প্রকাশঃ ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ০৪:৫৬:৩১
| আপডেটঃ ২১ নভেম্বর, ২০২৪ ০৩:২৮:৩১
ষ্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর সাথে রাঙামাটি জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যালয় থেকে স্কাইপি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, বৈঠকে মার্চ মাসে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও এপ্রিলের ২০ তারিখের মধ্যে জেলা বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। স্কাইপি বৈঠকে রাঙামাটি উপজেলা ও পৌর বিএনপির ১২টি ইউনিটের সভাপতি ও সম্পাদকগন উপস্থিত ছিলেন।
স্কাইপি বৈঠকের পর স্থানীয় নেতাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, রাঙামাটি জেলা বিএনপির একটি অংশকে বাদ দিয়ে তারেক রহমান এই স্কাইপি বৈঠক করেন। বৈঠকে জেলার কাউন্সিলের বিষয়ে সিদ্ধান্তে অপমানবোধ করছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান।
ওয়ান ইলেভেনের সময় চাঁদপুর জেলা যুগ্ম জজের চলতি দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে রাঙামাটি ফিরে বিএনপিতে যোগ দেন অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান। দলে যোগ দিয়ে তৃণমূল নেতাদের সুসংগঠিত করেছেন। সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন, বর্তমানে দলের কেন্দ্রীয় সহ ধর্মবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তার মতো একজন নেতার মতামত না নিয়ে জেলা বিএনপি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। হতাশাও প্রকাশ করেছেন।
দীপেন দেওয়ান বুধবার নয়াপল্টনে প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দফতরের দায়িত্বে থাকা রিজভী আহমেদের সাথে দেখা করে দলীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ চেয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, যেভাবে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে এটা আমাদের জন্য অপমানজনক। এ সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে আমার আর এ দল করা হবে না, আমিসহ জেলার আরও অনেক নেতাকর্মীও পদত্যাগ করতে বাধ্য হবো। তারা আশা করছেন সিদ্ধান্ত পুর্ন বিবেচনা করে দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক জেলার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির এই নেতা জানান, ২০০৭ সনে তারেক রহমানের নির্দেশে ও অনুরোধে আমি সরকারি চাকুরি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেই, এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, দলের দুদির্নে দলের সাথে থেকে রাজনীতি করে আসছি, আমি কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলার সাবেক সভাপতি স্কাইপিতে আমার অংশগ্রহণ থাকার কথা কিন্তু একটি মহল আমাকে না জানিয়ে ষড়যন্ত্র মুলক মিথ্যা তথ্য দিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠক করে।
দল ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দীপেন দেওয়ান বলেন, দলের সিনিয় যুগ্ন মহাসচিব ও দফতরের দায়িত্বে থাকা রিজভী ভাইয়ের সাথে দেখা করেছি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। উনি আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের কথা বলিয়ে দেবেন। আমি আশা করি তাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বললে তিনি বুঝবেন। তিনি হয়তো কিছুটা অন্ধকারে আছেন, তাই কথা বলতে চেয়েছি।
আর যদি এভাবে চলতে থাকে., দল যদি আমাদের গুরুত্ব না দেয় তাহলে দল করার বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহ আলম বলেন, তারেক রহমান রাঙামাটি জেলা, উপজেলা এবং পৌর বিএনপির সভাপতি, সাধারন সম্পাদকদের সাথে স্কাইপিতে বৈঠক করেছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা রাখার সুযোগ নেই, কারন উনি তো কেন্দ্রীয় নেতা কেন্দ্রে থাকবেন।
হাজী শাহ আলম আরো জানান, ২০১৫ সনে জেলা কাউন্সিল হলেও ২০১৬ সনে অনুমোদন পায়, আমাদের কমিটির মেয়াদ এক বছর আগেই শেষ হয়। কাউন্সিল সম্পন্ন করতেই আমরা তারেক রহমানের সাথে স্কাইপি বৈঠক করি। কাল শুক্রবার রাতে জেলা বিএনপির বৈঠকে উপজেলাগুলোর সম্ভাব্য কাউন্সিলের তারিখ চুড়ান্ত হবে। এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত: ২০০৭ সনে দীপেন দেওয়ান বিএনপিতে যোগ দেয়ার পর ২০০৯ সনে সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন দীপেন দেওয়ান, সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন হাজী শাহ আলম। ২০১৫ সনের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল থেকে নিজের সমর্থকদের নিয়ে বের হয়ে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবিতে নির্বাচন বর্জন করেন দীপেন দেওয়ান। ওই কমিটিতে সভাপতি হাজী শাহ আলম ও সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন দীপন তালুকদার দীপু। ২০১৫ সনে কমিটি গঠনের পর থেকে বিএনপির দুই গ্রুপ আলাদাভাবে কর্মসুচী পালন করে আসছে। কেন্দ্র থেকে একই কমিটিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এর পদ দেয়া হয় দীপেন দেওয়ানকে।