কাল থেকে রাঙামাটির সাজেকে আবারো পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন রাঙামাটির নতুন জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ রাঙামাটিতে পৌরপ্রাঙ্গণ মাঠ উন্মুক্ত রাখার দাবিতে মানববন্ধন রাঙামাটির ভেদভেদীতে জমি দখল নিয়ে দুই প্রতিবেশীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এপেক্স ক্লাব অব বান্দরবান এর উদ্যোগে বান্দরবানে বৌদ্ধ অনাথালয়ে কম্বল বিতরণ
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির বিদায়ী জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান বলেছেন, পার্বত্য এলাকায় অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে, জেলায় কর্তৃত্ব কে করবে, কে সমন্বয় করবে, কে অথরীটির ভুমিকায় থাকবে এসব নিয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া জরুরী। পার্বত্য এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে করতে হলে প্রশাসনিক সমন্বয় নিশ্চিত করতে অন্যথায় যে যার মত চললে পার্বত্য এলাকা পিছিয়ে পড়বে। এখানে কার সীমা রেখা কতটুকু, এখানকার ও দেশের প্রচলিত সংবিধানের সাথে সমন্বয় এবং মেনে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
সোমবার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসকের বিদায় উপলক্ষে সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, কাপ্তাই লেক রাঙামাটির প্রাণ, এই লেক পর্যটন, মৎস্য উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ মানুষের জীবন জীবিকার সাথে ওত প্রোতভাবে জড়িত তাই এই লেককে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। একে দুষণ ও দখলমুক্ত রাখতে হবে।
বিদায়ী জেলা প্রশাসক আবেঘন পরিবেশে বলেন, রাঙামাটি আমার রক্তের সাথে মিশে গেছে, রাঙামাটির যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য রয়েছে তেমনি এখানকার মানুষগুলোর মধ্যে রয়েছে বৈচিত্র্য। জেলা প্রশাসক হিসাবে যেদিন দায়িত্ব নিয়েছি সেদিন এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে হিসেবে নিয়েছি। এখানকার মানুষ আন্তরিক ছিল বলে ভুমি ধব্বস, লংগদুতে অগ্নিকান্ডের ঘটনাসহ সকল ধরনের ঘটনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বর্ষাকাল শুরু হয়ে গেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাটাতে এখনি উদ্যেগ গ্রহণ করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মানিক লাল দেওয়ান,সাবেক পৌর মেয়র কাজী নজরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির সভাপতি মাওলানা শাহজাহান, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, সাধারন সম্পাদক আনোয়ার উল হক, প্রবীণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহম্মদ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান মহসিন রানা, ডা. একে দেওয়ান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেন ভুইয়া, স্কাউটের নুরুল আবছার, রাঙামাটি পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ তাছাদ্দিক কবির, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম শফি ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, মাত্র ১ বছরের অধিক সময় রাঙামাটি ছিলেন জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান। তার সময় রাঙামাটিতে পাহাড়ী বাঙালী সহিংসতা, লংগদুতে পাহাড়ীদের বাড়ী ঘরে আগুন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ১১০ জনের মৃত্যুসহ নানা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু তিনি সবাইকে সাথে নিয়ে এসব দুর্যোগ মোকাবেলা করেছেন। গত এক বছরে কর্মদক্ষতায় জেলা প্রশাসক মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন, তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আরো কিছুদিন রাঙামাটি থাকা প্রয়োজন বলে বক্তারা মত দেন।
বক্তারা আরো বলেন, চাকুরি মানে চলে যেতে হবে, কিন্তু কিছু মানুষ তার কর্মের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকে, তেমনি রাঙামাটি জেলা প্রশাসকও মানুষের মাঝে তার কর্মের জন্য বেঁচে থাকবেন।
রাঙামাটির বিদায়ী জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান ২০১৬ সনের ২২ সেপ্টেমর রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। আগামীকাল দুপুর ১২টার পর তার রাঙামাটি ত্যাগ করার কথা এবং তার নতুন কর্মস্থল ত্রান ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয়ে যোগ দিবেন।