রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশঃ ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ০৭:৪৭:৪১ | আপডেটঃ ২৪ মার্চ, ২০২৪ ০২:০২:৫৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। সম্প্রীতি কাপ্তাই হ্রদে মর্মান্তিক বোট দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্নার শান্তি কামনা করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, পর্যটন শহর এ জেলায় আগত পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বোটমালিক ও চালকদের নিয়ে পর্যটন কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে নিয়মিত সভা আয়োজন করা প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, বোটে ভ্রমণকালে পর্যটকদের অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং বসার সীট অনুযায়ী পর্যটক নিয়ে ভ্রমণ করতে হবে। সে জন্য বোট চালকদের ভূমিকা বেশী প্রয়োজন। পর্যটকরা সচেতন হলে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আগামী ১৭ মার্চ সারাদেশের ন্যায় এ জেলাতেও মুজিববর্ষ পালন করা হবে। পরিষদও মুজিববর্ষকে সামনে রেখে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। পরিষদের সকল কার্যক্রমকে সফল করতে তিনি হস্তান্তরিত সকল কর্মকর্তার সহযোগিতা কামনা করেন।       

মঙ্গলবার (১৮ফেব্রুয়ারি) সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে পরিষদ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।  

পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অংসুইপ্রু চৌধুরী, পরিষদের সদস্য ত্রিদীব কান্তি দাশ, পরিষদের সদস্য সাধন মনি চাকমা, পরিষদের সদস্য অমিত চাকমা রাজু, পরিষদের সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, পরিষদের সদস্য সান্তনা চাকমা, পরিষদের সদস্য মনোয়ারা আক্তার জাহান, পরিষদের সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, পরিষদের সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা’সহ হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিভিল সার্জন ডা: বিপাশ খীসা বলেন, গাইনী, শিশু ও মহিলা রোগীদের চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে গত ১১ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে জেনারেল হাসপাতালের উর্ধমুখী ভবনের কক্ষ উদ্বোধন করেছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। এর ফলে রোগীরা আরো ভালো সেবা পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে জানান, পিইডিপি-৪ এর আওতায় প্রত্যেকটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে স্যানিটেশন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যা শীঘ্রই সম্পন্ন করা হবে।   

সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিণয় চাকমা জানান, ইতিমধ্যে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শেষে ১২০ জন শিক্ষকের মধ্যে ১০৭জন শিক্ষককে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়েছে। বাকী ১৩জনকে যাচাই বাছাই শেষে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা অদ্যাবধি চলমান রয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে পরিষদ কর্তৃক ৯ম শ্রেণী বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ১২শত জন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্য থেকে মেধাভিত্তিক বাছাই করে ১২০জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হবে। এছাড়া জেলার ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।  

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র বলেন, মৎস্য চাষের মাধ্যমে পার্বত্য জেলায় আতœকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি বড় বাজেটের প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। একনেকে পাস হলে শীঘ্রই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. বরুন কুমার দত্ত বলেন, কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে জেলার প্রতি উপজেলার খামারীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং প্রত্যেক ইউনিয়নের খামারীদের গবাদী পশু ও পাখীদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একজন করে ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অঃদাঃ) মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, আতœকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেকার যুবদের চলতি মাস থেকে যুব উন্নয়নের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।   

জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা স্বপন কিশোর চাকমা জানান, গত জানুয়ারি মাসে নানিয়ারচর উপজেলার সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে মাসব্যাপী  ভলিবল প্রশিক্ষণ প্রদান শেষে প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া কাপ্তাই উপজেলা স্টেডিয়ামে এ মাস থেকে  মাসব্যাপী ফুটবল প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু হয়েছে।  

হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী, বনরুপা, নানিয়ারচর, বালুখালী, লংগদু, আসামবস্তী ও কাপ্তাইয়ের উদ্যান তত্ববিদরা জানান, নার্সারিতে টার্গেট অনুযায়ী মাল্টা, লটকন, আম, লিচু’সহ বিভিন্ন প্রজাতি গাছের চারাকলাম উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয় কার্যক্রম চলছে।

সভায় অন্যান্য হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।