বাঘাইছড়ি উপজেলায় স্কাউটসের ত্রি-বার্ষিক কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফ এর চাঁদার দাবিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী ফুটবলারদের পেশাগত দক্ষতায়নে ৪ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ শুরু বান্দরবানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ বাঘাইছড়িতে স্কুলে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে ২৭ বিজিবি মারিশ্যা জোন
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নতুন করে এক আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ। ২২ জানুয়ারি ভোররাতে সংগঠনটি মোবাইল টাওয়ার সংযোগ এবং বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিয়ে লাখো মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। খাগড়াছড়ি এবং রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোবাইল টাওয়ারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং বিপাকে পড়েছে সাধারণ জনগণ। এ ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
জানা গেছে, ইউপিডিএফ সংগঠনটি মোবাইল টাওয়ার অপারেটরদের কাছে বিপুল পরিমাণ চাঁদা দাবি করেছে। অপারেটররা চাঁদা পরিশোধে অস্বীকৃতি জানালে সংগঠনটি ১০টি মোবাইল টাওয়ারের সংযোগ কেটে দেয়। এর মধ্যে ৬টি টাওয়ার খাগড়াছড়ি জেলায় এবং ৪টি রাঙামাটি জেলায় রয়েছে। উপজেলা গুলো হলো- দীঘিনালা, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা এ নানিয়ারচর। কয়েকটি টাওয়ার অফিসে ভাংচুর, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নষ্ট করেছে। এসব এলাকায় এখন মোবাইল নেটওয়ার্ক একেবারে নেই। এতে করে ওই এলাকার লাখো মানুষ একেবারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, এবং তাদের নিরাপত্তা সংকটেও পড়েছে।
এই পরিস্থিতির ফলে শুধু মোবাইল সেবা নয়, পুরো এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যাপক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই জরুরি ফোন কল করতে পারছেন না, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি চাঁদা পরিশোধ না করা হয়, তবে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য এলাকায়ও একই ধরনের কার্যক্রম চালাবে। এই ধরনের হুমকি এবং অব্যাহত চাঁদাবাজি মোবাইল টাওয়ার কোম্পানির কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ে এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চললেও, এর প্রতিকার এখনও কার্যকরভাবে নেওয়া হয়নি।
ঘটনায় স্থানীয় মানুষদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষদের অনেকেই এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চায়। তবে, প্রতিরোধের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যতটা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, ততটা দৃশ্যমান নয়। ইউপিডিএফের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি রাজনৈতিক সংকটের সুযোগ নিয়ে নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে এবং স্থানীয় জনগণের উপর ভয় দেখিয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে। স্থানীয় অধিবাসীরা এই নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। সরকারের উচিত, এই অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে। জনগণের নিরাপত্তা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা সুনিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য।
ইউপিডিএফের এই কর্মকাণ্ড শুধু এলাকায় নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে ক্ষতি সাধন করছে না, বরং এটি স্থানীয় জনগণের মানসিকতা এবং নিরাপত্তা প্রশ্নেও বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে। এই ধরনের ঘটনাগুলো শুধু স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগই বাড়ায় না, পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্ব এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করে।
স্থানীয়রা আশা করেন, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান হবে, এবং পাহাড়ে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।