রাঙামাটি জেলা উন্নয়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
প্রকাশঃ ২৬ মে, ২০১৯ ০৫:০৯:৩৮
| আপডেটঃ ২০ নভেম্বর, ২০২৪ ০৮:৪৭:২২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের গণমানুষের কল্যাণে ভিশন ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও উন্নয়নশীল দেশ রূপান্তরের যে স্বপ্ন দেখছেন তা বাস্তবায়নে আমাদের সকলকে আরো আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, যার যার অবস্থান থেকে সকলে সৎ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করলে এ দেশ সোনার বাংলাদেশে রূপান্তর হতে বেশী সময় লাগবেনা। তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে নিষ্ঠার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
রোববার (২৬ মে) সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাঈন উদ্দিন চৌধুরী, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী ক্য হ্লা খই, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ নীহার রঞ্জন নন্দী, রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল, প্রেসক্লাব সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল’সহ পরিষদের হস্তান্তরিত বিভাগের প্রতিষ্ঠান প্রধান ও জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, সরকার আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন জনকল্যাণের স্বার্থে কাজ করার জন্যে। কল্যাণকর মনোভাব ও নীতি সঠিক রেখে আমাদের সেভাবে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, জেলার সমস্যাগুলো তুলে ধরে তা সমাধানের লক্ষ্যেই এই সভা প্রতি মাসে করা হয়। তাই প্রতিটি সভায় উপস্থিত থেকে সমস্যা, সম্ভবনা ও সমাধানের বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সভায় রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাঈন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো আইন শৃংখলা স্বাভাবিক রাখা। তাই আইন-শৃংখলা যাতে ঠিক থাকে সে বিষয়ে পুলিশ বিভাগ তৎপর রয়েছে। জেলায় কোন রকমের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি, মাদক কেনা বেঁচা, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিলক্ষিত হলে আইন শৃংখলাবাহিনীকে অবগত করার অনুরোধ জানান তিনি।
সভায় চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, অপার সম্ভবনাময় এ জেলায় অবস্থিত যে হ্রদটি রয়েছে এটিকে বহুমুখীভাবে ব্যবহার করে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও উন্নয়নমূলক চিন্তা আমাদের করতে হবে। তবেই এ জেলা এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, এ জেলার প্রাইভেট সেক্টরের পাশাপাশি ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চেম্বার অব কমার্স কাজ করে যাচ্ছে।
রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে এখন বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে টার্গেট করে জঙ্গী হামলা হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। সকল প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামরা বসানো ও অপরিচিত লোক দেখলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, বিভিন্ন সেক্টরে পার্বত্য এলাকা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই পিছিয়ে থাকার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যা অনেকেই সাহস করে বলতে পারেনা। এই ভয়ভীতিগুলো দূর করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়’সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের প্রধান বাঁধাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার, আগামী জুন মাসের মধ্যে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে তা পরিশোধ করার অনুরোধ জানান।
এলজিইডি’র কর্মকর্তা ফারুক আহমদ জানান, গত দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত আসামবস্তী-কাপ্তাই সড়ক মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয় হতে প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে এবং কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ছোট খাটো যেসমস্ত রাস্তা ভাঙ্গা রয়েছে সেগুলো মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে।
মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের সহকারী মার্কেটিং অফিসার বৃন্দাবন হাওলাদার জানান, গত ১মে থেকে আগামী ৩১জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে মৎস্য আহরণ, বিপনন বন্ধ থাকবে। কেউ যদি আহরণ বা বিপনন করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লেকে মৎস্য শিকার বা বিপনন করতে দেখা গেলে তা অবহিত করার অনুরোধ জানান তিনি।
সভায় উত্তর, দক্ষিণ এবং ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আগামী বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে বৃক্ষ মেলা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গাছের চারা বিতরণ করা হবে।
সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।