রাঙামাটি জেলা পরিষদ পুর্নগঠনের দাবিতে রাঙামাটি মানববন্ধন বান্দরবানের সেনা অভিযানে ৩ কেএনএ সদস্য নিহত অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার বান্দরবানে ভিক্ষুকদের মাঝে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ রাঙামাটির লোকনাথ ব্রহ্মচারী যোগাশ্রম’র কমিটি গঠন নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ নিজ জেলাতে সংবর্ধনার দিনেও ঋতুপর্ণার হতাশা- কেউ কথা রাখেনি
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। পার্বত্য চট্টগ্রামে গঙ্গাদেবীকে ফুল উৎসর্গ করে আজ থেকে শুরু হয়েছে চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম সামাজিক উৎসব বিজু। শুক্রবার ভোর থেকে খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গী নদীর খবংপুড়িয়া, চেঙ্গী ব্রীজ এলাকা ও বটতলী এলাকাসহ জেলার দীঘিনালার মাইনী নদীতে ফুল বিজুর আনুষ্ঠানিকতা ছিল।
রঙ বেরঙের ফুল কলা পাতার উপর রেখে নদীর পাড়ে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে প্রার্থ্না করেন নানা বয়সী হাজার হাজার চাকমা নর-নারী ও শিশুরা।
চাকমা সম্প্রদায়ের বিশ্বাস চৈত্র সংক্রান্তির আগে গঙ্গাদেবীর কাছে পুরানো বছরের যত দুঃখ, গ্লানি, কষ্ট ও অপ্রাপ্তি আছে তা মুছে ফেলতে সমবেত ভাবে প্রার্থ্না করলে নতুন বছরে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধ এসে ধরা দিবে। এমন বিশ্বাস থেকে যুগের পর যুগ ধরে এমন রীতি চলে আসছে।
চাকমাদের ধর্মীয় এ রীতি উৎসবের আমেজে অনেক আরও অনেক ব্যাপক হয়েছে। চাকমা সম্প্রদায়ের সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি হলেও এখন বিজু যেন সার্বজনীন। ফুল বিজু উৎসব উপভোগে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্য্টকরা এসেছেন।
ঢাকা থেকে আসা শান্তা বড়ুয়া বলেন, প্রথম বার এত বড় বর্ণিল উৎসব দেখে তিনি খুব উৎফুল্লিত। এতদিন অনলাইনে কিংবা টিভিতে দেখলেও সামনাসামনি দেখতে পেরে খুশি তিনি।
চট্টগ্রাম থেকে আসা রাফাত নামে আরেকজন বলেন, ঈদের ছুটিতে শুধুমাত্র বৈসাবি উৎসব উপভোগে খাগড়াছড়ি এসেছেন। ফুল বিজুর উৎসব দেখে আসা পুরোপুরি সার্থ্ক দাবি করেন তিনি।
ফুল বিজু সম্পর্কে ইলারা দেওয়ান বলেন, বিজু চাকমাদের একটি সামাজিক উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে অনেক প্রস্তুতি থাকে কয়েক মাস ধরে। দীর্ঘ্ অপেক্ষা শেষ হয় ফুল বিজুর দিন ভোরে। রঙ বেরঙের ফুল সংগ্রহ করে ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরে নারী পুরুষ ও শিশুরা বাড়ির পাশে যেখানে পানি থাকে সেখানে গঙ্গাদেবীকে ফুল দিয়ে প্রার্থ্না করেন। সামাজিক উৎসব হলেও শুরুটা ধর্মীয় ভাবে করার চেষ্টা থাকে। প্রচলিত বিশ্বাস থেকে এমন উৎসব চলে আসছে।
কিল্টন চাকমা নামে আরেকজন বলেন, সময়ের বিবর্তনে বিজু উৎসব তথা ফুল বিজু নিয়ে কিছুটা মিশ্রতা দেখা যাচ্ছে। অনেকে বলেন ফুল বিজুর দিনে ফুল ভাসানো হয় কিন্তু মূলত ফুল ভাসানোর কোন রীতি ছিল না কখনও। ফুল উৎসর্গ করে গঙ্গাদেবীর পূজা করা হয়। কারো উৎসব বা রীতি নীতি নিয়ে না জেনে মন্তব্য সমীচিন নয় বলেও জানান তিনি।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ঈদুল ফিতর, বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষ্ কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় খাগড়াছড়ি এখন উৎসবের জনপদ। সব সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে যার যার উৎসব উদযাপন করতে পারেন সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি রয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর।