বৃহস্পতিবার | ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

খাগড়াছড়িতে হোটেল বয়ের সম্পদের পাহাড়, মা থাকেন কুঁড়ে ঘরে !

প্রকাশঃ ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ১১:৩৫:৩৩ | আপডেটঃ ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:০৭:৪১
ষ্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি। পঞ্চম শ্রেণীও পাঠ চুকাননি। সেই ছোটকাল থেকেই হোটেল বয়। পেটে ভাতে জেলা শহরের ‘হোটেল লবিয়ত’-এ বয়ের চাকরি করেছেন এক যুগেরও বেশি। অষ্টম শ্রেণী পাশের ভূয়া সনদে নৈশপ্রহরী চাকরি নিয়েছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে। অনৈতিক কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে একবছর আগে সে চাকরিও হারান তিনি। জেলা পরিষদের মাস্টারোল নৈশপ্রহরী ছিলেন। নাম তার ‘মনা’। অফিসিয়াল নাম আবু বক্কর। সেই মনা জেলা শহরের আরামবাগে গড়ে তুলছেন, পাঁচতলবিশিষ্ট আলিশান ভবন। সেই বাড়ি নির্মাণের খবর চাউর হতে না হতেই শহরের নানা শ্রেণী পেশার মানুষের মুখে মুখে প্রশ্ন, মনা’র এতো টাকার উৎস কোথায়?

শুধু তাই নয়, হঠাৎ রহস্যময় ভাবে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া সেই মনা’র বিধবা মা বসবাস করেন, শহরের মুসলিম পাড়ায়। চার শতক ভূমির উপর টিনের চালার ভাঙাচোড়া সেই কুঁড়ের ঘরের অবস্থাও বড়ই নাজুক। ছিল না কোন চাকুরী, ছিল না দৃশ্যমান কোন ব্যবসা। খাগড়াছড়ি শহরে পর পর চারটি হোটেলে বয়ের কাজ করে সর্বশেষ জেলা পরিষদে মাস্টার রোলে চাকরি নেন, মনা। তিন বছরের মাথায় হারান সেই চাকরিও।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাটিরাঙ্গা উপজেলার গাজী নগরে রয়েছে তার মালিকানাধীন  এ ৭৭ ব্রীক ফিল্ড, জেলা শহরের সবুজ বাগ এলাকায় রয়েছে পাঁচ একর ভূমি, শহরের টিটিসি সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ১০ শতক ভূমি এবং জিরোমাইল এলাকাও অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহারের পাশে রয়েছে ১১ শতক ভূমি।

খাগড়াছড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে জেলা পরিষদের মালিকনাধীন ভবনে রয়েছে মনা’র গ্রীন ভ্যালি নামে একটি আবাসিক হোটেলও।

অথচ সরেজমিনে দেখা গেছে, এতো সম্পদশালী সন্তানের মা আমেনা বেগম কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন। ছেলের এত সম্পদ থাকার পরও মায়ের ভরণপোষন চালাতে হয় মেয়েকে। তাও মানুষের বাসায় কাজ করে যা আনে তা খেয়েই চলে মা- মেয়ের জীবন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক বাল্যবন্ধু জানান, জেলা শহরের শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৯৭ সাল ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে মনা। জীবনের প্রথমদিকে পলিথিন বিক্রি করতো। তারপর হোটেল বয়ের কাজ করেছে দীর্ঘসময়। হঠাৎ করে মনে হয়, আলাদীনের চেরাগ পেয়েছে!

মনা’র মা আমেনা বেগম জানান, দুই মেয়ে দুই ছেলে রেখে আজ থেকে প্রায়  ৩০ বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার অনেক কষ্টে সন্তানদের লালন পালন করে বড় করেন। বড় ছেলে এত সম্পদ অর্জনের পরও আমার জীবনের দু:খ ঘুচল না, এটাই বেশি বেদনার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনা কোন সদুত্তর না দিয়ে উল্টো সাংবাদিকদের সাথে র্দুব্যবহার করেন।

খাগড়াছড়ি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions