নাইক্ষ্যংছড়ির ৩ ইউপিতে নির্বাচন ১৪ অক্টোবর

প্রকাশঃ ১২ অক্টোবর, ২০১৯ ১১:৩৩:১৭ | আপডেটঃ ০৪ মে, ২০২৪ ০৬:৩১:০৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, সোনাইছড়ি, ঘুমধুম ইউপিতে আগামী ১৪ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে পুরো উপজেলা ৫ ইউনিয়নের মাঝে তিন ইউনিয়ন জুড়ে চলছে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা, তবে পুরো উপজেলা জুড়ে এ তিন ইউনিয়নের ভোট নিয়ে চলছে আলোচনার ঝড়।

এবার কে হচ্ছেন পাঁচ বছর মেয়াদের চেয়ারম্যান? প্রচার-প্রচারণায় মুখর প্রত্যন্ত পাহাড়ী-বাঙ্গালী গ্রামগুলো। গণসংযোগ চলছে, মাইকিং এর পাশাপাশি ভোট প্রার্থনায় পায়ে হেঁটে প্রার্থীরা ছুুটছেন এই পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। পাহাড়ী-বাঙ্গালী সবাইকে কাছে টানছেন তারা।

সদর ইউনিয়নে সরকার দলীয় প্রার্থী তসলিম ইকবাল চৌ: নৌকা প্রতীক নিয়ে শতভাগ আশাবাদী হলেও মাঠে সমান তালে আছেন আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আবছার উদ্দীন ইমন। তবে দুজনের মাঝেই উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে জামায়াত-বিএনপির নিরব ভূমিকা নিয়ে।

এদিকে,ইউনিয়নের মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর যাচাই-বাচাই ও প্রত্যাহার পর্ব শেষে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এবং সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী মাঠে নেমেছে বিজয়ের লড়াইয়ে। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী আরেফ উল্লাহ ছুট্টু এবং ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মো:আলী হোসেন ও সোনাইছড়ি ৫নং ওয়ার্ডে মংচিংথোয়াইর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীরা স্বেচ্ছায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এতে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা।

এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে পোষ্টার ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। জয়ের লক্ষ্যে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দীতার মাঠে জনগণের সমর্থন আদায়ে প্রার্থীর পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীরা দিন-রাত চষে বেড়াচ্ছেন মাঠ। অনেকেই প্রচার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মাঠে ময়দানে এখন বইছে নির্বাচনী আমেজ। আর ভোটাররাও উপভোগ করছেন প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা।

নৌকা নিয়ে নির্বাচনী জোয়ারে ভাসছে সরকারী দলীয় প্রার্থী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান ইউ.পি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী। রাজনৈতিক দিক থেকে উপজেলা জুড়ে যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে তার। সদা হাস্যোজ্বল মানুষ হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি তাঁর। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সংগঠন ছাড়াও সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন তিনি। রাজনীতির মাঠে বিচক্ষণ ও কর্মঠ মানুষ হিসেবেও পরিচিতি তিনি।জয়ের বিষয়ে শত ভাগ আশাবাদী তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান, উপ-নির্বাচনে নৌকার প্রতীকে ভোটারেরা বিপুল ভোটে জয় করে দুই বছর আমি চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালন করেছি। এখানে জাত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে আমরা একই মায়ের অভিন্ন সন্তান, সকলে মিলে মিশে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে উন্নয়নে কাজ করেছি। একজন পরীক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে আমি আশা করছি নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নবাসী তা মূল্যায়ন করবেন।

অপরদিকে আওয়ালীগ বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে মাঠে সমান তালে আছেন আবছার উদ্দীন। এ বিদ্রোহী প্রার্থী আবছার নির্বাচনের মাঠে চষে বেড়ালেও বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা ধরা দিচ্ছেনা প্রার্থী আবছারকে,এতে তার নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা একেবারে ভেস্তে যাওয়ার পথে। কারন জামায়াত-বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় প্রার্থীরা ভোটারের কাছে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা ভোটের মাঠে মূখ খুলছেনা। প্রার্থীর সাথে ভোটের মাঠে দেখাও যাচ্ছে না। কেন্দ্রে ভোট দিতে যাচ্ছেন কিনা? এই নিয়ে রাজনীতিবিদরা ভোটের হিসাব-নিকাশে মিলাতে পারছেনা, এবারে কে হবে সদরের চেয়ারম্যান ?

অন্যদিকে সোনাইছড়িতে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন ইউনিয়ন আ,লীগ সাধারণ সম্পাদক এ্যনিং মার্মা তার প্রতিদ্বন্ধি হয়ে লড়ছেন ইউনিয়ন আ,লীগ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান (বিদ্রোহী) বাহান মার্মা (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এ ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণা চলছে তুঙ্গে। তবে উপজেলার মধ্যে সোনাইছড়ি ইউনিয়নটি আওয়ামীলীগে ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

অন্যদিকে ঘুমধুম ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ইউনিয়ন আ,লীগ নেতা একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে সাবেক মেম্বার রশিদ আহাম্মদ ও (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা ছালেহ আহাম্মেদ প্রকাশ ছালেহ উদ্দীন। ত্রি-মূখী লড়াইয়ে লক্ষ্যে জোর প্রচারণা চালাচ্ছে প্রার্থীরা, এতে প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে জানান প্রার্থীর কর্মীরা।

এদিকে বান্দরবান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো:রেজাউল করিম জানান,আগামী ১৪ অক্টোবর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ৩টি ইউনিয়ন নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, সোনাইছড়ি, ঘুমধুম ইউপিতে নির্বচান অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবং সে লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।