প্রকাশঃ ২৪ মে, ২০২০ ১১:০২:১৪
| আপডেটঃ ০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ০৭:০২:২৯
কাল পবিত্র ঈদুল ফিতর, সারাবিশ্বে এক সংকটমহ মুহুর্ত পার করছে, করোনা ভাইরাসে আতংকে গোটা বিশ্ব আজ আতংকিত, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে হয়ত আমরা সুস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারব। বাংলাদেশে রোববার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩,৬১০জন, মারা গেছেন ৪৮০ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ৬, ৯০১জন।
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব, আর রমজান মাসের সিয়াম সাধনার পর আসে খুশির ঈদ, কবি নজরুল ইসলামের ভাষায়
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/ তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ/ তোর সোনাদানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ/ দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ/ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/ আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে/ যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ/ ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ... কাল ২৫ মে সোমববার ঈদ। সারাদেশের মত রাঙামাটিতে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মদিনাতে হিজরতের অব্যবহিত পরই সংযম আর আনন্দের প্রতীক পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উৎসব শুরু হয়। সৃষ্টি হয় সংযম আর সম্প্রীতির বৈষম্যমুক্ত এক নতুন মূল্যবোধের। প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, 'চাঁদ দেখে রোজা পালন এবং চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করবে। চান্দ্র মাস ২৯ দিনে হয়, আবার ৩০ দিনেও হয়। এবছর বাংলাদেশে ৩০ রোজা পালন করা হয়।
তবে এবার করোনা ভাইরাসের কারনে ভিন্ন আমেজে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর, থাকছে না আনন্দ উৎসব, নামায ঈদগাহ না হয়ে মসজিদে হবে সামাজিক দুরত্ব মেনে। মসজিদে আসার সময় জায়নামায নিয়ে আসতে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
করোনা ভাইরাস সংক্রামণ রোধে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, চিকিৎসক, পৌরসভা, সাংবাদিক, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। রাঙামাটিতে ইতিমধ্যে সাধারন মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স ও পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছে। এরা কখনো সচেতনতা সৃষ্টি, কখনো সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে, কখনো মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত, কখনো দ্রব্যমুলো নিয়ন্ত্রনে কখনো বা কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তায় দিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের পাশাপাশি অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আবার অনেকে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ঈদ উপহার দিচ্ছেন।
আমরা করোনা যোদ্ধাদের জানাই লাল সালাম। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এখনো করোনা নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
তবুও বলতে হয়, রাত পোহালেই কাল পবিত্র ঈদুল ফিতর, এবার অন্য ধরনের ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছে বিশ^সহ বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়, যেখানে আনন্দ নেই,, আছে শুধু হতাশা ভয় আতংক। তারপরও সিয়াম সাধনার এক মাস পর আসে এই আনন্দঘন মুহুর্ত। যেখানে ধনী গরীব কোন ভেদাভেদ থাকে না, সবাই কোলাকুলি করে, একে অপরের বাসায় সেমাই, বিরানি খেতে যায়,, কিন্তু এবছর কোনটাই হচ্ছে না, এটা কেবল নিজেদেরকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে। এই কঠিন সময়টা পার করতে পারলে হয়ত আবার আমরা আনন্দ উৎসব করতে পারব, এজন্য আমাদের সর্তক থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
করোনা ভাইরাসের পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে নেই ঈদ আনন্দ, এবার করোনার কারনে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সমূহ বিঝু উৎসব পালন করতে পারিনি, অথচ বিঝু এবং ঈদ উৎসব পাহাড়ী বাঙালীর মিলন মেলায় পরিণত হতো।
পবিত্র ঈদুল ফিতর জাতি, ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে সকলের মাঝে নিয়ে আসুক সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি। পবিত্র ঈদুল ফিতর হোক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধন।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পাহাড়ের জনপ্রিয় অনলাইন সিএইচটি টুডে ডট কম পরিবারের পক্ষ থেকে পাঠক,লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, কলা কৌসুলীসহ সকলকে জানাই ঈদ মোবারক ও ঈদের শুভেচ্ছা
“ঈদ মোবারক”।