খাগড়াছড়ির আওয়ামীলীগের রাজনীতির বর্তমান ও সাবেক কর্মীদের জীবদ্দশা : প্রদীপ চৌধুরী

প্রকাশঃ ২০ মে, ২০১৮ ০৩:০১:৫২ | আপডেটঃ ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৯:৪১:০৮
কালিন্দী রানী চাকমা; খাগড়াছড়ির আওয়ামীলীগ রাজনীতিতে সবচেয়ে বয়েসী নারী। বলা চলে খাগড়াছড়ির চাকমা সমাজে জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর আগে কেউ মিছিলে শামিল হননি। এখন তাঁর অবস্থা কেমন, এটি অনেকের অজানা। রামগড়ের প্রয়াত সুলতান আহম্মেদ। আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। নিজের মূল্যবান জমিটুকু দলের জন্য দান করেছেন। তাঁর উত্তরসূরীদের পরিণতি অনেকের জানা আছে। এই দুই প্রজম্মের দুই রাজনীতিকের ভাগ্যটা ভালো যে, তাঁদের জীবনের চাওয়া-পাওয়া কম।
দীঘিনালার প্রয়াত ফণী ভূষণ বৈদ্য, পানছড়ির রাজ কুমার সাহা এবং মহালছড়ির ইদ্রিস সওদাগর; এঁরা এই তিন উপজেলায় আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন স্তম্ভ। বলা চলে স্বাধীনতা বিরোধী প্রভাবিত এলাকায় মুক্তির আলো। এর আগে মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সকারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রয়াত বরেন ত্রিপুরা’র সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা, দীঘিনালার বাবুছড়ার প্রয়াত পীয়ুষ চাকমা’র সন্তান (সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) জ্ঞানেন্দ্রিয় চাকমা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়কালে প্রয়াত মং রাজা মং প্রু সেইন এবং শিক্ষাবিদ অনন্ত বিহারী খীসা; বাকশাল’র নেতৃত্বে ছিলেন। সে সময়ে নানা বাস্তবতায় খাগড়াছড়ি অঞ্চলে রাজনীতি খুব বেশি বিকশিত হতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধুকে পরিবার-স্বজন-সহকর্মীসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যকা-ের পর এ দেশের অবস্থা কেমন হয়েছিলো তা, ইতিহাস প্রমাণ দেয়। পঁচাত্তর থেকে নব্বই, সময়কালে বাংলাদেশে সামরিক স্বৈরাচারী দু:শাসন ছিলো। এই সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের অবস্থা বীভৎস-বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিলো। ফলে বলা চলে, সারাদেশের চেয়ে আরো করুণ।
আশি’র দশকে খাগড়াছড়িতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল রাজনীতি ও সংস্কৃতির একটি শক্তিমান ধারা প্রবাহিত ছিলো। যেটির নেপথ্যে প্রতিভূ ছিলেন প্রয়াত অধ্যাপক খলিলুর রহমান, অধ্যাপক শেখর দস্তিদার এবং সরকারি চাকুরে সুভাষ দে। এই তিন ব্যক্তির হাত ধরেই খাগড়াছড়ি শহরে জ্ঞানভিত্তিক-রুচিসম্মত এবং বিকশিত রাজনীতি-শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার পথ পরিক্রমা।
আশি’র দশকে হাজী দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী, নুরনবী চৌধুরী, হাজী রফিকউদ্দিন এবং প্রবীন চন্দ্র চাকমা’র নেতৃত্বে খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের রাজনীতি কোন রকমে টিকে ছিলো। এখন শেষের দুইজন আওয়ামীলীগ ছেড়ে অন্য দলের বড়ো নেতা।

আশি’র দশকের শেষভাগে খাগড়াছড়ি শহরের জনপ্রিয়মুখ মো: জাহেদুল আলম চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে জাতীয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ফলে সংগত কারণেই সারাদেশের মতো খাগড়াছড়িতেও তাঁর হাত ধরে ‘বাকশাল’ রাজনীতির গোড়াপত্তন ঘটে। তিনি বিশ^বিদ্যালয় জীবন শেষে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। শান্তি বাহিনী ফেরত যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে নিয়ে গঠন করেন ‘বাকশাল’র জেলা কমিটিও। নব্বইয়ের শুরুতে তিনিসহ অন্যরা আওয়ামীলীগে ফেরেন। তাঁর সময়ে প্রয়াত অরুণোদয় চাকমা, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বীর কিশোর চাকমা, চাইথোঅং মারমাসহ অনেক পাহাড়িমুখ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। একানব্বই থেকে ছিয়ানব্বইয়ের বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনে অনেকেই সক্রিয় ছিলেন। তাঁদের কেউ এখন মূল ¯্রােতের বাইরে, আবার কেউ কেউ হারিয়ে গেছেন। আকবর হোসেন চৌধুরী এবং মিন্টু দাশ নামের দুই নিবেদিত যুবলীগনেতা তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

এসময়ে আরো যাঁরা সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এড. মহিউদ্দিন কবির, প্রয়াত ছাত্রনেতা মুশফিকুর রহমান মারুফ, মাসুদজ্জামান মাসুদ, শিবু শংকর দেব, স্বপন চৌধুরী, রুকু মারমা, জুয়েল চাকমা, দিদারুল আলম, প্রয়াত টিটু লাল কর্মকার, আনোয়ারুল কবির টিপুসহ অন্যরা।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত শাসনামলে খাগড়াছড়িতে কী হয়েছিলো তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এই সময়ে জেলা ছাত্রলীগের সেই সময়কার সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে জামাত-শিবির প্রতিরোধ আন্দোলনের সাহসী সংগঠক হেমন্ত ত্রিপুরা বিএনপিতে যোগ দেন। আর অন্যদিকে খাগড়াছড়ি ঠিকাদার সমিতির তৎকালীন সা: সম্পাদক রফিকুল আলমকে কলাবাগান এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করা হয়। অনেকটা মৃত্যুর কাছ থেকে তিনি ফিরে আসেন। তখন তিনি আওয়ামীলীগের নেতা না হলেও শহরে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাঁকেই আতংক ভাবতো।
এক পর্যায়ে খাগড়াছড়ি শহর এবং উপজেলাগুলো একেবারে নেতাকর্মী শূন্য হয়ে যায়। সেই দু:সময়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়ে রামগড় থেকে খাগড়াছড়ি আসেন মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু। জেলাশহরের রাজনীতিতে আসেন মানিকছড়ির যুবলীগ নেতা যতন ত্রিপুরা।  
উর্পযুক্ত নামগুলোর বাইরেও অনেক নাম আছে। হয়তো আমার জানা নেই। এই তালিকা থেকেও সবাই ভালো নেই, নেই অনেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথেও।
তবু খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগ থেমে নেই, ছাত্রলীগ থেমে নেই। রাজনীতি কখনো থেমে থাকে না। বুর্জোয়া রাজনীতিতে কেউ কারো জন্য অপেক্ষা করে না। আসনও শূন্য পড়ে থাকে না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ির আওয়ামী রাজনীতিতে মূল্যবোধ-ইতিহাস গৌণ হয়ে উঠেছে। অর্থ-বিত্ত-পেশীসহ অন্যান্য অপ্রকাশ্য যোগ্যতাই যেনো দলের পদ-পদবীর জন্য মুখ্য হয়ে উঠেছে। ইতিহাস আশ্রয়ী দলটির ভেতরে ইতিহাস-ত্যাগ-অর্জনকে ম্লান করে দিয়ে অজ্ঞানকর-অন্ধকার এক হাসিক গল্প বানানোর পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।

ইতিহাস বলে, একটা সময় ছিলো সমতলে অধ্যয়নরত পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা সমান্তরাল দুটো ছাত্র সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থাকতেন। একদিকে জাতীয় কোন ছাত্র সংগঠন আর অন্যদিকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। মেধাবী ছাত্রনেতা-ভাইবোনছড়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান শক্তিপদ ত্রিপুরা ও মহালছড়ির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত আর্কিমিডিস চাকমা, সেভাবেই আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তাও ভালো। কিন্তু খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগের ভাগ্যে এমন মেধাবী নেতা জুটেনি। যাঁরা কোনদিন ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেনি। যে সরকার ক্ষমতায় ছিলো, তার দালালি করেছে, জনসংহতি সমিতি আর ইউপিডিএফ’র স্বার্থ হাসিল করেছে; তাঁদেরই জয়জয়কার হয়েছে। এখন তো অবস্থা এমন যে, বিএনপি-জামাত থেকে আসা লোকরাই বেশ কয়েকটি সহযোগী সংগঠনে সংখ্যাগরিষ্ঠ।
জীবনে প্রথম এসেই জেলা-উপজেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ন পদ পেয়ে যাচ্ছেন অহরহ। তার মানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা নেই। ভালো কোন কর্মসূচি নেই, যেখান থেকে ভালো কর্মী উঠে আসবে আর কর্মের তুলনা করা যাবে।

একসময়ের সাহসী তরুণ পুতুল চাকমা। পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনীতির সূতিকাগার দীঘিনালায় আওয়ামী রাজনীতির ত্যাগী নেতা ছিলেন। শুনেছি তিনি অনেক আগে  রাঙামাটিতে গুমের শিকার হয়েছেন। তাঁর পরিবারের অবস্থা কেমন, কেউ কখনো খোঁজই রাখেন না। একই অবস্থা প্রয়াত আর্কিমিডিস চাকমার ক্ষেত্রেও। নাজিরহাট কলেজ থেকে বিজ্ঞানে  স্নাতক উত্তীর্ন অগ্রজ আর্কিমিডিস চাকমা একই কলেজের ছাত্রাবাসে আমার পাশের কক্ষে থাকতেন। আমি এখনো বিশ্বাস করি, শক্তিপদ ত্রিপুরা এবং আর্কিমিডিস চাকমা’র মতো নেতাকে ধরে রাখতে পারলে খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগ যেমন উপকৃত হতো, তেমনি এই এলাকার সাধারণ মানুষও দুইজন ভালো অভিভাবক পেতেন।
আমার মনে হয়, সম্ভাবনাময় নেতা-কর্মীদের আগলে রাখার মানসিকতা খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগের অভিভাবকরা হারিয়ে ফেলেছেন। টানা দুই মেয়াদে সারাদেশের মতো খাগড়াছড়িতেও আওয়ামীলীগের স্বর্ণযুগ অতিবাহিত হচ্ছে। যতোই সময় যাচ্ছে ততোই ত্যাগী নেতাকর্মীরা হারিয়ে যাচ্ছেন। মিছিল-মিটিংয়ের ছবিতে দেখা যায় ব্যানার-ফেস্টুন ধরে আছেন, এমন লোকরাই, যাঁদের কণ্ঠে স্বত:স্ফুর্তভাবে শ্লোগানও উচ্চারিত হচ্ছে না।
নিজের বিশ^স্ত-পরীক্ষিত নেতা-কর্মী-সুহৃদদের দূরে ঠেলে বিএনপি-জামাতের লোকের বিশালাকার যোগদানেই যদি ঘর ভরে যায়, তাহলে একবার খুলনা সিটি কর্পোরেশনের দিকে তাকানো উচিত। আমরা সবাই জানি, বৃহত্তর খুলনা অঞ্চল আওয়ামী জনসমর্থন প্রভাবিত। সেই খুলনায় এতো উন্নয়ন সত্বেও নীরবে লক্ষাধিক ভোট পড়েছে বিরোধী বাক্সে।
খাগড়াছড়িতেও বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বেশিরভাগ ভোট পড়েছে আওয়ামী বিরোধী বলয়ে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পানছড়িতে নবরঞ্জন ত্রিপুরা সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ দিলেন। বছর কয়েক আগে মানিকছড়িতে প্রাণ দিলেন চিংসামং চৌধুরী। এই দুই জনের পরিবারের খোঁজ-খবর কেউ রাখার প্রয়োজন বোধ করেন না। উল্টো তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি ক্ষমতাবানদের আচরণ কেমন, তা আলোচনারও দাবি রাখে না।
এই লেখায় আমি কারো ব্যক্তি চরিত্র-বিত্ত-বৈভব এবং শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই না। চাই না কাউকে উপরে তুলতে আর নিচে নামাতে। কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের একজন রাজনীতি সচেতন সংবাদকর্মী হিসেবে আমার জানার-দেখার-শোনার-বলার এবং লেখার অধিকার আছে।
এই লেখাটি লেখার কোনই ইচ্ছে ছিলো না। আওয়ামীলীগের কে কি হলো কিংবা কে কতো টাকা কামালো, এটি নিয়েও আমার মাথায় কোনই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। কিন্তু যখন দেখি, যাঁরা আওয়ামীলীগকে পছন্দ তো দূরে থাক, অন্তত: এই তো কাছের দেখা ‘২০০১-২০০৬’ সময়কাল। নিজের চোখে দেখলাম, যাঁরা ক্ষমতার চারপাশে ঘুরপাক খেলেন, যেনতেনভাবে সুবিধা হাতিয়ে নিলেন, কখনো পাহাড়ি-কখনো বাঙালি, আবার কখনো আত্মাীয়-স্বজন!
কিছু চিহ্নিত লোক খাগড়াছড়ির একজন অসাম্প্রদায়িক-মেধাবী রাজনীতিককে ‘সমধিকার’ করার কুবুদ্ধি দিলেন। গভীর রাত অব্দি কূট বুদ্ধি দিয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের এবং ভিন্ন মতাবলম্বী বিএনপিদেরকেও এলাকাছাড়া করার পরামর্শ দিলেন!
অথচ, জাতির পিতা’র প্রতিকৃতি তাঁদের ঘরে-অফিসে শোভা পায় না। জাতির পিতার স্মরণ সভায় তাঁদের চোখে পড়ে না। কিন্তু আওয়ামীলীগের ক্ষমতার দুই মেয়াদে তাঁরাই খাগড়াছড়িতে সদর্পে নিজেকে আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারক হিশেবে জাহির করছে।
র্নিলজ্জ্বের মতো সবখানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সবখানে সুযোগ-সুবিধার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে। যেখানে যা পাচ্ছে লুঠেপুটে নিচ্ছে।
অথচ তার বিপরীতে আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের দু:সময়ের পরীক্ষিত কর্মীরা ভালো নেই। দলের একটি বিশেষ শ্রেণি বা অংশ ভালো থাকা মানে দল ভলো থাকা নয়। নেতা আর কর্মীর আন্তরিক বোঝাপড়া আর সুখে-দু:খে একসাথে চলার মাঝেই দল ভালো থাকে।

আগেই বলেছি, লেখাটি লেখার অনিচ্ছা সম্পর্কে। কিন্তু শুক্রবার রাতে ফেইসবুক-এ দেখলাম খাগড়াছড়ি ছাত্রলীগের এক সময়কার ত্যাগী ও নিবেদিত নেতা, কিছুদিন আগেও পৌরসভার কর্মচারি ছিলেন, সেই স্বাধীন জীবিকার অর্নিবার্য তাগাদায় শহরে ব্যাটারিচালিত অটো রিক্শা চালাচ্ছে। আমার অত্যন্ত 

স্নেহহভাজন খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি ইমরুল ও হিরো এই সম্পর্কিত দুটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। বেশ কয়েকটি পোর্টালেও এটি সংবাদ হিশেবে পরিবেশিত হয়েছে। অনেক চিন্তা করলাম। আরো অবাক হলাম, সেসব স্ট্যাটাসের নিচে প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকারী এমন একজনকে দেখলাম, যিনি নিজেই ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর স্বাধীন (ফরিদউজ্জামান স্বাধীন)-এর ওপর হামলা করেছে। খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে জাতির পিতার ছবি ভাংচুর করেছে। শুধু তাই নয়, আমিসহ স্বাধীনের নেতৃত্বে গড়ে তোলা একটি সাহিত্য সংগঠনও ছিনতাই করেছিল সেই দুর্বৃত্ত।


আজ অবাক লাগছে, কী বিচিত্র খাগড়াছড়ি! কী বিচিত্র এখানকার রাজনীতি!

দু:সময়ের আদর্শিক কর্মীরা সৎভাবে বাঁচতে চায়, আর সমবেদনা-করুণার নামেও সেসব বর্ণচোরা দুর্বৃত্তদের টিপ্পনী হজম করতে হচ্ছে।
ইচ্ছে করছে কোন আওয়ামীলীগ নেতার মুখের ওপর দিনভর বমি করি।

প্রদীপ চৌধুরী: খাগড়াছড়ির সংবাদকর্মী।