শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

ইউপিডিএফ’র বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশ

প্রকাশঃ ০৫ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৬:৩০:২৬ | আপডেটঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪ ০৯:০৬:৩০

সিএইচটি টুডে ডট  ডেস্ক। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর মানবাধিকার পরিবীক্ষণ সেলের বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট ২০২২ প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত বছর পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ কর্তৃক ইউপিডিএফ সদস্যসহ ১৮ জন বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন, ১০৯ জনকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার ও ৬০ জনকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। এছাড়া অপহরণের শিকার হয়েছেন ৪৮ জন, ধর্ষণসহ যৌন নিযাতনের শিকার হয়েছেন ১৬ জন নারী-শিশু এবং বান্দরবানে  অপারেশনের কারণে বম জনগোষ্ঠির ২৯৫ জন বিদেশে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বেপরোয়া ভূমি বেদখল, ধর্মীয় পরিহানি, গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর হস্তক্ষেপসহ অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত তথ্যও রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।

গতকাল ৪ জানুয়ারি ২০২৩ প্রকাশিত উক্ত রিপোর্টে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতির বর্তমান বিশেষত্ব হচ্ছে নিপীড়িত- নির্যাতিত অধিকারহারা জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে শাসকগোষ্ঠি কর্তৃক নব্যমুখোশ বাহিনী, মগপার্টি, সংস্কারবাদী, কুকি-চিন পার্টিসহ বিভিন্ন ঠ্যাঙারে বাহিনীর ব্যবহার। এদের মাধ্যমে আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও তাদের সমর্থকদের খুন, গুম, অপহরণ করে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। এই বাহিনীগুলো ছাড়াও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সন্তু গ্রুপও প্রায় সময় সাধারণ জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে থাকে।

রিপোর্টে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, ২০২২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বিচার বহির্ভূত হত্যা, গ্রেফতার, শারীরিক নির্যাতন, হয়রানি, ধর্মীয় পরিহানি, নারী নির্যাতন ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, ভূমি বেদখল ইত্যাদি। প্রধানত ইউপিডিএফকে লক্ষ্যবস্তু করে  এসব নিবর্তনমূলক কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। গত বছর নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন একজন ইউপিডিএফ সংগঠক ও একজন সাধারণ নাগরিক, গ্রেফতার করা হয়েছে ইউপিডিএফ সদস্যসহ অন্তত ১০৯ জনকে, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৩ জন, বেআইনি তল্লাশি চালানো হয়েছে ৪৬ গ্রামবাসীর বাড়িতে, হেনস্থা-হয়রানির শিকার হয়েছেন নারীসহ ৯ জন। বান্দরবানে কথিত বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গী দমনের নামে  পরিচালিত কম্বিং অপারেশনের সময় নির্যাতনের ভয়ে ২৯৫ জন বম জাতিগোষ্ঠির লোকজন ভারতের মিজোরামে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

এছাড়া ধর্মীয় পরিহানি, পাহাড়ি গ্রামবাসীদের বাড়ি ভাংচুরসহ সাজেক, পানছড়ি ও দীঘিনালায় স্থানীয় পাহাড়িদের ঘরবাড়ি নির্মাণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারে বাধা প্রদান, ৮টি স্থানে ক্যাম্প স্থাপন অথবা সম্প্রসারণের চেষ্টা, গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ, ব্রাশফায়ার করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মতো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

রিপোর্টে জেএসএস সন্তু গ্রুপ ও রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী কর্তৃক সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, জেএসএস সন্তু গ্রুপ কর্তৃক ইউপিডিএফর ৩ সদস্যকে হত্যা, ইউপিডিএফ সদস্যসহ ৪ জনকে অপহরণ, নারীসহ ৩ জনকে শারীরিক নির্যাতন ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রীকে হুমকি প্রদানের ঘটনা ঘটেছে।

রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ বাহিনী, সংস্কারবাদী, মগপার্টি, কুকি-চিন পার্টি ও অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত কর্তৃক ইউপিডিএফ কর্মীসহ কমপক্ষে ১৩ জনকে হত্যা ও ৪৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে এবং ৪ জন মারধরের শিকার হয়েছেন।


খাগড়াছড়ি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions