শুক্রবার | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
বিলাইছড়ি কেরণছড়ি দশবল বৌদ্ধ বিহারে ২৭তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান সম্পন্ন

ধর্ম কখনো হত্যা বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সমর্থন করে না : দীপংকর তালুকদার এমপি

প্রকাশঃ ২৪ অক্টোবর, ২০২১ ০৯:০৯:৪৯ | আপডেটঃ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:৩৩:৫৫
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। অশান্তি নয় সকল ধর্মের মানুষের মাঝে মৈত্রী ভাবনা জাগ্রত হবে এ কামনায় রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলা কেরণছড়ি দশবল বৌদ্ধ বিহারে ২৭তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২৪ অক্টোবর) সকালে কেরণছড়ি দশবল বৌদ্ধ বিহারের কমিটির আয়োজনে সকাল থেকে শুরু হয় দিনব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসব। দিনব্যাপী দানোত্তম কঠিন উপলক্ষে দূর দূরান্ত থেকে পুণ্য সঞ্চয়ী করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা বিহারে সমবেত হয়।

সকালে কঠিন চীবর দান উপলক্ষে বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্ট পরিষ্কার দান, পানীয় দান, কল্পতরু দানসহ সকল দানীয় বস্তু দান করেন।

এসময় জগতের সব প্রাণীর সুখ শান্তি ও মঙ্গল কামনা করে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানে বিহারে আসা পুন্যার্থীর উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন, বিশ্ব মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার খুলশী চট্টগ্রামের অধ্যক্ষ ভদন্ত রতœপ্রিয় থের।

পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ বিলাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি ভদন্ত আর্য্যলঙ্কার মহাথেরর সভাপতিত্বে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি।

এ সময় রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অভিলাষ তঞ্চঙ্গ্যাসহ বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শত শত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি বিলাইছড়ি উপজেলা কেরণছড়ি দশবল বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষ বিপুলজ্যোতি থের।
চীবর দান অনুষ্ঠানে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। আর ধর্ম কখনো হত্যা, নির্যাতন বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সমর্থন করে না। মারামারি-খুনাখুনি ধর্মের অংশ নয়। প্রত্যেক ধর্মেই শান্তির কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা ধর্মকে বিশ্বাস করে না। আর কিছু শ্রেণীর লোক আছে যারা প্রতিনিয়ত ধর্মকে ব্যবহার করে মারা-মারি খুনা-খুনিতে লিপ্ত থাকে। আর নিজের ধর্মকে সম্মান করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যের ধর্মকেও সম্মান করতে হয়। আর অন্য ধর্মকে হেয় করা হলে নিজের ধর্মকেই অসম্মান করা হয়ে যায়। তিনি সকলকে মারা-মারি, খুনা-খুনি ও রক্তপাত থেকে বের হয়ে ধর্মের পথে মৈত্রী ভাবনা জাগ্রত করেই পথ চলার আহবান জানান।

ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মাধ্যমে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের’ এমন প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ভিক্ষু সংঘের হাতে চীবর উৎসর্গ করা হয়।

উল্লেখ্য, আড়ায় হাজার বছর আগে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা মহা পুণ্যবতী বিশাখা ২৪ ঘণ্টা মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে সুতাগুলো রং করে বয়ন করে সেলাই শেষে চীবর বিশেষ পরিধেয় বস্ত্র দান কার্য সম্পাদন করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহাযজ্ঞ সম্পাদন করার কারণে বৌদ্ধরা এই ধর্মীয় উৎসবকে কঠিন চীবর দান বলে। এ দান অন্য যে কোন দানের চেয়ে শ্রেষ্ঠদান হিসেবে মনে করা হয়।

প্রবারণা পূর্ণিমা অর্থাৎ আশ্বিনী পূর্ণিমার পর দিন থেকে এক মাসব্যাপী বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই দানানুষ্ঠান চলবে।



এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions