রাঙামাটির বরকলে বিএনপি উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধন রাঙামাটিতে লোকনাথ ব্রহ্মচারী যোগাশ্রম’র পরিচালনা পরিষদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নতুনভাবে সাজানো হবে বান্দরবান জেলা পরিষদ : অধ্যাপক থানজামা লুসাই সাফ বিজয়ী কন্যাদের রাঙামাটিতে সংবর্ধনা দেয়া হবে শনিবার আদালতের এজলাসে ২ আইনজীবীর বাকবিতন্ডা, আইনজীবীর চেম্বারে হামলার অভিযোগ
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। কালের আবর্তে বৈশাখের শুভ সূচনাকে স্বাগত জানানোর মাধ্যমে বিগত ২৪ বছরের ন্যয় এ বছরও রাঙামাটির মাঝেরবস্তী বাংলা নববর্ষ উদযাপন পরিষদের ২৫ বছর পূর্তী (রজত জয়ন্তী) উদযাপনের লক্ষ্যে বর্ণাঢ্য এবং জমকালো আয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে চলছে মাঠ সংস্কার ও মঞ্চ নির্মানের কাজ।
বুধবার (১১এপ্রিল) সকালে শহরের শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠান স্থলের মঞ্চ তৈরির কাজ পরিদর্শনে যান নববর্ষ উদযাপন পরিষদের উপদেষ্ঠা ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, অমিত চাকমা রাজু, বরুন বিকাশ দেওয়ান’সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। এ সময় মাঝেরবস্তী বাংলা নববর্ষ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক নিরুপম ত্রিপুরা, অর্থ সম্পাদক সুমন বিকাশ ত্রিপুরা, সদস্য সচিব অপু শ্রীং লেপচা’সহ কমিটির অন্যান্য সদসরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে নববর্ষ উদযাপন পরিষদের উপদেষ্ঠা স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা জানান, গত ২৪ বছর আগে যে চেতনা নিয়ে আমরা এ অনুষ্ঠান শুরু করেছিলাম সেটা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামনে রেখে একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণ করা। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে যেহেতু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস সেহেতু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাংলাদেশের অপরাপর সংষ্কৃতির একটা সম্মিলন ঘটিয়ে সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাজ নিশ্চিত করাটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। তিনি আরো বলেন, এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকল জাতি গোষ্ঠীর সম্মিলন ঘটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে অটুট থাকে এবং এটার পাশপাশি সারা বাংলাদেশের সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটিয়ে আমরা যাতে একটি আলোকিত বাংলাদেশ বিনির্মান করতে পারি এটাই এ সংগঠনটি কামনা করে। আমরা মনে করি আমাদের উদ্দ্যেশ্য অনেকাটা সফল হয়েছে।
নববর্ষ উদযাপন পরিষদের উপদেষ্ঠা অমিত চাকমা রাজু বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে বিজু ও নববর্ষ উপলক্ষে এ সংগঠনটি বিগত ২৪ বছর ধরে এ অনুষ্ঠানটি করে আসছে। এটাকে অনুস্মরন করে পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন ধরনের আচার অনুষ্ঠান করছে। সেজন্য আমি মনে করি আমরা সফল হয়েছি।
নববর্ষ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক নিরুপম ত্রিপুরা বলেন, এবারের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ব্যান্ড দলকে জয়প্রিয় করার ক্ষেত্রে যে ব্যান্ড দলগুলোর অবদান রয়েছে তাদের মধ্যে সোলস এর অন্যতম। এ অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য আমরা এবারে সোলসকেই আনছি। আশা রাখছি এ ব্যান্ড দলটি আগত দর্শকদের মনের প্রত্যাশা অনুযায়ী সঙ্গীত পরিবেশন করবে।
নববর্ষ উদযাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুমন বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, বিগত ২৪ বছর ধরে এ অনুষ্ঠানটি সফলতার সাথে করে করে আসছি। এটি এখন আমাদের ঐতিহ্যে পরিনত হয়েছে। এটি সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রানের মিলন মেলাতে রূপ নেয়। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব অপু শ্রীং লেপচা বলেন, ইতোমধ্যে মাঠ সংস্কার ও মঞ্চ নির্মানের কাজ সুষ্ঠভাবে চলছে। তিনি বলেন, রাঙামাটি বাসি আমাদের এই অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে অনেক কিছুই প্রত্যাশা রাখে। কারণ রাঙামাটিতে নববর্ষে ব্যান্ড দলের আগমন এই সংগঠনটিই শুরু করেছিল। আমরাও তাদের প্রত্যাশা পূরনের চেষ্ঠা করছি। অনুষ্ঠানটি সফল করতে তিনি জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক’সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ, বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে সংগঠনটি ২রা বৈশাখ সকালে রাঙামাটি পৌরসভা চত্বর থেকে শুরু হয়ে মাঝেরবস্তী শাহ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র্যালি ও যেমন খুশী তেমন সাজো, পান্তা ভাত বিতরণ, বিকেলে আলোচনা সভা ও সন্ধ্যায় সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে পাহাড়ী শিল্পীদের ঐতিবাহী নৃত্য এবং শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল সোলস্।