রাঙামাটি থেকে ‘পাহাড়িকা’ ও ‘দ্রতযান’ বাস সার্ভিস বন্ধ

প্রকাশঃ ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ০৩:৩৪:০০ | আপডেটঃ ০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ০৩:০৮:৪৭
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামগামী বাস সার্ভিস ‘পাহাড়িকা’ ও ‘দ্রতযান’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পৌনে বারোটায় শহরের রিজার্ভ বাজারের কাউন্টার থেকে এ বাস সার্ভিস বন্ধ করে রাঙামাটি যাত্রী কল্যাণ সমিতির ব্যানারে স্থানীয়রা। ফলে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিকভাবে বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে পড়ায় দূরপাল্লার যাত্রীরা মারাত্নক দুর্ভোগে পড়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা বলছেন, চট্টগ্রাম মোটর মালিক সমিতির ‘চাঁদাবাজি’ বন্ধ, রাঙামাটি সড়কে ফিটনেস বিহীন গাড়ি সড়িয়ে নেয়া, ভাড়া কমানো ও দিনের বেলায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস চালু ও রাঙামাটি-কক্সবাজার বাসসার্ভিস চালুর দাবীতে তারা ‘পাহাড়িকা’ ও ‘দ্রতযান’ বাসসার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও মোটর মালিক সমিতির নেতাদের ‘রাজি’ করাতে না পারায় তারা এ ব্যবস্থা নিয়েছেন।

অবিলম্বে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে মোটর মালিক সমিতির নামে চাঁদাবাজি বন্ধসহ উন্নত যাত্রীসেবা নিশ্চিতে প্রশাসন পদক্ষেপ না নিলে লাগাতার হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচীর ডাক দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারিরা।
এর আগে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রহমানসহ সংগঠনের নেতারা রাঙামাটিতে একটি বেঠকে যোগ দিতে আসলে তাদেরকে সমিতি অফিসেই দুইঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। পরে এসব দাবি দাওয়া মানার আশ্বাসে তারা ফিরে যান।

যাত্রীদের হয়রানীর করার অভিযোগ করেছেন রাঙামাটি বাজার ব্যবসায়ি সভাপতি আনোয়ার হোসেন বানু। বলেন, ‘দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি বাসমালিক সমিতি অত্যাচার করছে। ফিটনেসহীন গাড়ি দিয়ে ৯০ টাকার ভাড়ায় ১২০ টাকা আদায় করছে। এছাড়া, দিনের বেলায় এসি বাসসার্ভিস চালুর আশ্বাস দিলেও কার্যকর করছেনা  এভাবে চলতে পারে না। তাই আজ থেকে বাসসার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছি’।

চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ইমতিয়াজ সিদ্দিক আসাদ বলেন, ‘ঢাকাগামী প্রতিটি যাত্রীবাহি বাস থেকে ৩৮০ টাকা ও  চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা বাস থেকে ১০০ করে চাঁদাবাজি করছে। নতুন গাড়িও এ সড়কে নামাতে দিচ্ছে না। এজন্য ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে সমিতি। মূলত রাউজান থেকেই এই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এই নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে’।

ত পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিকভাবে বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে পড়ায় দূরপাল্লার যাত্রীরা মারাত্নক দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেক যাত্রীকে অগ্রীম টিকেটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। স্টেশন থেকে এরইমধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পাহাড়িকা ও দ্রুতযান সার্ভিসের বাসও।

পাহাড়িকা কাউন্টারের টিকেট বিক্রেতা বক্কর বলেন, ‘যাত্রীদের আগাম কেনা টিকেটের অর্থ ফেরত দিচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে কোন টিকেট বিক্রি করছি না’।
বশির উল্লাহ(৩০) নামের চট্টগ্রামগামী এক যাত্রী বলেন, ‘আগে জানলে কাউন্টারে আসতাম না। এখন বাস না পেলে সিএনজি করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে চট্টগ্রাম যেতে হবে। এতে সময় ও ভাড়া বেশি লাগবে। ভোগান্তি বাড়বে’।
চট্টগ্রাম-রাঙামাটি বাস মালিক সমিতির রাঙামাটি সভাপতি মঈনুদ্দিন সেলিম বলেন, ‘চট্টগ্রামগামী দুটি বাস সার্ভিসই বন্ধ আছে। চট্টগ্রামের সমিতির নেতাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি’।