বুধবার | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পাহাড় ধস, বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশঃ ২২ অগাস্ট, ২০২৪ ০৫:১৪:৫১ | আপডেটঃ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০২:৪৯:০২

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি । কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণে রাঙামাটির বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা ছাড়াও নতুন করে কাউখালী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে, জলজট দেখা দিয়েছে। এদিকে পানি বাড়ছে জেলার বিলাইছড়ির রাইক্ষ্যং নদী, জুরাছড়ির শলক নদ, বাঘাইছড়ির কাচালং, লংগদুর মাইনী, নানিয়ারচরের চেঙ্গী এবং বরকলের কর্ণফুলী নদীতে। জেলার নদ-নদীতে পানি বেড়ে সেই পানি প্রবাহিত হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদে। এতে করে ক্রমাগত ফুলছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদ।


গত বুধবার কাপ্তাই হ্রদে ১০১ এমএসএল পানি থাকলে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত পানির পরিমাণ দাঁড়াল ১০৪ এমএসএলের অধিক। যদিও কাপ্তাই হ্রদে পানি ধারণ সক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। ১০৭- এমএসএল পানি হলে ছাড়া হয় কাপ্তাই বাঁধ।

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ঘাগড়া কলাবাগান এলাকায় পাহাড় ধসে বৃহস্পতিবার সকালে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে সড়ক জনপথ (সওজ) বিভাগ ফায়ার সার্ভিসের লোকজন পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি সরানের পর স্বাভাবিক হয় যানবাহন চলাচল। এছাড়া রাঙামাটি সদর উপজেলার কুতুকছড়ি অস্থায়ী বেইলি ব্রিজে পানি উঠে পাশ্ববর্তী খাগড়াছড়ি জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে বিকেল নাগাদ সড়কের পানি কমার পর ছোট যানবাহন চলাচল শুরু করে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে বান্দরবানের সঙ্গে।

সড়ক জনপথ (সওজ) রাঙামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কলাবাগান এলাকার পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে আমাদের সড়ক বিভাগের লোকজন গিয়ে সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে এক ঘন্টা পরে যান চলাচল স্বাভাবিক করেছে। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক সড়ক পানিতে ডুবে গিয়ে রাঙামাটির সঙ্গে খাগড়াছড়ির জেলার যানচলাচল সকাল থেকে বন্ধ হয়, তবে বিকেল পানি কমার পর ছোট যান চলাচল শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সড়কে ছোট-বড় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও বড় ধরণের কোনো ঘটনার খবর আমরা এখনো পাইনি।

এদিকে, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। নতুন করে বেশ কিছু এলাকা বৃষ্টি পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলার কাউখালী উপজেলাতেও বন্যায় ঘর-বাড়ি প্লাবনের সংখ্যা বাড়ছে। কাউখালী উপজেলা সদরে অবস্থিতসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ২০টি বসতঘর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বিগত ২৫-৩০ বছরে কাউখালী উপজেলা এত বন্যার পানি দেখেনি বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। কাউখালীর ইউএনও হ্যাপি দাস জানান, আশ্রয়ণের ঘরের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সাহার্য্য করা হবে। বাঘাইছড়ির ইউএনও শিরীণ আক্তার বলেন, উপজেলায় ৩১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪০টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষজন এসেছেন।

এছাড়া রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কে বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। সকালে বাঘাইছড়ির মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কের প্রশিক্ষণটিলা নামক এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনায় যান চলাচল বন্ধ হয়।

 

সওজ খাগড়াছড়ির বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘বাঘাইছড়ির মারিশ্যা সড়কের প্রশিক্ষণ টিলা নামক এলাকায় সড়কের পাহাড় ধসের রাস্তা মেরামতের পর যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

রাঙামাটি জেলা সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটি জেলা শহরের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বাস করা বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছে জেলাপ্রশাসন। বুধবার দিবাগত রাত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝুঁকিতে থাকা আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ৬৫ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রের আনার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা শহরের ২৯টি ছাড়াও জেলায় মোট ২৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions