সারাদেশ যখন একজন জেলা প্রশাসকের স্ক্যান্ডাল নিয়ে ব্যস্ত ঠিক একই সময়ে
একজন মাননীয় সংসদ সদস্যও দিনভর এই অনলাইন-সে অনলাইন-এ শিরোনাম হয়েছেন।
অবশ্য, জামালপুরের জেলা প্রশাসকের কীর্তিকান্ড আর সংসদ সদস্যের কর্মকান্ড;
একই পাল্লায় মাপার মতো নয়। তবুও ‘অফলাইন’ আর ‘অনলাইন’-এ দুই জনই সমান
গুরুত্ব পেয়েছেন।
পার্বত্য শান্তিচুক্তি’র আগে তিন পার্বত্য জেলায় এনজিও কার্যক্রম একেবারে
সীমিত পর্যায়েই ছিল। রাবেতা, ওয়ার্ল্ড ভিশন, কারিতাস, সিসিডিবি ছাড়াও কিছু
ধর্মীয় আদলের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চোখে পড়তো। বিশেষ করে ধর্ম প্রচারের
দিকেই এসব সংগঠনের কৌশলী মনোযোগ ছিল বেশি। সে সময়কার পরিস্থিতিও ব্যাপকভাবে
সব জায়গায় এনজিও কার্যক্রম চালানোর সহায়ক ছিল না।
গত রোববার মধ্য রাতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরের বাবুপাড়ায় প্রতিপক্ষ
সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের গুলিতে দু’দুটো তরুণের প্রাণ অকালে ঝরে গেছে। প্রায়
প্রতিনিয়তই পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের ছোঁড়া বারুদের উত্তাপে মানুষের জীবন
বিপন্ন হচ্ছে। চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ জনজীবন। তারই ধারাবাহিকতায়
মৃত্যু’র মিছিলে যোগ হলো আরও দুটি প্রাণ আরও দুটি নাম। শতসিদ্ধি চাকমা ও
এনো চাকমা। এই তালিকা দিনকে দিন দীর্ঘ হতে চলেছে।
সপ্তাহখানেক আগে একটি বিয়োগান্ত সংবাদের সহমর্মী হতে বাইকযোগে রাঙামাটি
যাচ্ছিলাম। পথের দুইপাশে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের
নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্পের সাইনবোর্ড ছিল চোখে পড়ার মতো। আমি বার বার এসব
দেখিয়ে সফরসঙ্গীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করছিলাম। তিনিও কিছুটা বাধ্য
হয়েই সায় দিলেন। কিন্তু জটিল একটি প্রশ্নেরও অবতারণা করলেন। তিনি বললেন,
এসব প্রকল্প সঠিক মানুষের ভাগ্যে জুটেছে কীনা; সেটিও দেখা দরকার।
প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালিত হয় মা দিবস। দিবস এলে সবাই মাকে
নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়। আমিও একজন সৌভাগ্যবান মানুষ হিসেবে মায়ের
উপস্থিতিকে উপভোগ করতে প্রতিদিন ২-৩ বার, কখনো ৫-৬বারও ফোনে কথা বলি। মায়ের
দৈনন্দিন প্রয়োজনগুলোর খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করি। নিজের সামর্থের মধ্যে
হলে দেয়ার চেষ্টা করি। না পারলে সময় চেয়ে রাখি।
মহালছড়ি উপজেলায় যতোজন ডাক্তারী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, তাঁদের কতজনকে আমরা
মনে রেখেছি? আগামীতে অনেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে পড়ালেখা করে, এই পেশায় নিয়োজিত
হবেন; কিন্তু আমাদের ডাঃ মানিক ত্রিপুরা কিংবা ডাঃ স্বপন চক্রবর্তীর উপরে
কেউ কি যেতে পারবেন? তাঁরা উভয়ে বর্তমান সময়ের তুলনায় ততোটা শিক্ষিত
(চিকিৎসা বিদ্যায়) নন; কিন্তু এক সময়ে বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ মহালছড়িতে তাঁরাই
ছিলেন বৈদ্য’র পরে সর্বশেষ ভরসা।
মুক্তিযুদ্ধ শেষ। শেষ পড়ালেখাও। এবারের ভাবনা জীবিকা। প্রত্যাশা কিছু করা;
কর্মের সন্ধান। সে কারণে অংশ নেন প্রথম বিসিএস পরীক্ষায়। কাঙ্খিত ফল পেলেন।
এবার সরকারি চাকরিতে যাওয়ার পালা। তার আগে গেলেন নেতার (জাতির জনক) কাছে।
জানালেন, বিসিএস পাসের কথা। খুশি হলেন নে
“ম্যালেরিয়ায় আর মৃত্যু নয়” - এই কাংখিত লক্ষ্যে এগুচ্ছে পার্বত্য জেলা
রাঙামাটি সহ অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা। বাংলাদেশের
ম্যালেরিয়া প্রবন ১৩টি জেলার মধ্যে অধিক ঝুকিপূর্ণ জেলা হিসেবে পরিচিত এই
তিন পার্বত্য জেলার ২৬টি উপজেলার ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর
পরিসংখ্যান ক্রমন্বয়ে নিম্মমুখী হচ্ছে। ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রনে এই সফলতা
সকলের মাঝে আশার আলো প্রজ্বলিত করেছে।’
মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা । পাহাড়ের কোলে শ্বাশত সুন্দরের মাঝে জন্ম নেওয়া
এক দ্রোহী নামের মূর্তমান প্রতীক এই ক্ষণজন্মা । তারঁ জন্ম ১৯৩৯ সালের
আজকের এই দিনে (১৫ সেপ্টেম্বর)। আমি এবং আমার সমসাময়িক প্রজন্মের তরুণদের
এম.এন লারমাকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। কিন্তু দেখার সৌভাগ্য হয়েছে এবং হচ্ছে
তাঁর জীবনবোধের দাম্বিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে পাহাড়ের প্রত্যেকটি ঘুমন্ত
মানুষের অন্তরে জাগিয়ে দেওয়া জুম্মজাতীয়তাবাদী চেতনায় সাম্যবাদী ও মানবিক
আদর্শের সমাজ বিনিমার্ণের লক্ষ্যে সংগ্রামরত সবুজ পাহাড়কে এবং প্রিয়
বাংলাদেশকে।আমরা যারা এম. এন লারমাকে স্বচক্ষ্যে দেখিনি কিন্তু লারমাকে পাঠ
করছি
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক।
পার্বত্যচট্টগ্রামেরপুনর্গঠিতভূমিকমিশনওএরচ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে নিজ ফেইসবুক আইডিতে
চাকমা সার্কেল ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় নিজস্ব মতাসত ব্যক্ত করেছেন
সেটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।