প্রকাশঃ ০৮ জুনe, ২০১৯ ০৪:২০:৪৮
| আপডেটঃ ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০৫:২৩:০৭
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। প্রতিবছর ঈদুল ফিতরের বন্ধে পর্যটকদের ভীড়ে রাঙামাটির পর্যটক স্পটগুলো মুখরিত থাকলেও এবার তুলনামুলক পর্যটক কম এসেছেন রাঙামাটি। ঈদের টানা বন্ধে কিছু সংখ্যক পর্যটক ঢাকা এবং অন্য জেলা থেকে আসলেও এবার বেশীর ভাগ পর্যটক এসেছেন আশপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে। যারা এসেছেন তারা আবার হতাশ হয়েছেন কাপ্তাই লেকের পানি নিম্ন স্তরে নেমে যাওয়ায়, নির্ধারিত স্থান ছাড়া লেক ভ্রমণ করতে পারছেন না।
ঈদে টানা ছুটির সুযোগে ইট পাথুরের শহর ও যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি দূর করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসুরা পাহাড় ও হ্রদ ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন। পর্যটকরা আত্বীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে পর্যটন স্পটগুলো ঘুরাঘুরি করছেন। তবে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেলেও অন্যান্য বছরের তুলনামুলকভাবে কম এসেছে। বেড়াতে পর্যটকদের অভিযোগ রাঙামাটিতে ঝুলন্ত সেতু ছাড়াও আরো অনেক আকর্ষনীয় ও আধুনিকমানের স্পট গড়ে তোলা দরকার।
বিনোদনের খোঁজে পাহাড়ে আসা পর্যটকদের আনন্দ আর উচ্চলতা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও ভূলিয়ে দিচ্ছে জীবনের নানা জটিলতা। সরকারি বন্ধে শহরের পর্যটন স্পট রাঙামাটি জেলার নয়নাভিরাম বিশাল কাপ্তাই হ্রদ, সুবলং প্রাকৃতিক ঝর্ণা, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফের স্মৃতি সৌধ, পর্যটন মোটেল, ঝুলন্ত ব্রীজ, কাপ্তাই বাঁধ, কাপ্তাই হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রজেক্ট, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যাণ, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, রাজবাড়ি, রাজবন বিহার, উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট, উপজাতীয় যাদুঘর, জেলা প্রশাসকের বাংলো, ঐতিহ্যবাহী জুম্ম ক্ষেতসহ অসংখ্য আদিবাসী গ্রাম এবং আদিবাসীদের বৈচিত্রপূর্ণ বর্ণাঢ্য জীবনধারা, কৃষ্টি,সংস্কৃতি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন শত শত পর্যটক। শহরের প্রাইভেট হোটেলগুলো এবং সরকারী পর্যটন কমপ্লেক্সের রুমের বুকিং ভালো বলে জানিয়েছেন পর্যটন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে পর্যটকরা রাঙামাটি বেড়াতে এসে তাদের ভালো লাগা এবং সমস্যার কথা জানিয়েছেন।
ঢাকা থেকে বেড়াতে কবির হোসেন জানান, ঈদের বন্ধে ঘুরতে আসলাম রাঙামাটি খুব সুন্দর ভালো লাগছে, তবে শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় বাচ্ছারা খেলাধুলা করতে পারছে না, পর্যটন এলাকায় ভালো হোটেল নেই, আর পর্যটনের হোটেল দাম চড়া সহনীয় পর্যায়ে রাখা প্রয়োজন।
রাজশাহী থেকে বেড়াতে কামরুল হাসান জানান, আমি এর আগেও এসেছি, কোন পরিবর্তন হয়নি। পর্যটকদের জন্য নতুন নতুন স্পট তৈরি করা প্রয়োজন। ভালো মানের হোটেল নেই, খাবারের দাম বেশী কিন্তু খাবার মান সম্মত নয়। শিশুদের খেলার জন্য খোলামেলা পার্ক দরকার।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা শেফালী আক্তার জানান, প্রায় ১০ বছর বর রাঙামাটি আসলাম, কিন্তু লেকের পানি কমে যাওয়ায় আমরা নিজেদের মত করে ঘুরতে পারছি না, মনটা খারাপ হয়ে গেছে। কাপ্তাই লেক সংস্কার করা দরকার।
রাঙামাটি শহরের রির্জাভবাজার এলাকার হোটেল মতি মহলের মালিক শফিউল আজম জানান, তাদের বুকিং মোটামুটি ভালো, সামনে হয়ত পর্যটক বাড়বে, আমরা পর্যটকদর সেবা দিতে প্রস্তুত।
পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়–য়া জানান, পর্যটন দিন দিন বাড়ছে, আমরা আমাদের টার্গেটের কাছাকাছি পৌঁছেছি, এখনো পর্যন্ত ফিফটি পার্সেন্ট বুকিং আছে।
তবে পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে মন কেড়েছে রাঙামাটি পুলিশের পর্যটন স্পট পলওয়ে পার্ক, দৃষ্টি নন্দন করে এটি সাজানোর কারণে প্রতিদিন বিকালে এখানে ঘুরতে যায় পর্যটকরা। এখানে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম লাভ পয়েন্ট।
সারা বছর রাঙামাটির পর্যটনকে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে আরো বেশী আকর্ষনীয় করতে পর্যটন স্পটগুলোর সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তাসহ আকর্ষণীয় করা গেলে একদিকে প্রচুর পর্যটকদের আগমন ঘটবে তেমনি করে অর্থনীতিতে রাঙামাটির পর্যটন শিল্প বিরাট ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।