প্রকাশঃ ২৯ মে, ২০২৩ ০৪:১৬:১৫
| আপডেটঃ ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:২৬:১৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)সহ বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সংঘাতের কারনে কার্যত অশান্ত বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ফের শান্তি ফেরাতে জেলার ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সামাজিক নেতাদের নিয়ে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিলো পার্বত্য এলাকার আঞ্চলিক সশস্ত্র দল কেএনএফ এর সশস্ত্র তৎপরতায় বম সম্প্রদায়সহ জেলার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক,শিক্ষা ও সামাজিক জীবনের ব্যাপক ক্ষতির বিষয় নিয়ে।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে সোমবার (২৯ মে) দুপুরে বান্দরবান শহরের অরুণ সারকী টাউন হলে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা’র সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত থেকে মতামত ব্যক্ত করেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো.আব্দুর রহিম চৌধুরী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সত্যহা পানজি ত্রিপুরা, কাঞ্চনজয় তংচঙ্গ্যা, লেখক ও গবেষক ক্যশৈপ্রু খোকা, ম্রো নেতা রাংলাই ম্রো, লেলুং খুমি,প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু, বুদ্ধজ্যোতি চাকমা , জারলম বম’সহ প্রমুখ।
এসময় বম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি লাল থাক নাথ বম বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির বম সম্প্রদায়ের বিপথগামী যুবকদের শান্তির পথে ফেরাতে আমরা কাজ করছি, এই বিষয়ে সবার সহযোগীতা প্রয়োজন।
ত্রিপুরা কল্যান সংসদের সভাপতি খুশি রায় ত্রিপুরা বলেন, কেএনএফ এর কার্যক্রমের কারনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বম সম্প্রদায়ের সাধারণ জনগণ, তাই এই বিষয়ে তাদের আগে এগিয়ে আসতে হবে। এই কেএনএফ এর কারণে আজ অনেক বম সম্প্রদায় ঘরছাড়া।
বম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রেভারেম কেরেমা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির শিকার হয়ে যারা ভিকটিম তাদের সহায়তা করতে সবার এগিয়ে আসা উচিত।
মারমা এসোসিয়েশনের সভাপতি মং চিং নু মার্মা বলেন, এখন জুম চাষের সময়, শত শত পরিবার এলাকা ছাড়া, পরিস্থিতির উত্তোরণ না হলে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবেনা, তাই এই বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত।
সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, কেএনএফসহ অন্য সন্ত্রাসী গ্রুপ কিভাবে শান্তির পথে ফিরে আসবে সেই বিষয়ে আমরা বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির জন প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মতামত জানতে পেরেছি। তিনি আরো বলেন, জাতিগত অবিশ্বাস রয়েছে, তা দূর করে কিভাবে সম্প্রিতীর মাধ্যমে শান্তিপূর্ন বসবাস করা যায়, কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, কিভাবে সুপারিশ করলে শান্তি ফিরবে, সেই বিষয়ে আলোচনা করতে হবে সবাইকে। এসময় তিনি আরো বলেন,এক সময়ের সম্প্রীতির জেলা আজ অশান্তির জেলা নামে পরিচিত হয়ে ওঠেছে আর আবার সেই সম্প্রীতিকে পূর্ণজাগরণ করতে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির পাশাপাশি বাঙ্গালী নেতাদের সবাইকে একত্রে সংলাপ করে শান্তির বার্তা নিয়ে আসতে হবে।
এসময় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা কেএনএফ এর সকল সদস্যদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানান।