প্রকাশঃ ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ০৬:৩৫:৪৮
| আপডেটঃ ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৬:২৪:২৪
সিএইচটি টুডে ডট কম, জুরাছড়ি (রাঙামাটি)। রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগীছড়া ইউনিয়নের কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে এলাকাবাসী। শনিবার সেচ্ছা শ্রমে কলেজের অবকাঠামো নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিন শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিক্ষক, জনপ্রতিনিধিরা সম্মিলিত ভাবে কলেজের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করছেন। তাদের কারো হাতে কোদাল আবার কারো হাতে মাটি ফেলার জন্য বস্তা, আবার কারো হাতে দা। সবাই সারিবদ্ধ ভাবে কাজ করছেন। কেউ করছেন জঙ্গল পরিস্কার আবার কেউ করছেন মাটির কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার বনযোগীছড়া ইউনিয়নে উপজেলাবাসী কলেজটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। নাম দেওয়া হয়েছে শলক কলেজ। জুরাছড়িতে ৬১টি সরকারী ও ৪টি বেরসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। তিন উচ্চ মাধ্যমিক ও তিনটি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্ত এ উপজেলাই নেই একটিও কলেজ। ফলে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ফেরিয়ে বছর বছর ধরে উপজেলা থেকে রাঙামাটি শহরে গিয়ে পড়া-শোনা করতে হয়। আবার অনেক শিক্ষার্থীর অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে কলেজে পড়াশুনার সুযোগ হয়না।
৫০ বছরের গঙ্গা দেবী চাকমা জানান, বড় মেয়ে চম্পা চাকমাকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল উচ্চ শিক্ষাই শিক্ষিত করে একদিন ডাক্তার হয়ে দেশ ও দশের সেবা করবে। কিন্ত ২০০৬ সালে এসএসসি পরিক্ষায় পাশ করার পর আর্থিক আভাবে আর পড়ালেখা করানো সম্ভব হয়নি। আগামী প্রজম্ম জাতে করে পড়া লেখা থেকে বঞ্চিত না হয় তাই সেচ্ছাই কলেজ নির্মান কাজে অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
অবসর প্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি তালুকদার জানান, প্রাথমিক ফেরিয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পাশ করার পর দারিদ্রতার কারণে শহরে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারে না। এতে তাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ধারা ধরে রাখতে উপজেলাই একটি কলেজ প্রয়োজন।
স্থানীয় ভূমিদাতা হেডম্যান করুনা ময় চাকমা(৭২) বলেন, এলাকার ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার কথা ভেবে তিনি ৮০ শতক জমি কলেজের নামে দান করেছেন।
বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে একাডেমি ভবনের জন্য ১০০ ফুট দৈর্ঘ ও ২০ ফুট প্রস্থের কাচা বেড়া ও টিনের ঘর নির্মাণ করা হবে। এতে কক্ষ থাকবে ৮টি।
শলক কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন, অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি তাঁরা কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।