প্রকাশঃ ০৬ মার্চ, ২০১৯ ১১:৪৭:২৯
| আপডেটঃ ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:৫৯:০১
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। জেলার স্কুল পড়–য়া শিশুদের যাপিত জীবনের নানা সমস্যা এবং অভিযোগ শিশুদের মুখে শুনে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো: শহিদুল ইসলাম। দুপুরে ন্যাশনাল চিলড্রেনস টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ)-এর আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নানা রকম সমস্যা আর শিশু অধিকার বাস্তবায়ন সম্পর্কিত জবাবদিহিতা বিষয়ক অধিবেশনে তিনি এ দায়বদ্ধতার কথা প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ইভটিজিং নিয়ে প্রশাসন অধিক সচেতন। আইন শৃংখলা বাহিনী ও প্রশাসনের কাছে এই বিষয়টি জিরো টলারেন্স। স্কুলে কিশোরীদের বয়:সন্ধীকালীন সমস্যাকে স্পষ্টভাবে বলতে পারার জন্য এনসিটিএফ সদস্যদের অভিবাদন জনান। স্কুলে কোন ছাত্রীর হঠাৎ সমস্যা হলে যাতে উপকরণ সহজপ্রাপ্য হয় সে দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রধান অতিথি প্রথমে একটি স্কুলে জেলা প্রশাসকের পক্ষ হতে উপকরণ সরবরাহের পদক্ষেপ নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা সদরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দিয়ে শুরু করবেন বলেও তিনি মত ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিজ উপজেলায় উদ্যোগ গ্রহনেরও অনুরোধ করেন। ।
দাতা সংস্থা প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাবারাং কল্যাণ সমিতির সহযোগিতায় এনসিটিএফ সভাপতি স্কুল শিক্ষার্থী রৌদ্র ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি ছাত্রী জবা ত্রিপুরা আর নুসরাত জাহান জুঁই-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী মো. চাহেল তস্তরী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মো: নাজমুস শোয়েব, সহকারি পুলিশ সুপার (ডিএসবি) খন্দকার গোলাম শাহনেওয়াজ ও আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী প্রমূখ।
অধিবেশনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাবারাং সংস্থার কর্মসূচি সমন্বয়কারী বিনোদন ত্রিপুরা। এনসিটিএফ সদস্যদের দ্বারা উপস্থাপিত সমস্যাগুলোর মধ্যে বর্ষায় চেংগী নদীর পানী বেড়ে গেলে স্কুলে, হাসপাতালে বা বাজারে যাতায়াতের সমস্যা, পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সমস্যা, গ্রামের অধিকাংশ পরিবার স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট বিষয়ে সচেতন না হওয়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের হুমকি, কিশোরীদের বয়:সন্ধিকালীন সমস্যাকে এখনও পরিবারে বা সমাজে ভালো চোখে না দেখার কারণে বিদ্যালয়ে অপ্রত্যাশিত সমস্যায় অনুবিধা পড়তে হয়, রাস্তাঘাটে, দোকানে বা খেলার মাঠের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় বখাটে ছেলেদের কাছ থেকে ইভ টিজিংয়ের শিকার, শিক্ষক দ্বারা শারীরিক শাস্তি ও প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করার মতো পরিবেশ তৈরি, স্কুলের টয়লেটগুলোতে সঠিক নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের অভাব, শিশু পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রের অপ্রতুলতা, বোর্ড পরীক্ষার সময় রাস্তায় র্যালী বা মিছিলের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে ট্রাফিক জ্যাম সৃষ্টি অন্যতম।
এনসিটিএফ সদস্যদের দ্বারা উপস্থাপিত সমস্যাসমূহ নিয়ে পরামর্শমূলক, জবাবদিহিতামূলক আলোচনায় অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী মো. চাহেল তস্তরী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মো: নাজমুস শোয়েব, সহকারি পুলিশ সুপার (ডিএসবি) খন্দকার গোলাম শাহনেওয়াজ, খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীলা তালুকদার জাবারাং নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, সাংবাদিক জীতেন বড়–য়া, মৌজা প্রধান হেডম্যান নিবুল লাল রোয়াজা, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা উষানু চৌধুরী এবং পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।
শিশুদের সাথে এমন ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য বলে মনে করেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মো: শহিদুল ইসলাম।