কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে

প্রকাশঃ ০৮ জুনe, ২০২০ ০৩:৫০:২৩ | আপডেটঃ ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ০৬:১৬:১৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সদর উপজেলায় ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ ২ প্রকল্পের আওতায় চলতি মৌসুমে বান্দরবান সদর উপজেলায় ৩শ ৬০হেক্টর এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ২শ ৮০ হেক্টর নিরাপদ সবজির আবাদ হয়েছে। ২০১৭ সালে এনএটিপি প্রকল্পের মাধ্যমে সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৫০টি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ৪০টি সিআইজি কৃষক সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে, যা সমবায় অফিস কর্তৃক নিবন্ধনকৃত। প্রতিটি সমিতির সদস্য সংখ্যা ৩০ জন। এর মধ্যে ৩৫% মহিলা। সদস্যদের বিভিন্ন প্রযুক্তির উপর প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী প্রদান করা হয় কৃষি বিভাগ থেকে।

চলতি মৌসুমে বান্দরবান সদর উপজেলার চেমি ডলুপাড়া,রেইচা, সুয়ালক এলাকায় বেগুনের প্রধান ক্ষতিকারক পোকা ফল ও ডগা ছিদ্রকারী পোকা এবং কুমড়াজাতীয় সবজির মাছি পোকা দমনের জন্য সেক্স ফেরোমন ফাঁদ,হলুদ আঠালো ফাঁদ প্রযুক্তির প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। তাছাড়া উদ্ভুদ্ধকরণের মাধ্যমে ১ হাজার হলুদ আটালো ফাঁদ এবং ৫শ সেক্স ফেরোমন ফাঁদ কৃষকদের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। এসব প্রযুক্তিগুলো পরিবেশ বান্ধব এবং কীটনাশকের চেয়ে দামে ও অনেক সস্তা ও টেকসই ফলে কৃষকেরর উৎপাদন খরচও কম হয়। তাদের উৎপাদিত ফসল নিরাপদ হওয়ায় চাহিদাও রয়েছে বেশি। বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎপাদিত নিরাপদ সবজি বান্দরবান বাজারে প্রাকৃতিক খাদ্য ভান্ডারসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে, বেপারীরাও বেশি দামে ক্রয় করছে।

 এদিকে সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নে আমতলী পাড়ার কৃষক উথোয়া প্রু মার্মা জানান, বান্দরবান কৃষি অফিস হতে প্রশিক্ষণ ও নিরাপদ সবজি উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণ ও প্রযুক্তি নিয়ে তিনি এবার বেগুনের চাষ করেছেন। স্থানীয় ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা খুরশিদা বেগমের তত্বাবধানে তিনি বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ করেছেন, যে বেগুন রোজার আগে কেজি ৫ টাকা সে বেগুন তিনি কেজি ৪৫ টাকা করে বিক্রি করেছেন,এই পর্যন্ত আশি হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছে এবং বর্তমানে ক্ষেতে অনেক বেগুন আছে এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম ও কমে গেছে মনে করেন এই কৃষক।

 বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ওমর ফারুক বলেন,চলতি মৌসুমে সদর উপজেলায় ৩শ ৬০ হেক্টর সবজির আবাদ হয়েছে। সবজির মধ্যে বেগুন করলা,ঢেঁড়স,বরবটি ঝিংগা উল্লেখ যোগ্য। সবজিতে পোকামাকড় দমনের জন্য কৃষক সঠিক সময়ে বালাই ব্যবস্থাপনা না নিলে পোকামাকড়ের আক্রমণে অধিকাংশ সবজি নষ্ট হয়ে যায়,অনেক সময় ফসলকর্তনোত্তর ক্ষতিও বেশি হয়। অনেক সময় কীটনাশক ক্রয়েও কৃষকের অনেক টাকা গুনতে হয় ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়,তবে কৃষকদেরকে বিভিন্ন প্রযুক্তির উপর প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী দেওয়া হয়ে থাকে কৃষি বিভাগ থেকে, আর এসব প্রশিক্ষনের ভালো ফলন উৎপাদন করতে পারে কৃষকেরা। এসব উৎপাদিত নিরাপদ সবজি বান্দরবান বাজারে প্রাকৃতিক খাদ্য ভান্ডারসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। ব্যাপারীরা ও বেশি দামে ক্রয় করেন, তবে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে পোকামুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. একেএম নাজমুল হক বলেন,বান্দরবান সদর ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মোট ৯০টি সিআইজি কৃষক সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে। এনএটিপি প্রকল্পের মাধ্যমে সমিতির সদস্যদেরকে নিরাপদ সবজি উৎপাদন পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি এবং কৃষকদের মধ্যে নেতৃত্ব গুণাবলী বিষয়ক প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা এবং তাদের মাধ্যমে সমিতির বর্হিভুত কৃষকরা যেন উদ্ভুদ্ধ হয়।