শনিবার | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

মিঠুন চাকমার হত্যাকারীদের বিচার জনতার আদালতে হবেই

প্রকাশঃ ০৩ জানুয়ারী, ২০২২ ০১:১৪:৩৭ | আপডেটঃ ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০১:২৯:৪৩
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর অন্যতম সংগঠক ও পিসিপি'র সাবেক সভাপতি শহীদ মিঠুন চাকমার ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় বক্তারা বলেছেন, ‘মিঠুন চাকমার  হত্যাকারীরা কেউ রেহায় পাবে না, তাদের বিচার একদিন জনতার আদালতে হবে’।

আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি ২০২২) বিকাল ৪টায় ঢাকায় শহীদ মিঠুন চাকমার ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা শাখা এই স্মরণসভার আয়োজন করে।

“ঘাতকদের রেহাই নেই, জনতার আদালতে তাদের বিচার হবেই” এই শ্লোগানে “বিপ্লবীর আত্মত্যাগের চেতনায় এগিয়ে আসুন, লড়াইয়ে যুক্ত হোন” এই আহ্বানে আয়োজিত স্মরণসভায় পিসিপি ঢাকা শাখার সহ-সভাপতি রনেল চাকমার সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক তুজিম চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপি'র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নীতি চাকমা প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণের অস্তিত্বকে ধ্বংস করতে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিত্য নতুন কৌশল প্রয়োগ করছে। তারা পাহাড়িদের মধ্যেকার সংঘাত উস্কে দিয়ে নিজেদের কায়েমী স্বার্থ উদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রীয় এই ফাঁদে পা ফেলে পাহাড়িদের মধ্যেকার কতিপয় দালাল-প্রতিক্রিয়াশীল ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সাথে আঁতাত করে বৃহত্তর স্বার্থকে বিকিয়ে দিচ্ছে। তারা রাষ্ট্রীয় বাহিনীসহ একযোগে জনগণের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন চালাচ্ছে। খুন-গুম-অপহরণ ও নারী নির্যাতনের মত জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করছে।

বক্তারা আরো বলেন, পৃথিবীর দেশে দেশে জনগণের অধিকারের জন্য যারা প্রকৃত আন্দোলন করেছেন, যারা লড়াই করেছেন তাদের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে শাসকগোষ্ঠী নানা ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুক্তিকামী জনগণের লড়াই সফল হয়েছিল এবং ষড়যন্ত্রকারীরা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামেও সরকার-রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা পরিচালিত হয়ে যারা জনগণের স্বার্থকে বিকিয়ে দিচ্ছেন তাদের এমন পরিণতি হতে বাধ্য। মিঠুন চাকমার হত্যাকারী রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদপুষ্ট নব্য মুখোশ-সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা কেউ রেহায় পাবে না, তাদের বিচার একদিন জনতার আদালতে হবেই।

নেতৃবৃন্দ মিঠুন চাকমাকে স্মরণ করে বলেন, মিঠুন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশ-বিদেশের একজন পরিচিত নেতা। তিনি লেখালেখির মাধ্যমে দেশীয় ও বহির্বিশ্বে নিপীড়ত নির্যাতিত ও মেহনতি মানুষের কথা তুলে ধরতেন। তাঁর লেখনিতে মার্কস-এঙ্গেলস সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গিও লক্ষ্য করা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করার পর যখন পেশাগত দায়িত্ব অর্থাৎ শিক্ষকতার প্রস্তাব দেয়া হলেও স্বেচ্ছায় তা প্রত্যাখ্যান করে কর্ম হিসেবে রাজনৈতিক জীবন বেছে নেন। ভোগ বিলাসী জীবন ত্যাগ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে ইউপিডিএফ’র সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। ইউপিডিএফ’র সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নিপীড়িত, শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন। তাঁর আদর্শ-চেতনা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে। নতুন প্রজন্মকে লড়াই সংগ্রামে যুক্ত হবার উৎসাহ উদ্দীপনা দেয়। তিনি সকলের কাছে একজন মহান ব্যক্তি হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। পাহাড়ের জনগণ তার হত্যার শোককে শক্তিতে পরিণত করে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বক্তারা, মিঠুন চাকমার আদর্শ চেতনাকে বুকে ধারণ করে লড়াই সংগ্রাম যুক্ত হওয়ার জন্য পাহাড়ের তরুণ প্রজন্ম ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তারা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মিলিত ষড়যন্ত্রে মিঠুন চাকমা হত্যাসহ ইউপিডিএফ ও তাঁর সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী হত্যার বিচার দাবি করেন।


সারা দেশ |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions