প্রকাশঃ ২১ জুনe, ২০১৮ ০৯:৪০:১৫
| আপডেটঃ ২২ নভেম্বর, ২০২৪ ০৪:০৫:২১
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি শহরের প্রধান আকর্ষন হলো ঝুলন্ত সেতু। সাধারণত রাঙামাটি এসে এই ঝুলন্ত সেতুটি না দেখে কেউ ফেরত যায় না। রাঙামাটি শহরের শেষপ্রান্তে কাপ্তাই লেকের একাংশে ৩৩৫ ফুট লম্বা এই ব্রিজটি পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্পট।
প্রতি বছর রাঙামাটিতে ঈদকে ঘিরে পর্যটন ঝুলন্ত ব্রিজ, সুবলং ঝর্ণা, বন বিহার, রাজবাড়ি, আরণ্যক হ্যাপি আইল্যান্ড, বড়গাঙসহ নানা বিনোদন স্পটগুলোতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে। এবার ঈদকে ঘিরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর তেমন ছিলো না। তবে স্থানীয়দের পদচারণায় রাঙামাটির প্রত্যেকটি বিনোদন স্পটগুলো মুখর ছিল।
স্বাভাবিকভাবে প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে রাঙামাটিতে হাজারো পর্যটকের ভিড় থাকে। পর্যটকের পদচারণায় ঝুলন্ত ব্রিজের কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সেতুটি পর্যটকদের পারাপারের সময় সৃষ্ট কাঁপুনি যেন এনে দিয়েছে এক ভিন্ন দ্যোতনা। দুর-দুরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের মাঝে যেন আনন্দের কমতি থাকে না।
আসন্ন ঈদে ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের আনাগোনা বাড়বে রাঙামাটির দর্শনীয় স্থানগুলোতে। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে চাঙ্গা হয়ে উঠবে পাহাড়ের অর্থনীতিও। এবার তারা আশাবাদী ঈদকে ঘিরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভুমি রাঙামাটিতে বেড়ানোর জন্য অনেকে ছুটে আসবেন দূর দুরান্ত থেকে হাজারো পর্যটক। কিন্তু ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়েছেন।
কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন- বর্ষা, পাহাড় ধ্বসের আতঙ্ক, যোগাযোগের কিছুটা ঘাটতিসহ নানা কারণে পর্যটকের তেমন দেখে মেলেনি রাঙামাটিতে।
রাঙামাটিতে এবার ঈদকে ঘিরে হোটেল-মোটেল ও বোট ব্যবসায়ীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তারা জানিয়েছিলেন, প্রতি বছররের মত পর্যটকদের বরণ করে নিতে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু তারপরেরও হতাশ হতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
রাঙামাটি পর্যটনের বোট ব্যবসায়ী মোঃ আল্লাউদ্দিন টুটুল বলেছেন, বোটের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে ও ঝুকি কমাতে আমরা পুরোনো বোটগুলোকে মেরামত ও রঙের কাজ করেছি। এবারের ঈদে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকদের সমাগম হবে রাঙামাটিতে। এ বছর পুরোপুরি ভাবে পাহাড় ধ্বসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবো। এসব আমরা ধারণা করেছিলাম। কিন্তু এবার ঈদের রাঙামাটিতে পর্যটকের তেমন দেখা মেলেনি। দুর-দুরান্তের পর্যটকের চেয়ে স্থানীয় পর্যটকের পদচারণায় মুখ ছিল পর্যটন স্পটগুলো। তারপরেরও ঈদের মৌসুমে আমাদের বোট ব্যবসাদের লাভ না হলেও লোকসান হবে না।
হোটেল মতি মহলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজম জানান, ঈদের মৌসুমে পর্যটকের আগমন বেশ বড় আকারে সাড়া পাবো বলে আমরা ধারণা করেছি। সেই ধারণাকে সামনে রেখে আমরা হোটেলে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির কাজ ও ডিসকাউন্ট রেখেছি। আশানুরুপ পর্যটকের দেখা না পেলেও আমাদের হোটেলে তেমন প্রভাব পড়েনি। আমরা মোটামুটি পর্যটকের দেখা পেয়েছি। তবে তিনি পর্যটন স্পটগুলোতে প্রশাসনসহ পর্যটন বিকাশের দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।
তবে তিনি হোটেল মালিকের পক্ষ থেকে আরো বলেন, রাঙামাটিতে পর্যটন স্পটগুলোতে আরো সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি, বাড়তি সুযোগ-সুবিধাসহ পর্যটন স্পট আরা বৃদ্ধি করলে পর্যটকের আগমন আরো বাড়বে। তাই তিনি প্রশাসনকে পর্যটনের এসব খাতে নজর দেওয়া তাগিদ দেন।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়–য়া সিএইচটি টুডে ডট কম কে জানান, ঈদে ধারণা করেছিলাম আমরা প্রচুর পরিমাণে পর্যটক রাঙমাটিতে পাবো। কিন্তু তা হয়নি, তবে খারাপও হয়নি। আমাদের হোটেল-মোটেল মোটামুটি বুকিং হয়েছে। সব মিলিয়ে মোটামুটি আমরা পর্যটকের সাড়া পেয়েছি. তবে তা স্থানীয় বেশি। অতীতের লোকসান কাটিয়ে একটু আলোর মুখ দেখতে না পারলেও আমাদের এবার তেমন লোকসান হবে না।