রাঙামাটির লোকনাথ ব্রহ্মচারী যোগাশ্রম’র কমিটি গঠন নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ নিজ জেলাতে সংবর্ধনার দিনেও ঋতুপর্ণার হতাশা- কেউ কথা রাখেনি সাফ বিজয়ী পাহাড়ী কন্যাদের সংবর্ধনা দিলো জেলা প্রশাসন বান্দরবানে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী,নতুন আক্রান্ত আরো ২জন নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতার মাধ্যমে বান্দরবানে শুরু হলো ক্রীড়া মেলা
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। সমাপ্ত হলো বান্দরবান পার্বত্য জেলার বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গ্রাউসের “আস্থা প্রকল্পের” আয়োজনে এবং জাতীয় এনজিও রুপান্তর ও সুইজারল্যান্ড সরকারের সার্বিক সহযোগীতায় বান্দরবানস্থ রয়েল হোটেলের কনফারেন্স রুমে গত ২৫ আগষ্ট থেকে শুরু হওয়া “সংবেদনশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে যুব নেতৃত্ব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বিষয়ক দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ”।
সোমবার ৭ম ব্যাচের সমাপনি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই কার্যক্রম সমাপ্ত হয়। গ্রাউসের আস্থা প্রকল্পের জেলা সমন্বয়ক থোয়াইঅং মার্মা জানান, এই পর্যন্ত বান্দরবানে ৭টি ব্যাচের (প্রতি ব্যাচ ৩দিন) ট্রেনিং সম্পন্ন করা হয় এং ৭ উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়ন থেকে মোট ১৯০ জন ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য/সদস্যা এই ট্রেনিং এ অংশগ্রহন করেছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ৭ম ব্যাচের সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল বাসার পাটওয়ারী এবং সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রাউসের চেয়ারপার্সন মংথুই চিং মার্মা। আস্থা প্রকল্পের মনিটরিং এন্ড রিপোটিং অফিসার জেমস বম এর সঞ্চালনায় শুরু হওয়া উক্ত সভায় প্রথমে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন “আস্থা” প্রকল্পের জেলা প্রকল্প সমন্বয়ক থোয়াইঅং মার্মা। পরে উন্মোক্ত আলোচনায় অংশগ্রহকারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন আলীকদম উপজেলা ইয়ুথ গ্রুপের আহবায়ক সুজন চৌধুরী, সদস্য সঙ্গীতা রুদ্র, সুহৃদয় তঞ্চঙ্গ্যা, তোহিদুল ইসলাম এবং লামা উপজেলা ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যা জুলেখা বেগম। তারা সবাই তাদের মতামত ব্যক্ত করেন এবং যুবদের জন্য এই ধরণের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ আয়োজন করে সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ায় গ্রাউস ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন “যুব নেতৃত্ব এবং সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহার বিষয় ২টি বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুবদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেকে আরো প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করে পারদর্শী হতে হবে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ইতিবাচক ব্যবহার এবং এর বিপরীতে কি আইন আছে তা জানতে হবে। বর্তমানে বেকারত্ব দূরীকরণে তথ্যপ্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করছে। তাই দেশ ও সমাজ গঠনে যুবদের ভুমিকা রাখা খুবই প্রয়োজন”। এছাড়া তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে যুবদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ করেন এবং আগ্রহী ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যদের এই প্রশিক্ষণগুলোতে অংশগ্রহন করার আহবান জানান এবং এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গ্রাউস, রুপান্তর ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং গ্রাউসের চেয়ারপার্সন মংথুই চিং মার্মা বক্তব্যে বলেন “কর্ম এলাকায় তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, সন্ত্রাসমুক্ত একটি সহনশীল ও অহিংস সমাজ গঠনে যুবদের সম্পৃক্ত করা, যুব নেতৃত্বের বিকাশে বয়স্ক ও যুবদের মেলবন্ধন তৈরির মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক সমাজ গঠন করা, দক্ষ যুবসমাজ গঠনের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যুবদের অধিকার নিশ্চিত করা এবং সমাজ ও দেশের উন্নয়নে যুবদের সম্পৃক্ত করণে উদ্যোগ সৃষ্টিতে উক্ত “আস্থা” প্রকল্পটি অত্র এলাকায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান দেশের চলামান পরিষ্টিতিতে এ প্রকল্পের গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে। তাই দেশ পুণ গঠনে এখন যুব সমাজকে এগিয়ে আসা অত্যান্ত জরুরী। তিনি আরো বলেন, “যুবদেরকে সঠিক পথ দেখালে তারা ঠিকই সঠিক পথে হাঁটে। বর্তমানে দেখা যায় কিছু কিছু যুব সমাজ তথ্য প্রযুক্তিকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে স্বাবলম্বি হচ্ছে। আবার যুব সমাজের বড় একটা অংশ তথ্য প্রযুক্তিকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে না পারার কারনে অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও গুজব ছড়িয়ে দেশে বিশ্রিঙ্খলা সৃষ্টি করতেছে এবং দেশের মারাত্বক ক্ষতি করছে। তাই আমরা এই ট্রেনিং এ যুব নেতৃত্বের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বিষয়ে যুবদের দক্ষ করে তোলতে এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। আশা করি এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইয়ুথ গ্রুপের যুবরা জীবনের নানা পরিস্থিতি মোকাবেলা, জীবন মান উন্নত করা, মানসিক শক্তি দৃঢ় করা, সমস্যার যথাযথ সমাধান খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাবে এবং সংবেদনশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবে”। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে অতিথিরা অংশগ্রহকারী সবাইকে প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ করেন।
বান্দরবানে রয়েল হোটেলে ও মাষ্টার গেষ্ট হাউসের কনফারেন্স রুমে ইতিমধ্যে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে শেষ হওয়া ৭টি ব্যাচে প্রশিক্ষণ সহায়ক হিসেবে ছিলেন প্রকল্পের জেলা সমন্বয়ক থোয়াইঅং মার্মা, ফিল্ড অফিসার দীপু তঞ্চঙ্গ্যা ও আন্তরা তঞ্চঙ্গ্যা, ফিল্ড এসোসিয়েট মংতিং সাই মার্মা ও নাহার বেগম চৌধুরী।