প্রকাশঃ ২৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০৫:৩১:০০
| আপডেটঃ ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:১৬:৪০
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বর্ণাঢ্য আয়োজনে নবান্ন উৎসব উদযাপন করলো বান্দরবানের ত্রিপুরা সম্প্রদায়। শুক্রবার ( ২৪ নভেম্বর) সকালে বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এর আয়োজনে সদরের হাতিভাঙ্গা পাড়া কমিউনিটি সেন্টারে পাবর্ত্য জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ত্রিপুরা সম্প্রদায় আনন্দ আয়োজনে এই নবান্ন উৎসব (মাইক্তা পান্দা) উদযাপন করে।
পাহাড় থেকে জুমের নতুন ফসল উত্তোলন ও সৃষ্টিকর্তার কাছে উৎসর্গ করা ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সকলের মঙ্গল কামনায় ত্রিপুরা সম্প্রদায় প্রতিবছর এই নবান্ন উৎসব উদযাপন করে থাকে।
এদিকে ত্রিপুরা সম্প্রদাদের নবান্ন উৎসব উপলক্ষ্যে সকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনে হাতিভাঙ্গা পাড়ায় মঙ্গল শোভাযাত্রা সহকারে সকলে হাতিভাঙ্গা পাড়া কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে জড়ো হয়। এসময় বর্ণিল পোষাক পরিধান করে আর ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায় নেচে গেয়ে অতিথিদের বরণ করে ত্রিপুরা নর-নারীরা।
পরে জুমের নতুন ফসল উত্তোলন শেষে সকলের সামনে প্রর্দশন ও সৃষ্টিকর্তার কাছে উৎসর্গ এবং নতুন ধানের পিঠাসহ নানা রকমের ফসল প্রদর্শনীর পাশাপাশি পিঠামেলা,আলোচনা সভা ও লোকসাংস্কিৃত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন । এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো.ফজলুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এর পরিচালক মং নু চিং,পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সিইয়ং ম্রো, প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু,কথোয়াইন এর নির্বাহী পরিচালক গাব্রিয়েল ত্রিপুরা,হাতিভাঙ্গা পাড়ার কারবারি বাদুহা ত্রিপুরাসহ হাতিভাঙ্গা পাড়ার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বাসিন্দা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় স্বাগত বক্তব্য দিতে গিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এর পরিচালক মং নু চিং বলেন, পার্বত্য জেলার কৃষ্টি,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট কাজ করে যাচ্ছে। এসময় তিনি আরো বলেন, পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্কৃতি এখন বিলুপ্তির পথে আর আমরা সেই সংস্কৃতিকে রক্ষা ও লালন করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছি।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুপ অপরুপ, আর এই জেলার ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রীতিনীতি ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য সৃমদ্ধ। জেলা প্রশাসক বলেন, সরকারের আন্তরিকতার কারণে পার্বত্য জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট তৈরি করা হয়েছে আর এই সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত: পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাসিন্দারা প্রতিবছর পাহাড়ের জুমের প্রথম ফসল উত্তোলন করে বর্ণাঢ্য আয়োজনে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করে থাকে আর এই নবান্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে আগামী দিনে জুমের ফলন আরো বৃদ্ধির প্রত্যাশা করে।