নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী (ভিডিওসহ)

প্রকাশঃ ২৩ জুলাই, ২০১৮ ০৭:০৩:০৭ | আপডেটঃ ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০৪:৩৩:৫৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির নানিয়াচর উপজেলা পরিষদের উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান আঞ্চলিক দল সমর্থিত প্রার্থীরা নিজেদের বিজয় লাভের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। দুজনেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন উল্লেখ করে দাবি করে বলেন, আমরা দায়িত্ব পালনকালে এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়ন করেছি এবং আমাদের সাথে পাহাড়ী বাঙালীর নিবিঢ় সর্ম্পক রয়েছে। আমরা আশাবাদী সবাই নির্বাচনে অংশ নিবে শান্তিপুর্ণভাবে ভোট দিবে।
গত  ৩ মে প্রতিপক্ষের গুলিতে উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শক্তিমান চাকমা নিহত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ২৪জুন, রিটানিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়ন পত্র বাছাই করা হয় ২৬ জুন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ৩জুলাই। উপ নির্বাচনে আঞ্চলিক সংস্কারবাদী দল জেএসএস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রগতি চাকমাকে আনারস মার্কা, ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রনতি রঞ্জন খীসাকে কাপ পিরিচ মার্ক এবং স্বতন্ত্র নারী প্রার্থী হিসেবে কল্পনা চাকমা দোয়াত কলম মার্কায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে প্রগতি চাকমা ও প্রনতি রঞ্জন চাকমার পোষ্টার ও ব্যানার দেখা গেলেও কল্পনা চাকমার ব্যানার ও পোষ্টার কোথাও দেখা যায়নি। চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে প্রগতি চাকমা ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রণতি রঞ্জন খীসা বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন।


ইউপিডিএফ সমর্থিত বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রণতি রঞ্জন খীসা জানান, আমার নির্বাচনী প্রচারণা ভালো। সব জায়গায় আমার নির্বাচনী পোষ্টার রয়েছে। তবে পোষ্টার কিছু কিছু জায়গায় নেই। এই নির্বাচনটি যেহেতু স্বল্প মেয়াদী তাই কোন রকম সমস্যা হবে না। আস্তে আস্তে সব জায়গায় প্রচারণা চালানো হবে।

আমি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করছি দাবি করে তিনি বলেন, আমি জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত।  জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে এতে আমি ১০০% নিশ্চিত। যদি নির্বাচনটি অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ হয় তাহলে আমি জয়যুক্ত হবো।

নির্বাচটি স্বল্প মেয়াদী, কয়দিন পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই কেউ তেমন মাথা গামাচ্ছে না। আমি যেহেতু নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করছি । জাতীয় দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়নি। তাই তারা যেকোন একটি প্রার্থীকে সমর্থন দিবে এটাই স্বাভাবিক। আওয়ামীলীগ, বিএনপি, আঞ্চলিক দল যে দলই হোক না কেন তারা কাউকে না কাউকে সমর্থন দিবে। এটা আমি কামনা করি। বিভিন্ন দল যদি আমাকে সমর্থন দেয় তাহলে আমি জয়যুক্ত হবো এবং কাজ জনগনের জন্য কাজ করবো।
আমি প্রার্থী হিসেবে বলবো যদি পরিবেশ ভালো হয়, তাহলে জনগণ ভোট দিতে আসবে। আর যদি পরিবেশ ভালো না হয়, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক থাকবে,  ভোট দিতে আসবে না। আমি যতটুকু মনে করি নির্বাচনে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নাই, যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমার বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী অফিস রয়েছে তবে নিরাপত্তার কারনে সদরে এখনো অফিস করতে পারেনি। দেওয়া হয়নি। আমি প্রচার প্রচারণায় না গেলেও, আমার বন্ধু-বান্ধব, আতœীয় স্বজনরা, গণ্যমান্য বক্তিবর্গরা প্রচারণা চালাচ্ছে। পরিস্থিতির  কারণে আমি নিজে নির্বাচনী প্রচারণায় যাচ্ছি না।

জনসংহতি সমিতি সংস্কারের নেতা ও ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা জানান, তিনি বিজয়ের ব্যাপারে আশি ভাগ আশাবাদী। পাহাড়ীরা ছাড়াও ইসলাপমপুর, বুড়িরঘাটসহ বাঙালী অধ্যুষিত এলাকার ভোটাররা তাকে ভোট দিবে। পরিস্থিতির কারণে সদরে অবস্থিত তার নির্বাচনী অফিসে বসে মোবাইলে এবং আত্বীয় স্বজনের মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, নানিয়াচর উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা সদরে নিহত হওয়ার ঘটনায় জনগনের মাঝে ভয় ও আতংক আছে তবুও আমি আশাবাদী জনগন ভোট দিবে।
তিনি আরো বলেন, ১৪টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে বাঙালী এলাকার কেন্দ্রগুলো বাদে সব ঝুকিপুর্ণ, প্রশাসনের কাছে আবেদন থাকবে তারা যেন ঝুকিপুর্ণ কেন্দ্রের ব্যাপারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানা গেছে, নানিয়াচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনে মোট ভোটার ৩২,৮৫৪জন, এর মধ্যে পুরুষ ১৭০০৮জন এবং নারী ১৫৮৪৬জন। মোট ১৪টি কেন্দ্র ৮৩টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ১৪জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৮৩জন সহকারি প্রিজাডিং অফিসার এবং ১৬৬জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০জন পুলিশ, আনসার, বিজিবি সদস্যসহ স্ট্রাইকিং বাহিনী হিসেবে র‌্যাব থাকবে। ভোটারদের নিরাপত্তার কথা  বিবেচনা করে কেন্দ্রের বাইরে এবং বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিবে। এর মধ্যে নানিয়াচরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।