বছরের প্রথমদিনে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল

প্রকাশঃ ০১ জানুয়ারী, ২০২১ ০৭:১৫:৩৮ | আপডেটঃ ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০২:৫০:০৬
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। সরকারি ছুটির অবকাশে নতুন বছরে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার থেকে রাঙামাটিতে বিপুল পর্যটকের আগমণ ঘটছে। শুক্রবার রাঙামাটি সরকারি পর্যটন কমপ্লেক্স, ঝুলন্ত সেতু, জেলা পুলিশের পলওয়েল পার্কসহ আশেপাশের পর্যটন স্পট ও দর্শনীয় স্থানে নামে অসংখ্য পর্যটকের ঢল।

পর্যটকদের পদচারণায় সরব হয়ে উঠেছে রাঙামাটির পরিবেশ ও প্রকৃতি। মুখর হয়ে উঠছে আশেপাশের জনপদ। সবুজ পাহাড় ও হ্রদ পরিবেষ্টিত রাঙামাটির নৈসর্গিক হাতছানিতে করোনার মধ্যেও সমাগম ঘটছে অগণিত পর্যটকের। সরকারি ছুটির দিনগুলিতে পর্যটন স্পটগুলোতে নামছে পর্যটকের ঢল। তবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। এতে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় স্থানীয়রা।

রাঙামাটি সরকারি পর্যটন স্পটের মনোরম ঝুলন্ত সেতুসহ আশেপাশে একাধিক স্পট গিয়ে দেখা যায়, ভ্রমণকারী বেশিরভাগ পর্যটক সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। বেশিরভাগ লোকজন ঘুরছেন মাস্ক ছাড়াই ঠাসাঠাসি, দলাদলি করে। শুক্রবার দেখা যায়, রাঙামাটি মনোরম ঝুলন্ত সেতু এলাকা পর্যটকে ঠাসা। অগণিত পর্যটকের পদচারণায় মুখর গোটা পর্যটন এলাকা। সেতুর ওপাড়ে বসানো হয়েছে বিভিন্ন জিনিষের বেচাবিক্রির পসরা। আশেপাশে অসংখ্য পর্যটকের ভির। এসব পর্যটকের আগমণ ঘটছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। অনেকের স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই যেন। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে।

সরকারি পর্যটন স্পট ছাড়াও জেলা পুলিশের পলওয়েল পার্ক, শহরের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্পট, দর্শণীয় স্থানসহ কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণ এবং সুবলং ঝরনা পর্যন্ত ভির জমছে প্রচুর পর্যটকের। সরকারি পর্যটন মোটেল ছাড়াও শহরের প্রায় আবাসিক হোটেল পর্যটকে ঠাসা। শতভাগ বুকিং প্রায় আবাসিক হোটেল মোটেলর কক্ষ।

রাঙামাটি সরকারি পর্যটন মোটেল অ্যান্ড হলিডে কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতুর প্রবেশ দ্বারে টিকিট কাউন্টারে কর্তব্যরতরা জানান, সরকারি ছুটির দিনে পর্যটকের আগমণ বাড়ছে। তা ছাড়া বর্তমানে পর্যটনের ভর মৌসুম। ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ শতাধিক টিকিট বিক্রি হয়েছে। টিকিটের প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। আবাসিক মোটেলেও শতভাগ কক্ষ বুকিং।   

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, করোনার বন্ধকালীন আমাদের কষ্ট হয়েছে। অনেককে ছুটিতে পাঠাতে হয়েছে। এরপরও আমরা পর্যটনটাকে রক্ষণাবেক্ষণ করে ঠিক রেখেছি। বর্তমানে পরিবেশ স্বাভাবিক হচ্ছে। তাই সরকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার পর মৌসুম শুরু থেকেই রাঙামাটিতে যথেষ্ট পর্যটকের আগমণ ঘটছে। বিশেষ করে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকের আগমণ বাড়ছে। রাজস্ব আয় মোটামুটি ভালো। গত মাসে এ পর্যটন স্পটে ৫ লাখ টাকার অধিক রাজস্ব আয় হয়েছে। মোটেলে শতভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে। এখন পর্যটকের আগমণে এখানকার পর্যটনশিল্পে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। শুক্র-শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে মুখর হয়ে উঠছে রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

সরকারি নির্দেশনার স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্যতামূলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মাস্ক ছাড়া কাউকে স্পটে প্রবেশে টিকিট দিচ্ছি না। ভেতরে গিয়ে যদি কেউ মাস্ক খুলে ফেলে, তাতে আমাদের করার কিছুই নেই। ভেতরে উন্মুক্ত। তা ছাড়া আমাদের জনবল কম।  
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সেপ্টেম্বরেই রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেন জেলা প্রশাসক। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই জেলার পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। পর্যটন স্পটে যারা ঘুরতে যাবেন, তাদেরকে অবশ্যই সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সংশ্লিষ্ট পর্যটন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো স্পটে যদি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলে, তা যাচাই সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রাঙামাটিতে সরকারি পর্যটন কমপ্লেক্সসহ রয়েছে অনেকগুলো স্পট ও দর্শণীয় স্থান। এসব পর্যটন স্পটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগমণ ঘটে প্রচুর পর্যটকের। এ বছর করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এতে লোকসান গেছে অন্তত ২৫ কোটি টাকা। এখন স্বাভাবিক হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। তাই নৈসর্গিক রাঙামাটি পর্যটনের দিকে উঁকি দিচ্ছেন ভ্রমণপিপাসু লোকজন। সাড়া মিলছে বিপুল পর্যটকের। পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলো। পর্যটকরা যাচ্ছেন সাজেক পর্যন্ত।