শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা ফেরাতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের প্রস্তাব

প্রকাশঃ ০৭ অগাস্ট, ২০১৮ ০১:৪৩:৪২ | আপডেটঃ ২৫ মার্চ, ২০২৪ ০৮:২৭:৫৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। নাব্যতা হারিয়ে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ ঘিরে তৈরি হয়েছে নানামুখি সংকট। এসব সংকট মোকাবেলায় হ্রদের নাব্যতা আনতে হবে। নাব্যতা ফেরাতে দ্রুত হ্রদের ক্যাপটিাল ড্রেজিংয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত সভায় বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশাজীবী মানুষ প্রস্তাবে জোর দিয়েছেন।

কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনে ১৯৬০ সালে খরস্্েরাতা কর্ণফুলি নদীর উপর দিয়ে নির্মিত হয় কাপ্তাই বাঁধ। এতে সৃষ্টি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ এ কৃত্রিম জলরাশির। হ্রদটি ঘিরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি মৎস্য উৎপাদন, নৌ-যোগাযোগ, জলেভাসা জমিতে কৃষি চাষাবাদ, সেচ, ব্যবহার্য্য পানি সরবরাহ, পর্যটনসহ গড়ে ওঠে নানামুখি সুবিধা ও সম্ভবনা। কিন্তু সৃষ্টির পর গত ৫৮ বছরে কাপ্তাই হ্রদের কোনো সংস্কার, ড্রেজিং বা খনন করা হয়নি। তার ওপর পড়ে দখলের কবলে। বছরের বছর ধরে নামা পাহাড়ি ঢলের পলি জমে এবং বসতিস্থাপনকারীদের নিক্ষেপ করা বর্জ্যে দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে হ্রদের তলদেশ। এ ছাড়া ২০১৭ সালের ১৩ জুন পাহাড় ধসসহ প্রতিনিয়ত ধসে মাটি বিলীন হচ্ছে হ্রদে। ফলে হ্রদ হারাচ্ছে নাব্যতা। হ্রদ ঘিরে তৈরি হচ্ছে নৌ-পরিবহনসহ নানামুখি সংকট। বর্তমানে অস্তিত্বের সম্মুখীন এই হ্রদ। কিন্তু নির্বিকার সরকার।

সোমবার বিকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত এক সভায় কাপ্তাই হ্রদ নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা কাপ্তাই হ্রদকে রক্ষায় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সভায় স্থানীয় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এবং তাদের ক্ষতিগ্রস্ত না করে কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিংয়ের পক্ষে মত দিয়েছেন রাঙামাটির তৃণমূল পর্যায়ের বিশিষ্টজনেরা। এতে মত দিয়েছেন স্থানীয় হেডম্যান (মৌজাপ্রধান), কারবারি (গ্রামপ্রধান) ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্য।
সভায় বলা হয়, কাপ্তাই হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রত্যেক বছর নৌ যোগাযোগ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পাহাড় ধস ও বন্যার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে দ্রুত ভরাট হচ্ছে হ্রদের তলদেশ। নাব্যতা ফেরাতে প্রয়োজন দ্রুত হ্রদের ড্রেজিং। ড্রেজিংয়ে উত্তোলিত মাটি উপযুক্ত স্থানে ভরাট করে নতুন নগরি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমা, বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি মতামত ও পরামর্শ দেন।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, ২০১৭ সালে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভায় কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিংয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। ড্রেজিংয়ের কারণে যাতে স্থানীয় জনগণের নতুন করে কোনো সংকট সৃষ্টি না হয়, তা নজরে আনতে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

সভায় আরও বলা হয়, কাপ্তাই হ্রদ দেশের বড় সম্পদ। কিন্তু হ্রদটিকে যা তা করে ব্যবহার এবং দখল করায় সংকটে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বর্জ্য নিক্ষেপে দূষণে পরিণত করা হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। কাপ্তাই হ্রদের গতিপ্রবাহ সচল ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং জরুরি। অথচ বিষয়টির প্রস্তাবনা দেয়া হলেও আজও নির্বিকার সরকার।

বিশেষ প্রতিবেদন |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions