ঘরোয়া পরিবেশে ইফতারি তৈরি করে রোজা পালন করছেন রোজাদাররা

প্রকাশঃ ১৮ মে, ২০২০ ১১:৫৬:৩৬ | আপডেটঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪ ০২:৫৫:৫১
কৌশিক দাশ, সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। করোনার প্রভাবে এবার পার্বত্য জেলা বান্দরবানের ইফতার সংস্কৃতিতে এসেছে ব্যাঁপক পরিবর্তন। পুরো জেলায় অঘোষিত লকডাউনে থাকায় কোথাও চোখে পড়েনি কোন ইফতারের বাজার, ফলে ঘরে তৈরি খাবার দিয়েই ইফতার সারছেন রোজাদাররা, এতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি পরিবারের সবাই একসাথে বসে ইফতার করায় নিবিড় হচ্ছে পারিবারিক বন্ধন।

করোনার কারণে এবার পার্বত্য জেলা বান্দরবানের কোথাও ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসেনি কেউ। গত বছর এসময়টায় দুপুর হতেই বাজারগুলোতে দেখা মিলতো বাহারি রকমের ইফতার। চনা পিঁয়াজু বেগুনীর পাশাপাশি মৌসুমি ফলে ভরে গিয়েছিল জেলা সদরের মার্র্কেটগুলো ।
বান্দরবানের চড়–ইভাতি রেস্টুরেন্টের স্বতাধিকারী মো:রফিকুল আলম মামুন বলেন,গত বছর রোজার এই সময়টা আমরা বান্দরবানে ভালো মানের বেশ কিছু ইফতার বিক্রি করেছিলাম। সাধারণ চনা,পিঁয়াজুর পাশাপাশি পিঠা,হালিম ও নানান রকমের ফল ফলাদির জুস আমরা বিক্রি করেছিলাম, কিন্তু এবার লকডাউনের কারণে হোটেল মোটেল বন্ধ রাখায় বাজারে কোথাও ইফতারি বিক্রি করছে না।

এবার রমজান মাসে বান্দরবানের ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে, বন্ধ রয়েছে সকল হোটেল-রোস্তেরা আর তাই ঘরে তৈরি ছোলা,পেয়াঁজু, চপ,বেগুনী ,হালিম ,জিলাপীসহ নানা সুস্বাদু খাবার দিয়েই ইফতার সারছেন রোজাদাররা। লকডাউনোর কারণে সবদিকে বন্ধ থাকায় পরিবারের সবাই মিলে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার তৈরিতে। লকডাউনের একঘেয়েমি কাটাতে ইফতার তৈরীতে কোন না কোন ভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা,এতে সময়ের সুষ্ঠ ব্যবহারের পাশাপাশি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার খেতে পেরে খুশি রোজাদাররা।


বান্দরবানের ৪নং ওয়ার্ডের ফায়ার সার্ভিস এলাকার বাসিন্দা মো:শাহাদাৎউর রহমান বলেন, প্রতিবছর আমরা রমজান মাস জুড়ে বিভিন্নস্থানে ইফতার করে থাকি। নিজের বাসার পাশাপাশি প্রতিবছরই আত্মীয়,বন্ধুবান্ধব ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা ইফতার করে থাকতাম কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা বাসার বাইরে যাচ্ছি না। সারদিন বাসায় অবস্থান করছি আর ইফতারের সময়টা পরিবারের সংগে যোগ দিয়ে নানা মুখরোচখ ইফতার বানিয়ে পরিবারের সবাই একসাথে রোজা সারছি।

মো:শাহাদাৎউর রহমান আরো বলেন, বাজারের খোলাস্থান থেকে ইফতার না আনায় এখন আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি পরিবারের সবাই একসাথে বসে ইফতার করায় নিবিড় হচ্ছে আমাদের পারিবারিক বন্ধন।

হাফেজঘোনা এলাকার বাসিন্দা রাহিমা বেগম বলেন,আমরা বাইরের খাওয়া খেতে খেতে অভ্যস্ত। রমজান মাসে অনেক সময় বাইরের খাওয়া খেয়ে আমরা অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়ি,অস্বাস্থ্যকর খাবার এনে আমরা পরিবারের সবাই খেতাম এতে পেট ব্যাথাসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ও এবারে ঘরোয়া পরিবেশে ইফতার তৈরি করে খাচ্ছি এতে আমরা অনেকটাই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জীবনযাপন করছি।




বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা:অং সুই প্রু মারমা বলেন, রমজান মাসে আমরা প্রায় সময়ই বিভিন্ন রোগী পেতাম যাদের পেট ব্যাথা, বমিসহ বিভিন্ন রোগ দেখা যেত। কিন্তু এবারে করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে রোজাদাররা নিজ নিজ পরিবারে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ইফতার ও সেহেরি খাচ্ছে আর তাই স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার করায় অনেক রোগবালাই কম হচ্ছে।