মহালছড়িতে কারিগরি সহ মাধ্যমিক পর্যায়ের নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন যাপন

প্রকাশঃ ০৫ অগাস্ট, ২০২১ ০৮:০৭:১৮ | আপডেটঃ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:০৭:৪১

সিএইচটি টুডে ডট কম, মহালছড়ি (খাগড়াছড়ি)। খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনহীন মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।


করোনা পরিস্থিতির কারনে সারা দেশের ন্যায় মহালছড়িতেও মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় বেকায়দায় পরেছেন উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। কারন এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে উত্তোলিত বেতন থেকে। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্কুল বন্ধের কারনে গত দেড় বছর যাবত বেশির ভাগ স্কুলেই বন্ধ রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন উত্তোলন কার্যক্রম। স্কুলে এস্যাইনমেন্ট চালুর ফলে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বল্প পরমাণে বেতন উত্তোলন করতে পারলেও, করোনা সংক্রমণ বাড়ার ফলে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পায়নি।


মহালছড়ি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মহালছড়িতে পাঠ দানের অনুমতি প্রাপ্ত নন-এমপিও মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮ টি। স্কুল গুলো হলো বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ উচ্চ বিদ্যালয়, চাইল্ড কেয়ার মডেল স্কুল, দূর্পয্যানাল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শহীদ ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের উচ্চ বিদ্যালয়, এপিবিএন আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মহালছড়ি টেকনিক্যাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ ও মহালছড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা।


বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস মজুমদার বলেন করোনা পরিস্থিতির কারনে গত দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে কোন বেতন উত্তোলন করতে না পারায় ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী সবার বেতন বন্ধ রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন গত বছর নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুদান উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জন প্রতি ৫০০০(পাঁচ হাজার টাকা) করে পেয়েছেন। এর বাদেও গত বছর খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের অনুদান জন প্রতি ১ হাজার টাকা করে পেয়েছেন।

দ্বিতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পেয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন তাদের স্কুলে ১১ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে মাত্র ৩ জন নগদের মাধ্যমে টাকা পেয়েছে বাকিরা এখনও পান নি, কেন পাননি তাও তিনি জানেন না।


মহালছড়ি এপিবিএন স্কুলের উপাধ্যক্ষ মারুফ উজ জামান ও দূর্পয্যানালা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উদয়ন চাকমা বর্তমান পরিস্থিতি স্বীকার করে বলেন করোনার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাতে শিক্ষক ও কর্মচারীরা দুঃসহ জীবন যাপন করতেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রোনোদনা ১ম বারে সব শিক্ষকরা পেলেও দ্বিতীয় বারে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রোনোদনা দেওয়ার কথা তাদের প্রতিষ্ঠানেও দুই তিন জন ছাড়া বাকিরা কেউ এখনও প্রোনোদনার টাকা পাননি।


প্রনোদনার বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম খীসার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মহালছড়ির নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের সব তথ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ধাপে ধাপে সবাই প্রোনোদনার টাকা পাবে। তবে যে সকল প্রতিষ্ঠানে জনবল কাঠামোর বাইরে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ পেয়েছেন তারা প্রোনোদনার আওতায় আসবেন না।