প্রকাশঃ ১৭ জানুয়ারী, ২০২০ ০৫:৪৯:১৯
| আপডেটঃ ২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১১:৩৮:৪১
বিশেষ প্রতিনিধি , রাঙামাটি। দেশী-বিদেী পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের লীলাভূমি পাহাড়ী কন্যা পর্যটন শহর রাঙামাটি। ১০টি উপজেলা নিয়ে গঠিত রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বিশাল অংশ জুড়েই রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম লেক কাপ্তাই হ্রদ।
এছাড়া রাঙামাটির শহর সংলগ্ন দর্শনীয় ফুরোমন পাহাড়, পাহাড়ের মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালীসহ অনেক দর্শনীয় স্থান থাকলে ও বিভিন্ন সমস্যার কারনে সফলভাবে এগুচ্ছেনা রাঙামাটির পর্যটন শিল্প। শীতের শুরু থেকে বছরের ৫ মাস পর্যটন ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের ব্যবসা ভালো চললে ও বছরের বাকী ৭মাস অনেকটা অলস সময় কাটাতে হয় বলে জানালেন পর্যটন ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা।
পাহাড়ে পর্যটন সেক্টরের উন্নয়নসহ এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন বলে মনে করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, এখানে পৌরসভা, জেলা পরিষদ,জেলা প্রশাসন এবং পর্যটন কর্পোরেশন রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যদি এখানে সমন্বিতভাবে কাজ করি একদিকে এ রাঙামাটি শহরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষনীয় করার মতো এখানে অনেক কিছুই করা সম্ভব। এখন প্রয়োজন এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে সকলকে এক জায়গায় এসে সমন্বিতভাবে কাজ করা।
তবে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করার পর রাঙামাটি পুলিশ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন পর্যটন এলাকা পলওয়ে পার্কের ব্যাপক উন্নয়ন করে সকলের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। পর্যটন শিল্পে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকার বিষয়ে রাঙামাটি পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবীর বলেন, রাঙামাটি সারা দেশের পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ এলাকা। তিনি বলেন, এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে এখানে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, রাঙামাটিতে পর্যটকেরা সব সময় আসতে পারেন, কিন্তু তারপরেও দেখা বছরের সবসময় এখানে পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য আসে না।
তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটিকে সবচেয়ে আকর্ষনীয় লাগলে ও অনেক সময় দেখা যায় বর্ষা মৌসুমে অনেক সময় পাহাড় ধসসহ বিভিন্ন কথা বলে পর্যটকদের অনাগ্রহী করে তোলা হয়। এজন্য তিনি এসব বিষয় নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়ানো বন্ধ করাসহ মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর মধ্য দিয়ে পর্যটন শহর রাঙামাটিকে দেশ বিদেশের মানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্য সকলকে আহবান জানান।
বছরের বেশীরভাগ সময়ই পর্যটন ব্যবসা মন্দার বিষয়টি স্বীকার করে রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, ৫মাস ব্যবসা করে বাকী ৭ মাস কম ব্যবসা করে পর্যটনকে এগিয়ে নেয়া খুবই মুশকিল, এ অবস্থার উত্তোরন করতে হবে। রাঙামাটি পর্যটনে যেসব রাইডের প্রয়োজন সেসব রাইডগুলোসহ শিশুবিনোদন কোন রাইড আমরা এখনো আমরা গড়ে তুলতে পারিনি, পর্যটনে যেসব দালান আছে সেসবের পাশাপাশি পর্যটক বান্ধব নিরিবিলি নৈশর্গিক পরিবেশ গড়ে তোলা খুবই জরুরী তা গড়ে তুলতে পারলে এখানকার পর্যটন শিল্প অনেকটাই এগুবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
তবে সরকারীভাবে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন থাকা পর্যটন কমপ্লেক্সের নতুন কিছু ভবব নির্মাণসহ সেই পুরোনো ব্রীজটি থাকলে ও পর্যটন এলাকায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করা হয়নি। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের এলাকার বিশাল এলাকাজুড়ে পরিকল্পিতভাবে পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে উদ্যোগ নিতে পারলে এ শিল্পে আমুল একটি পরিবর্তন আসবে বলে জানাচ্ছেন এলাকার সচেতন মহল।
এ বিষয়ে পর্যটন এলাকায় থাকা রাঙামাটি টুরিষ্ট বোট-মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ রমজান আলী বলেন, পর্যটন এলাকায় আগত পর্যটকদের নির্বিঘ্নে চলাচল করতে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিষ্ট পুলিশ সর্বাত্মভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। তবে বছরের মাত্র কয়েকটি মাস তাদের ব্যবসা ভালো হলে ও বেশীরভাগ সময়ই এর সংশ্লিষ্টদের বেকার থাকতে হয় বলে জানান তিনি। এজন্য এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে দ্রুত এখানে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরুর আহবান জানান তিনি।
বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন না হলে ও রাঙামাটিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটন খাতে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়ন করা হয়েছে। এসব স্থানেই মূলত পর্যটকদের বেশী ভিড়।
রাঙামাটিতে পর্যটনের প্রত্যাশিত উন্নয়ন না হওয়া এবং রাঙামাটির সরকারী বিভিন্ন সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারনে বছরের ৫টি মাস রাঙামাটিতে পর্যটকদের আগমন থাকলে ও বাকী ৭টি মাস অনেকটাই বসে বসে দিন কাটান এর সাথে সংশ্লিষ্টরা। সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে পাহাড়ে পর্যটন শিল্প এগিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।