খাগড়াছড়িতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সাংবাদিকসহ আহত ১৫

সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদৈর সাথে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা শহরের মূল পয়েন্ট শাপলা চত্ত্বর অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারীরা।

অন্যদিকে, সকাল থেকে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে জড়ো হয় আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারী কিছু ছাত্র উত্তেজিত হয়ে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে শ্লোগান দিতে দিতে ইট ছুড়ে মারলে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আন্দোলনকারীরা কলাবাগান এলাকায় গিয়ে আবারও জড়ো হলে দুইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে ইটপাটকেল ছুঁড়ে বাড়ির দরজা-জানালা ভাংচুর করে।

এসময় সংবাদ সংগ্রহ করতে স্থানীয় সাংবাদিকরা উন্নয়নবোর্ড সড়কস্থ সেলিম ট্রেড সেন্টারে সামনে অবস্থান নিলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে সাংবাদিকদের ওপর ইট ছুঁড়ে মেরে হামলা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। এতে বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি এইচ এম প্রফুল্ল ও ভোরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি শংকর চৌধুরী আহত হয়। এছাড়া দুইপক্ষের আরো অন্তত ১৩জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতাল নারিকেল বাগানস্থ হেলথকেয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।  

পরে, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক মংসুইপ্রু চৌধুরী ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল আলম'র নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্সগ- সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে শহরের মূল পয়েন্ট শাপলা চত্ত্বর হয়ে কোর্টরোড এলাকায় অবস্থান করছে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

বেসরকারি 'হেলথ কেয়ার হাসপাতাল'র ব্যবস্থাপক আব্দুল মান্নান জানান, সহিংসতায় আহত দুইজন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ জানান, সকাল থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিনের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক ফোর্স শহরের উত্তেজনাকর এলাকাগুলোতে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিকেলে পুলিশ সুপার মুক্তা ধর নিজেই পুরো শহর পরিদর্শন করেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান জানান, বিকেল তিনটা নাগাদ পরিস্থিতি বিবেচনায় শহরে বিজিবি নামানো হয়েছে।  

এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত শহরে সকলপ্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থীতি বিরাজ করছে। নিরাপদ দূরত্বে থেকে নিরব দর্শকের ভুমিকায় ছিলেন পুলিশ।