ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌছিয়ে দিচ্ছেন ডিসি ও এসপি , সবাইকে বাসায় রাখতে মাঠে সেনাবাহিনী

প্রকাশঃ ০৪ এপ্রিল, ২০২০ ০৪:২১:৩৩ | আপডেটঃ ০২ মে, ২০২৪ ০১:২৯:০৬
এম.কামাল উদ্দিন,সিএইচটি টুডে ডট কম,রাঙামাটি। ঘরে বসে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ফোন দিলেই ত্রাণ সামগ্রী পৌছে যাবে নিজ নিজ ঘরে। এদিকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে বাসায় রাখতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

শুক্রবার সন্ধা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, হোম কোয়ারেন্টাইনে ৬৭জন রয়েছে এবং হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে অবমুক্ত হয়েছেন ১১০জন। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে গোটা জেলায় কোন করোনা আক্রান্ত রোগী নাই, তবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট সচেতন রয়েছে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে গোটা জেলা জুড়ে। যথেষ্ট তৎপর রয়েছেন জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন ও সেনা বাহিনী।

প্রতিদিন সকাল থেকে জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে জনসাধারণকে বাসা রাখতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে জেলা শহরে ৪-৫টি টীম কাজ করছে। প্রতিটি টীমে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নেতৃত্ব দেন। সাথে রয়েছে রিজিয়নের সেনাবাহিনী ও জেলা পুলিশ।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পাবলিককে সচেতন করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে মাইকিং করে বলছে যেন কেউ বিনা প্রয়োজনের  ঘর থেকে বের না হয়। কিন্ত পাবলিক এতই যে নির্বোধ সেনাবাহিনীর কথাও মানছে না, সেনাহিনী চলে গেলে তারা আবার রাস্তায় চলে আসে। প্রশাসন দিন রাত শহরের অলি-গলিতে করোনা প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে মাইকিং করছে কিন্তু উঠতি বয়সের ছেলেরা আইন অমান্য করে চলছে।

জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন,করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রথম থেকেই প্রশাসন সবাইকে নিয়ে দফায় দফায় সভা করে  সর্বশেষ জনগণকে আরো সচেতন করতে সেনাবাহিনী মাঠে নামানো হয়েছে। প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ৪-৫জন ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

গত এক সপ্তাহ ধরে শহর ও শহরের বাহিরে নিত্যপ্রয়োজনী ছাড়া সকল দোকান পাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যানবাহন তো বন্ধই আছে। জনগণকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অন্য দিকে পুলিশও ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পৌছিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, রাতের আধাঁরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমি নিজেই ত্রাণ পৌছিয়ে দিচ্ছি। করোনা প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে যা যা করণীয় তাই করছি। আমরা বলছি জনগণ ঘরে থাকবে ত্রাণ পৌছিয়ে দেবে প্রশাসন।

পুলিশ সুপার আলমগীর কবির বলেন,করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জনগণকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করছে। জনগণকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে ইতিমধ্যে আমার নাম্বার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নাম্বার জনস্বার্থে ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে। জনগণের ফোন পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশের পক্ষ হতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা বলছি আপনারা ঘরে থাকবেন প্রয়োজনে ত্রাণ পৌছিয়ে দেবে পুলিশ।




পুলিশ প্রশাসন এর পক্ষ হতে অত্র জেলায় প্রায় ১২ পুলিশ করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে। সরকারের সকল আদেশ পালনে বদ্ধ পরিকর পুলিশ।

এব্যাপারে গিরিদর্পনের সম্পাদক ও তিন পার্বত্য জেলার প্রবীণ সাংবাদিক  একেএম মকছুদ আহম্মদ বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং জনগণকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে জেলা শহরে প্রশাসন সথেষ্ট তৎপর দেখা যাচ্ছে। আমি বলবো জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন আরো একটু কঠোর হতে হবে। প্রশাসনের এই চেষ্টাকে অবহেলা করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই এলাকার মানুষ। এটা একটা মরণঘাতি ভাইরাস তাই কোভিড-১৯ ভাইরাসটিকে কোন ভাবেই অবহেলা করার সুযোগ নাই। তাই সবাইকে আরো বেশী বেশী সচেতন হতে হবে।