড়াছড়ির রামগড়ে গৃহবধূকে ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার এবং রাঙামাটি ও বান্দরবানে ধর্ষণ প্রচেষ্টার সাথে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে।
৮)পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অপারেশন উত্তরণ বাতিল পূর্বক সেনাশাসন প্রত্যাহার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১ দফা নির্দেশনা বাতিল করতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে মাইকেল চাকমা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ সহ সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, তাদের মহান আত্মত্যাগের ফলে বাংলাদেশ আজ দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ তাদের আত্মত্যাগের কারণেই আজ আমি মুক্ত, যেন মৃত্যু থেকে আমার ফিরে আসা। গোপন বন্দীশালা তথাকথিত আয়নাঘর থেকে যাদেরকে এখনও মুক্তি দেয়া হয়নি, আমি তাদের মুক্তির জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, সমতলে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর ও সহযোগিদের কেউ কেউ গ্রেফতার হলেও, পার্বত্য চট্টগ্রামে তারা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে এবং সমতলের মুক্ত হাওয়া পাহাড়ে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন মাইকেল চাকমা। এতে আরো উপিস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ সদস্য থুইক্যচিং মারমা ও সদস্য সুনয়ন চাকমা। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর সভাপতি অঙ্কন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সদস্য রূপসী চাকমা প্রমুখ।