শনিবার | ১৮ মে, ২০২৪
একটু বৃষ্টি হলেই হাটু সমান পানি উঠে বাঙ্গালহালিয়া বাজারে

পাহাড়ী ঢলে পানির স্রোতে হেডম্যান পাড়া ব্রীজে ফাটল ধরেছে

প্রকাশঃ ২৫ জুলাই, ২০১৮ ০৯:৫৩:৪৮ | আপডেটঃ ১২ মে, ২০২৪ ০২:০৩:৪৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাজস্থলী (রাঙামাটি)। রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের গত কয়েকদিনে একটানা মূসলধারে বৃষ্টির ফলে পাহাড়ী ঢলের পানিতে হেডম্যান পাড়ায় অবস্থিত ত্রাণ বিভাগের ব্রীজের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে ব্রীজটি দিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের শতশত লোকজন ও শত শত স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী দৈনিক যাতায়াত করে থাকে। একটু বৃষ্টি হলেই বাঙ্গালহালিয়া বাজার এলাকাসহ ২শত গজের মধ্যে হাটু সমান পানি উঠে জনজীবনে বিপর্যয় ঘটছে। বাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে দোকানের মূল্যবান মালামাল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়নের বাজার এলাকায় কালী মন্দিরের পিছনে, কুটুরিয়া পাড়া, আর্মি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এবং পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় পানিবন্ধী হয়ে পড়ছে প্রায় একশটি পরিবার।
কালী মন্দিরের পিঁছনে বসবাসরত বিশ্বনাথ চৌধুরী, পঙ্কজ ভূষণ চৌধুরী, জ্যোতির্ম্ময় চৌধুরী, ছোটন চৌধুরী, আশিষ আইচ, টকি দেওয়ানজী, সরুজ চৌধূরীসহ বেশ কয়েকজনের মাটির ঘরের দেয়াল ধসে গেছে। মন্দির পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন গত ২-৩ বছর ধরে বাজার এলাকায় পানি নিষ্কাশনের নালাগুলো বেদখল হয়ে যাওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই মন্দিরের উঠানসহ আশ-পাশ এলাকায় হাটু সমান পানি উঠে ঘরবাড়ী তলিয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমাদেরকে উঁচু জায়গায় ঘর ভাড়া নিতে হচ্ছে বলে জানান। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যে মাছ বাজারটি রয়েছে, তার মাঝখান দিয়ে পানির নালাটি ভরাট করে ফেলায় পানি নিষ্কাশনের ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় কাকড়াছড়ি পাড়া এলাকার পাহাড়ী ঢলের পানি এসে আমাদের ঘর বাড়ী তলিয়ে যাচ্ছে। বাজারের ব্যবসায়ী বনপতি বসাক বলেন, সাপ্তাহিক মঙ্গলবার বাজারের দিন হলেও দোকানের ভিতরে বৃষ্টির পানি ঢুকায় ব্যবসায়ীক কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুন সেন জানান, বান্দরবান বাস কাউন্টারের সামনে পানি নিষ্কাশনের জন্য যে নালাটি ছিল, সেটি সড়ক পরিবহণ বিভাগ রাঙামাটি বান্দরবান সড়ক সংস্কারের সময় নালাটি অর্ধেক বন্ধ করে দেয়ায়, পানি চলাচলে বিঘœ ঘটছে।
বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ সামশুল আলম বলেন, মঙ্গলবার বাজারের দিন হলেও মুসলধারে বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ী ঢলের পানি বাজারের কাঁচা বাজারসহ চৌধুরী মার্কেটের ৭০-৮০টি দোকানের ভিতরে পানি ঢুকায় ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। বিশেষ করে মাছ বাজার একেবারেই পানিতে তলিয়ে গেছে। ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, গত অর্থ বছরে কাবিখা, টিআর প্রকল্পের মাধ্যমে কালি মন্দিরের পিঁছন থেকে প্রায় ১৫০ফুট পানি চলাচলের নালা সংস্কার করা হয়েছে। পরিষদের বরাদ্দ স্বল্পতার কারণে নালাটি পুরাদমে সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।

রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুশফিকুর রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে পানি চলাচলের নালাটি সংস্কারের উদ্যোগ হাতে নিবেন বলেন জানান এবং হেডম্যান পাড়াস্থ ব্রীজটি সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান।
এদিকে সরজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে যে সমস্ত ড্রেন গুলো রয়েছে, সেগুলো দীর্ঘ বছর ধরে সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এবং বাজারের মার্কেটগুলোর উপরে ভাড়া বাসার পাইপ লাইনগুলো বাজারের ড্রেনের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই বাজারে হাটু সমান পানি হয়ে যায়।

রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions