কাপ্তাই বাঁধের ১৬ টি জলকপাট চালুর ৬ ঘন্টা পর বন্ধ রাখা হয়েছে
প্রকাশঃ ২৫ অগাস্ট, ২০২৪ ০৫:৪২:৩৮
| আপডেটঃ ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০১:০৫:২৭
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ১৬ টি জলকপাটে ৬ ইঞ্চি করে পানি ছেড়ে দিয়েছে।
রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৮ টা ১০ মিনিটে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট এক যোগে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন করা হয়েছে।
সকালে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি ১০৮ এমএসএল হওয়ায় রবিবার সকাল ৮ টায় বাঁধের ১৬ টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে উঠিয়ে পানি ছাড়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে।
তিনি আরও বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানির প্রবাহ ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে পানির লেভেল অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে পানি খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
এদিকে, বাঁধের জলকপাট ছাড়ার ৬ ঘন্টার পরে রবিবার বেলা ২ টায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ কাপ্তাই বাঁধের ১৬ টি জলকপাটে পানি ছাড়া বন্ধ করে দিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, হ্রদে পানির চাপ না থাকায় বেলা ২ টায় সকালে খুলে দেওয়া বাঁধের ১৬ টি জলকপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে মাধ্যমে ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
এর আগে কাপ্তাই হ্রদের পানি ধারণ ক্ষমতার বিপৎসীমার কাছাকাছি আসায় শনিবার রাত ১০টায় বাঁধের জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু পরে হ্রদের পর্যাপ্ত পানি না হওয়ায় এবং রাতের বেলায় বাঁধ খোলার আতঙ্কিত হওয়ায় সম্ভাবনা সহ সব দিক বিবেচনা করে রাতে না খুলে রবিবার সকাল ৮ টায় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
১৯৬০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্মাণ করা হয় কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৫ টি ইউনিট হতে সর্বমোট ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, যা জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন করা হয়। বাঁধ দেওয়ার ফলে ৭২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশাল জলধারা সৃষ্টি হয়। হ্রদের কারণে জেলার ৫৪ হাজার একর কৃষিজমি পানিতে ডুবে যায়। যা পার্বত্য চট্টগ্রামের চাষযোগ্য জমির প্রায় ৪০ ভাগ। এই বাঁধের কারণে ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষ।