প্রকাশঃ ২৬ নভেম্বর, ২০২২ ০৫:৪৪:৪০
| আপডেটঃ ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:০৬:৪০
ষ্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি। রাঙামাটির দুর্গম চারটি উপজেলার ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে বিশেষ বিবেচনায় জাতীয়করণ এবং এর আওতাধীন ২৯৩ জন শিক্ষককে আত্তীকরণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষ উপহার হিসাবে চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘পিনন-হানি’ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।
শনিবার সকালে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ স্বরুপ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দেওয়া এই উপহার গ্রহণ করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি। উপহার হিসাবে প্রধানমন্ত্রীকে মানপত্র, ক্রেস্ট ও পাহাড়ে বসবাসরত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখোয়া ও খিয়াং জনগোষ্ঠীর পরিধেয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক এমপির হাতে হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাসরিন সুলতানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল হক, বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন। বক্তৃতা করেন বাঘাইছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন ও বিলাইছড়ির জামুছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) অর্থায়নে এবং রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালিত জেলার চারটি উপজেলার ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয় সবশেষ ২০১৭ সালে। কিন্তু বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও শিক্ষকরা আত্তীকরণ না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। অবশেষে চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল এই ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৯৩ জন শিক্ষককে আত্তীকরণ করেছে সরকার। রাঙামাটির দুর্গম এই চারটি উপজেলার মধ্যে রাজস্থলী উপজেলার ১৪টি বিদ্যালয়ের ৪৩ জন শিক্ষক, বাঘাইছড়ি উপজেলার ২২টি বিদ্যালয়ের ৮৭ জন শিক্ষক, জুরাছড়ি উপজেলার ২৫টি বিদ্যালয়ের ৯৬ জন শিক্ষক ও বিলাইছড়ির ২০টি বিদ্যালয়ের ৬৭ জন শিক্ষক এর আওতায় পড়েছেন।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি বলেছেন, সরকার পিছিয়ে পড়া পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষার মান উন্নয়নে আন্তরিক, তারই আলোকে বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। এসব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে আঞ্চলিক দলের বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে, এমনকি কার্ফ্যু জারি করতে হয়েছে। সমতলে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য আন্দোলন হয়, আর এখানে সবকিছুতে আঞ্চলিক দলের না না করে।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় বিশেষ বিবেচনায় বেসরকারি স্কুলগুলো জাতীয় করন করা হচ্ছে, ঝড়ে পড়া রোধে তিনি প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষায় পাঠদান চালু করা হয়েছে। পাঠদানে যে সব সমস্যা রয়েছে সেগুলোও পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।
দীপংকর তালুকদার এমপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি মুক্ত করার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ছেলেমেয়েদের প্রকৃত শিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে। ভালো নাগরিক উপহার দিয়ে তারা যেনো দেশকে কিছু পারে সে লক্ষে শিক্ষকদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে।