কাপ্তাইয়ে অপহরনের ১২ দিনেও মংচিং মারমার সন্ধান মেলেনি

সিএইচটি টুডে ডট কম, কাপ্তাই (রাঙামাটি)। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলাধীন রাইখালী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মংচিং মারমাকে নিজ বাড়ী থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহরণের ১২’দিন অতিবাহিত হলেও এখনও সন্ধান পাওয়া যায়নি তার। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়েও মিলেনি কোন হদিস। এদিকে ইউপি সদস্যকে উদ্ধারে তৎপরতার কথা জানান চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশ।

অপহরণের বর্ণনা দিতে গিয়ে অপহৃতের স্ত্রী সামাউ মারমা বলেন, ৩-৪জন সশস্ত্র অস্ত্রধারী রাত সাড়ে ১২টায় আমাদের বাসায় এসে আমাকে ও আমার ছোট্ট ছেলে-মেয়েকে বন্দুক দেখিয়ে নিচে ডাকে। আমরা বের না হওয়ায় লোহার রড দিয়ে বাসার লাইট ভাঙচুর করে। পরে আমার স্বামী বাসার ভিতরে চলে যাওয়ায় তাকে সেখান থেকে টেনে নিয়ে যায়।

স্বামীর মুক্তির আকুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীকে আমি ফেরত চাই, আর কিছুই চাইনা। বাচ্চারা প্রতিদিনই কান্নাকাটি করছে। বাবা কখন আসবে, আমরা কিভাবে থাকবো? বাবাকে খুঁজে দিতে হবে বলে কান্নাকাটি করছে ছেলে-মেয়েরা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় চন্দ্রঘোনা-বান্দরবান সড়ক রাইখালী ইউপির উদ্যোগে মংচিং মারমার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে ইউনিয়নবাসী। এদিকে ‘আমরা দূর্ঘটনা মুক্ত অঙ্গন চাই’, ‘আর কত মায়ের বুক খালী হবে? আর কত নারী বিধবা হবে?’ ‘রাইখালী ইউনিয়নের জনগণের নিরাপত্তা চাই’, মংচিং মারমার সন্ধান চাই’, শীর্ষক ব্যানার-পেষ্টুনে মানববন্ধনে অংশ নেয় সাধারণ মানুষ। এসময় বক্তারা অপহৃতের শিশু সন্তানের দিকে তাকিয়ে হলেও অপহৃত ইউপি সদস্যকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান।

মাবনববন্ধনে রাইখালী ইউপি ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সালাউদ্দিন বলেন, একজন সন্তানকে পিত্রৃহারা করবেননা। একজন স্ত্রীকে স্বামীহারা করবেননা। একজন ভাইকে ভাইহারা করবেননা। একজন মা বাবাকে পুত্রহারা-সন্তানহারা করবেননা। আপনাদের প্রতি বিনিত অনুরোধ থাকবে, মানবিক দিক বিবেচনা করে অবিলম্ভে মংচিং মারমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জোড় দাবি জানাচ্ছি  

কাপ্তাইয়ের রাইখালী ৬নং ইউপি সদস্য মংনুচিং মারমা বলেন, মংচিং মারমার দুটি ছেলে মেয়ে এখনো অবুঝ। তাদের উপর সহানুভূতি রেখে হলেও তাকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাই।

রাইখালী এলাকা এখন সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। একের পর এক হত্যা, অপহরণ ও ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসী চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে উল্লেখ করে রাইখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক বলেন, আপনারা আপনাদের যত ক্ষোভ দুঃখ তা বাহিরে মিটান। কিন্তু আমার সাধারণ জনগণকে আর কষ্ট দিবেননা। মংচিং মারমার ছোট সন্তানদের দিকে তাকিয়ে হলেও তাকে মুক্তি দিলে আমরা আপনাদের উপর কৃতজ্ঞ থাকবো।

প্রসঙ্গত: রাইখালী ইউনিয়নের কারিগর পাড়ার নিজ ঘর থেকে গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) রাত প্রায় ১১টায় ইউপি সদস্য মংচিং মারমাকে মুখোশধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার ৩দিন পর ২১ফেব্রুয়ারী তার স্ত্রী সামাউ মারমা চন্দ্রঘোনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। রাইখালীতে ইউপি সদস্য উদ্ধারে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান, চন্দ্রঘোনা থানা অফিসার ইনর্চাজ মো. আশ্রাফ উদ্দিন।