পার্বত্য চট্টগ্রাম আজ বড় কারাগারে পরিণত হয়েছে: সন্তু লারমা

প্রকাশঃ ০৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ১২:০০:১৫ | আপডেটঃ ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:১০:৩১
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই যুগ পূর্তি আজ। এ উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের যৌথ আয়োজনে রাজধানী ঢাকার আগাওগাওঁস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং এর সঞ্চালনায় আয়োজনের শুরুতে সংহতি বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা। এছাড়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য মেইনথিন প্রমিলা।

অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চুক্তি’র অন্যতম স্বাক্ষরকারী, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। এছাড়া অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি ও সাংসদ রাশেদ খান মেনন এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের কো-চেয়ার এডভোকেট সুলতানা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, বিশিষ্ট আইনজীবি ব্যারিষ্টার সারা হোসেন ও বাংলাদেশ হিন্দু, বোৗদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ প্রমুখ।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বলেন,অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু আজ ২৪ বছর পর চুক্তি বাস্তবায়নের অবস্থা অনেক হতাশাব্যঞ্জক।গত ২৪ বছরে যে সরকারের আমলে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সে সরকারই অধিকাংশ সময় ক্ষমতায় আছে আজ অবধি। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া একেবারেই থেমে আছে। পার্বত্য সমস্যা একটি রাজনৈতিক ও জাতীয় সমস্যা। যেহেতু এটি একটি রাজনৈতিক সমস্যা সেহেতু এটি রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। তার জন্যই চুক্তি করা হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য সমস্যাকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকলেও চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তা সমাধান হতে পারেনি। আজ প্রশ্ন করতে হচ্ছে, সরকার কেন চুক্তি করেছিল? পার্বত্য সমস্যাকে সমাধানের জন্য নাকি, জুম্ম জনগণের অস্তিত্বকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার জন্য? পার্বত্য জনগণ তাদের ভূমির অধিকার, জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্বকে সুরক্ষার জন্যই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছিল। পাহাড়ের মানুষের জন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকতো তাহলে পাহাড়ের জুম্ম জনগণ সরকারের সাথে আলোচনায় আসতো না বলেও দাবী করেন তিনি।

আজকে পার্বত্য অঞ্চলে জুম্ম জনগণকে যেভাবে শোষন, বঞ্চনা ও নিপীড়ন করা হচ্ছে তা বলার ভাষা নেই উল্লেখ করে সন্তু লারমা বলেন,  পার্বত্য চট্টগ্রাম আজ বড় ধরনের কারাগারে পরিণত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আজ দু’টি পক্ষ। একটি পক্ষ যারা পাহাড়ের নিরীহ মানুষ যারা চুক্তির বাস্তবায়ন চায়। আর আরেকটি পক্ষ সরকার এবং তার সাথে যুক্ত বিভিন্ন পক্ষ। সেখানে সরকারের সামরিক, আধা-সামরিক বাহিনীর কর্তৃত্ব ও দমন-পীড়ন তো আছেই। সেই কর্তৃত্ব ও দমন-পীড়ন বর্ণনাাতীত বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি আজ চুক্তির বাস্তবায়ন চায় দাবি করে তিনি আরো বলেন, জনসংহতি সমিতি চুক্তির আলোকে যে আইনগুলো প্রণীত হয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়ন চায়। কিন্তু সরকার আজ জনসংহতি সমিতিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করে বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের নানাভাবে দমন-পীড়ন করছে। অনেক নেতাকর্মীকে আজ মামলা দিয়ে, গ্রেফতার করে, হামলা চালিয়ে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। দমন-পীড়নের এসব খবর আজ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে এসব খবর প্রচার করতে পারে না বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

বহিরাগত যে গরীব বাঙালিদেরকে জিয়াউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়ে বসতি প্রদান করেছিল তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এখনো চলমান। তারা আজ পাহাড়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তাবেদার গোষ্ঠী সৃষ্টি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। ইউপিডিএফ, জেএসএস (এমএন লারমা) সংস্কারপন্থী, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক), মগ পার্টিসহ পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ও মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে সংঘাত, হানাহানি, খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ইত্যাদি সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।

পাহাড়ের জুম্ম জনগণকে যে তথাকথিত শৃঙ্খলা, তথাকথিত নিয়ম কানুন মেনে চলতে বাধ্য করে পার্বত্য জনগণকে রাখা হয়েছে তা যেন এক ধরনের বড় কারাগার দাবি করে তিনি আরো বলেন, সেখানে বলার অধিকার নেই, জীবিকার অধিকার নেই। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ কর্তৃকপাহাড়ে আদিবাসী জনগণের জুম চাষ, আদা-হলুদ চাষের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি সম্বলিত চিঠিরও সমালোচনা করেন তিনি। পাহাড়ে যে ধরনের সেনাশাসন চলছে বাংলাদেশের অন্য কোথাও নেই। পাহাড়ের মানুষ শান্তিপ্রিয় বলে এখনো অপেক্ষা করছে সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। চুক্তি যদি বাস্তবায়ন না হয় তবে পাহাড়ের ছাত্র যুব সমাজ নিশ্চয় রুখে দাঁড়াবে বলে মনে করেন তিনি। যে চুক্তি বিশ্বাস, আন্তরিকতা ও ভালোবাসা দিয়ে করা হয়েছিল তাতে সরকারের শঠতা ছিল কী না প্রশ্নও করেন তিনি। পরিশেষে তিনি পাহাড়ের পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে পাহাড়ে সফর করার জন্য দেশের গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল ব্যক্তি ও সংগঠনে আহ্বান জানান।

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, পার্বত্য চুক্তির দুই যুগ পূর্তি আজ বিষাদ, বেদনার ভারে পালন করতে হচ্ছে। বাঙালি জনগোষ্ঠী স্বাধীনতা পেয়েছে। এই বাঙালির পরিপূরক হিসেবে ছিল ৫০টির অধিক আদিবাসী জনগোষ্ঠী যারা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। হয়ত বেশিদিন বাঁচব না, তবে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ বলে আজ বলতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি কলোনি হিসেবে দেখছি আমি। উপনিবেশ হিসেবেই পাহাড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে। পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়কে উপনিবেশ নয়, সরকারী ভাষায় ‘উপজাতীয়’ অধ্যুষিত অঞ্চল” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ২৪ বছরেও তা হয়ে উঠতে পারল না। বাঙালি ভিন্ন অন্যান্য আদিবাসীদেরকে স্বীকৃতি না দিয়ে অনাগরিক হিসেবে রাখার মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালকদের লজ্জা থাকা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। এমন একটা সময়ে আছি যখন নাগরিকরা কোনো রাজনৈতিক দলগুলোর উপর আস্থা রাখতে পারছে না, কেউ বলতে পারছে না, এটা আমার প্রশাসন। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি লজ্জিত।

বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি ও সাংসদ রাশেদ খান মেনন বলেন, ২৪ বছর পর চুক্তি নিয়ে যে আনন্দ উচ্ছ্বাস থাকার কথা ছিল তা আজ নেই বলে আমার মনে হয়। জিয়াউর রহমান যখন চরভাঙা গরীব বাঙালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তখন তরুণ সাংসদ হিসেবে আমরা বিরোধিতা করেছিলাম। পার্বত্য চুক্তিতে উপনীত হওয়ার সময় দু’টো দিক তুলে ধরেছিলাম। একটা হল, পাহাড়ে সামরিকায়ন বন্ধ করা এবং পুনর্বাসিত বাঙালিদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া। চুক্তি স্বাক্ষরের সময়ও সবার হাস্যজ্জ্যল চেহারা ছিল। এটার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কো শান্তি পুরষ্কারও পেয়েছিলেন। কিন্তু আজ হয়ত রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণসমাধানের জায়গায় অন্য কৌশল নেওয়া হয়েছে।এই করোনার সময়েও  অন্তত ২০টি ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের কো-চেয়ার ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আমরা শান্তি চেয়েছিলাম বলেই চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি যা বাস্তবতা বলে দেয়। অন্তত শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হয়েছে তার ন্যুনতমও বলতে পারিনা। উল্টো একতরফাভাবে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছি বলে আমরা দেখেছি। আদিবাসী মানুষের আদি জীবিকার উপরও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তাদের সমাজ, সংস্কৃতি, পেশা, অর্থনীতি সবকিছুর উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। একটা উপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী যেটা করে সেটাই করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। পার্বত্য চুক্তি সরকারি চুক্তি নয়। এই চুক্তি রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক নৈতিকতা থেকেই করা হয়েছে। কাজেই এই চুক্তি বাস্তবায়ন না করাটা রাষ্ট্রবিরোধী বলেও মনে করেন বিশিষ্ট এই মানবাধিকার কর্মী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে যেভাবে জাদুঘরে নিয়ে যাবার প্রচেষ্টা চলছে, তাতে পার্বত্য চুক্তিকে ইতোমধ্যেই জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি থেমে রয়েছে। সরকার এবছর ক্রোড়পত্রে চুক্তির কতটি ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে তা তুলে ধরেন নাই।সরকার সংখ্যা উল্লেখের জায়গায় যায়নি, কেননা একটা চক্ষুলজ্জা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। পাহাড়ের মানুষ কোনো সময় বিচ্ছিন্ন হওয়ার দারি তোলে নাই। কিন্তু তাদেরকে নানাভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখার অপচেষ্টা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের বড় উদাহরণ হল পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি। চুক্তির বিভিন্ন পক্ষ থাকে। কিন্তু পার্বত্য চুক্তিতে সরকার পক্ষ এবং পাহাড়ের আদিবাসী পক্ষ বাদে এখানে কোনো তৃতীয় পক্ষ নেই। চুক্তির একটি বড় কথা হল পাহাড়ে যদি কোনো উন্নয়ন করা হয় তাহলে পার্বত্যচট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানে তা হতে হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটি হচ্ছে না বলে আমরা দেখছি। অন্যদিকে আদিবাসীরদরকেও আমরা এখনো স্বীকৃতি দিতে পারছি না। পার্বত্য ভূমি সমস্যাকে সমাধানের জন্য যে ভূমি কমিশন গঠিত হয়েছে তার আইনও অনেকবার সংশোধিত হয়েছে। কিন্তু সেই কমিশনের বৈঠকও নিয়মিত হচ্ছে না। তাছাড়া পাহাড়ে গেলে এখন মনে করতে পারা যাবে না যে,এটা পাহাড়ি মানুষের এলাকা। এখন সেখানকার মার্কেট বাঙালিরা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে দাবি করেন এই সমাজ বিজ্ঞানী।

ব্যরিষ্টার সারা হোসেন আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, এই চুক্তি ছিল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল যা রাজনৈতিক সমস্যাকে সমাধানের জন্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিতো বাস্তবায়ন হচ্ছে না এমনকি চুক্তির আগে পাহাড়ের মানুষের অধিকারের জন্য যে আইনগুলো করা হয়েছে সেগুলো তো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বরং সেগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এমনকি চুক্তির মধ্য দিয়ে যে প্রতিষ্ঠানগুলো হয়েছে সেগুলোকে অসাংবিধানিক বলে এক ধরনের বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যে চুক্তি করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলো কীভাবে অসাংবিধানিক হবে বলে তিনি প্রশ্ন রাখেন।

তিনি আরো বলেন, মামলা তো তবুও ভালো যে যতই মিথ্যা অভিযোগ হোক তা জানা যায়। কিন্তু পাহাড়ে এমন কতগুলো ঘটনা ঘটানো হচ্ছে যাতে কোনো মামলায় নেই। কেবল ভয়ভীতি দেখিয়ে মানুষকে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে যাতে পাহাড়ের মানুষ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন, আত্মনিনয়ন্ত্রণ অধিকার নিয়ে কোনো কথা বলতে না পারে।

সংহতি বক্তব্যে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক কাল থেকে যখন যে শাসক ছিল, তখন ঐতিহাসিক কাল ধরে জুম্ম জনগণ নৃতাত্ত্বিক ভিন্নতার কারণে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। শাসকগোষ্ঠী ১৯৯৭ সালে তাদের ভুল থেকে শুধরে নিয়ে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু আজ ২৪ বছর পর পাহাড়ের জুম্ম জনগণের অবস্থান এখনো পরিবর্তিত হয়নি। সরকার যদি মনে করে সামরিক শক্তি যদি জুম্ম জনগণের অধিকারকে পদদলিত করবে তাহলে তারা ভুল ভাবছে। আমরা জুম্ম ছাত্র সমাজ কখনো তা হতে দিতে পারে না বলেও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন এই ছাত্রনেতা।