প্রকাশঃ ১৯ মে, ২০১৮ ১২:০৮:৪৭
| আপডেটঃ ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:১৪:১১
নুরুচ্ছাফা মানিক, সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। ভাল নাম ফরিদ উজ জামান। সবাই চিনেন স্বাধীন নামে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের এই তরুণের নামের সাথে ব্যক্তিসত্ত্বার অনেক মিল। স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাননি বলে হয়তো জীবনে অনেক সুবর্ণ সুযোগ গায়ে মাখতে পারেননি। বিগত দশ বছরে আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মী আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেলেও স্বাধীনচেতা স্বাধীনদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হয়তো রাজপথের স্বাধীনরা রাজপথকে ভালবেসে এভাবে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
এক জীবনে দুই চরিত্রে স্বাধীনকে রাজপথে দেখে প্রত্যক্ষদর্শী এডভোকেট নুর উল্লাহ হিরুর আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাসটি থেকে একটু হলেও স্বাধীনদের অবস্থা সর্ম্পকে পাঠকরা আঁচ করতে পারবেন বরে বিশ্বাস রাখি। নুর উল্লাহ হিরুর স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
গত কয়েকদিন পূর্বে কোর্ট শেষ করে বাজারে গেলাম একটি ল্যাপটপ ব্যাগ কিনবো বলে। বন্ধু রফিক আমার জন্য মসজিদ মার্কেট রোডে অপেক্ষা করছে, বৃষ্টিতে ছাতা হাতে তাকে খুজতেছি। অগ্রণী ব্যাংকের সামনে পৌছা মাত্র পাশের দোকান থেকে '' এই হিরু'' বলে কেউ ডাক দিলো; তাকিয়ে দেখলাম স্বাধীন, একটি স্বর্ণেন দোকানে বসে আছে। এগিয়ে গেলাম, স্বাধীন বললো বসো, আমি তার পাশে বসলাম। জিজ্ঞেস করলাম এখানে কি করছো? স্বাধীন পুরাতন মডেলের কিছু স্বর্ণালঙ্কার দেখিয়ে বললো এগুলো বন্ধক দিতে আসছি। একটি খুবই পুরাতন মডেল যা বর্তমানে দেখা যায়না বললেই চলে, স্বাধীন বললো এটির বয়স প্রায় শতবর্ষ হবে। যা কিনা কয়েকটি জেনারেশন পার করে হাতবদল হতে হতে সর্বশেষ তার স্ত্রীর ভাগ্যে জুটেছে।
আমি কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম এগুলো বন্ধক দিচ্ছো কেন? স্বাধীন খুব সহজ ভাবেই বললো বেচেঁ থাকার তাগিদে, সংসার চালাতে হবেনা। আমি বললাম মানে কি? সে বললো একটি টমটম কিনবো । আমি বললাম কাউকে ভারায় চালাতে দিলে হয়ত ৩০০ টাকা ভাড়া পাবে তা দিয়ে কি সংসার চলবে? প্রতিত্তোরে সে বললো, কি করবো, বাঁচতে হলে কিছু একটা করতে তো হবে। ইতিমধ্যে বন্ধু রফিক আসলো, আলোচনার প্রসঙ্গ পাল্টে গেলো বিভিন্ন বিষয়ে হরেক রকম আলোচনা হলো। একপর্যায়ে স্বাধীনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম এবং ব্যাগ কিনে বাসায় ফিরলাম।
কিছুদিন পর........ ।
ভেবেছিলাম স্বাধীন অটোরিক্সা কিনে হয়তো ভাড়ায় দিবে, যা ভাড়া পাবে তা দিয়ে সংসারের সাপোর্ট হবে।
কিন্তু যা কেউ কখনো ভাবেনি তাই হলো।
স্বাধীন ছাত্র জীবন থেকে রাজপথে ছিলো আজও আছে কিন্তু ভিন্নরূপে। আজ সে অটোরিক্সার ড্রাইভার হয়ে খাগড়াছড়ির রাজপথ দাপড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
( স্বাধীনকে খাগড়াছড়িতে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই, পদ পদবীও কমবেশি সবার জানা তারপরও কিছু বলা দরকার - কৃষিবিদ স্বাধীন হাইস্কুল জীবন থেকেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত সর্বশেষ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ছিলেন বর্তমানে পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক। শুধু তাই নয় দু:সময়ের সবচেয়ে ত্যাগী ছেলেটির নাম স্বাধীন, দু:সময়ের বহু মামলা হামলার শিকার স্বাধীন, সকল সময়ে বজ্রকন্ঠে রাজপথে যে শ্লোগান ধরতো তার নাম স্বাধীন, তরুন প্রজন্মের সবচেয়ে ভাল বক্তা স্বাধীন, সবচেয়ে ভাল উপস্থাপকের নাম স্বাধীন, যে ছেলেটি যুদ্ধে সবার আগে থাকে তার নাম স্বাধীন, যে ছেলেটি ভালো আবৃত্তি করে তার নাম স্বাধীন, বর্তমানে এবং আগামীতে আওয়ামীলীগের দু:সময়ে যাকে দল পাশে পাবে তার নাম স্বাধীন।)
স্বাধীন তোমাকে সেলুট জানাই।
ধিক্কার তাদের প্রতি.........., ...................., .............।