শুক্রবার | ১০ জানুয়ারী, ২০২৫

মহালছড়ি ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা; জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

প্রকাশঃ ০৯ জানুয়ারী, ২০২৫ ০৩:৩৩:১১ | আপডেটঃ ১০ জানুয়ারী, ২০২৫ ১২:১১:৩৩

সিএইচটি টুডে ডট কম, মহালছড়ি (খাগড়াছড়ি)। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলার অন্যতম শিক্ষাকেন্দ্র মহালছড়ি ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, যেটি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। কক্ষ সংকটের কারনে পাঠদান করতে হয় জরাজীর্ণ ভবনে। ১৯৮৫ সালে বাঁশের বেড়া আর টিনের চাউনি দিয়ে নির্মাণ করে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা প্রতিষ্ঠানটি এখন জরাজীর্ণ ভবনে পরিনত হয়েছে, যার ফলে শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। ২০০৪ সালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে একটি ভবন পেলেও পাঠদানের জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে শ্রেণি কক্ষ নেই, যার ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।


ইবতেদায়ী শাখা দিয়ে চালু করা প্রতিষ্ঠানটিতে ২০০৪ সালে চালু করা হয় দাখিল শাখা। শ্রেণি কক্ষ সংকটের মধ্যেও বর্তমানে ১ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেডিসি ও দাখিল  পরীক্ষায়ও অংশ নিচ্ছে এ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসাটির প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান চলছে বারান্দায়। নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে অফিস কক্ষসহ ১০টি কক্ষের প্রয়োজন। কিন্তু জরাজীর্ণ ঘরটিতে আছে ৭টি কক্ষ। যার কারণে ২টি শ্রেণি কার্যক্রম মাদ্রাসার বারান্দায় পরিচালনা করতে হচ্ছে।


মাদ্রাসাটির সুপার মাওলানা মো: আজিজুর রহমান জানান, মাদ্রাসাটিতে বর্তমানে ১ম থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম চলছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেডিসি ও দাখিল  পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে এ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।


বর্তমানে এ মাদ্রাসায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ১২ জন শিক্ষক। নাম মাত্র মাসিক সম্মানী নিয়ে শিক্ষকরা চাকুরি করতেছেন। এত অল্প বেতন তাও আবার ৭/৮ মাস সর্বদা বেতন বকেয়া পড়ে থাকে । এর ফলে শিক্ষকরাও রয়েছেন আর্থিক অনটনে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে মেলেনি প্রয়োজনীয় সরকারি অনুদান। ছাত্র-ছাত্রীদের দেয়া মাসিক ফি থেকেই শিক্ষকদের বেতন চলে। কিন্তু এলাকাটি দরিদ্রপ্রবণ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি নিয়মিত পাওয়া যায় না।


এছাড়াও মাদ্রাসায় নেই কোন গ্রন্থাগার, কম্পিউটার ল্যাব, ওয়াশ ব্লক, নেই স্বচ্ছ পানির ব্যবস্থা। এমনকি ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষকগণকে প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য নিজ গৃহে যেতে হয়। কোন  প্রকার নাগরিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা না থাকায় মাদ্রাসা পরিচালনায় সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় মাদ্রাসাটির নিরাপত্তাও বিঘ্নিত  হচ্ছে, প্রতিনিয়ত   শ্রেণিকক্ষের বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে।


শ্রেণিকক্ষ সংকট ও প্রতিষ্ঠানটির বেহাল অবস্থার কারণে অভিভাবকরা এখন আর তাদের সন্তানদের এখানে ভর্তি করাতে চান না বলে জানান মহালছড়ি  ইসলামিয়া দাখিল  মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ হাসান । তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসার দুটি দু’চালা টিনের ঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম বেকায়দায় আছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান ও অফিসের কার্যক্রম। বর্ষাকালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি। নতুন একটি ভবন নির্মাণের জন্য বহুবার  সংশ্লিষ্ট  দফতরে আবেদন করেছি। কিন্তু ভবন নির্মাণে আজও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একটি পাকা ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

খাগড়াছড়ি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions