প্রকাশঃ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০২:৫৩:২৯
| আপডেটঃ ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৫:৪৩:৫৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানের লামায় দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে পাহাড়ী পল্লীর ১৭টি বসতঘর।
মঙ্গলবার দিবাগতরাতে পাড়াবাসী পাশের টংগঝিরি পাড়ায় বড়দিন উপলক্ষে প্রার্থনা করতে গেলে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি পূর্ব বেতছড়া পাড়ার ১৭টি কাঁচা বসতঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়, এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয় বলে দাবী করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
এদিকে অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রুপায়ন দেব, থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) এনামুল হক ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাস পূর্বে লামা উপজেলা ও পাশের আলীকদম উপজেলা থেকে ১৯টি ত্রিপুরা পরিবার উপজেলার সরই ইউনিয়নে বসতি শুরু করেন। পাড়ার নাম দেন পূর্ব বেতছড়া পাড়া। বড়দিন উপলক্ষে মঙ্গলবার দিনগত রাত ১টার দিকে এসব পরিবারের লোকজন পাশের টংগঝিরি পাড়ার গীর্জায় প্রার্থনা করতে যায়, এই ফাঁকে দুর্বৃত্তরা পাড়ার কাঁচাঘরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়, এতে ১৭টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আরো জানা যায়, এর আগে হুমকির সম্মুখীন হয়ে গত ১৭নভেম্বর পাড়ার বাসিন্দা গুংগা মনি ত্রিপুরা বাদী হয়ে স্টিফেন ত্রিপুরা সহ ৫জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে লামা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিল।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, পূর্ব বেতছড়া পাড়ায় বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি পলাতক বেনজির আহমেদের একটি বাগান বাড়ি ছিল, যা এসপি’র বাগান নামে পরিচিত। বেনজির আহমেদের সেই জায়গায় বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু ত্রিপুরা পরিবার গিয়ে ছোট ছোট কাঁচা জুমঘর করে বসবাস শুরু করেন। ওই জায়গার দখল কর্তৃত্ব নিয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায় নিজেদের মধ্য দ্বন্ধ দেখা দেয়।
এ বিষয়ে পাড়ার বাসিন্দা গুংগা মনি ত্রিপুরা জানান, গত একমাস আগে স্টিফেন ত্রিপুরা সহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করে দীর্ঘদিন যাবৎ অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোট অংকের অর্থ দাবী করেন, দাবীকৃত অর্থ না দিলে পাড়াবাসীকে হুমকিও দেন। এই প্রেক্ষিতে আমরা হুমকি দাতাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করি, মূলত তারাই সুযোগ বুঝে আমাদের পাড়ার ১৭টি বসতঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়ে দেয়। ঘটনার সময় পাড়ার লোকজন ঘরে না থাকায় কোন মালামাল রক্ষা পায়নি, ১৭টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখন নি:স্ব।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত স্টিফেন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
অগ্নিকান্ডে ১৭টি ঘর আগুনে পুড়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) এনামুল হক জানায়, অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে, এই বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।