রাঙামাটিতে নির্মিত হচ্ছে বুদ্ধধাতু জাদি মন্দির ‘নির্বাণদীপ’

প্রকাশঃ ০৪ অক্টোবর, ২০১৯ ১২:২৩:৩২ | আপডেটঃ ২৪ মার্চ, ২০২৪ ০৩:৫২:৪২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটিতে নির্মিত হচ্ছে ‘নির্বাণদীপ’ বা নির্বাণের প্রদীপ নামে বৌদ্ধধর্মীয় তীর্থ ও সাধনা কেন্দ্র বুদ্ধধাতু জাদি মন্দির। এটি হবে এ জেলার একমাত্র ও প্রথম বৌদ্ধধর্মীয় জাদি মন্দির। ‘নির্বাণদীপ বুদ্ধধাতু জাদি ভাবনা কেন্দ্র’ নামে বৌদ্ধধর্মীয় এ তীর্থ প্রতিষ্ঠানটি নির্মিত হচ্ছে, জেলার সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের হেমাছড়া মাস্টারপাড়ার উঁচু পাহাড় চূড়ায়।

মেঘছোঁয়া ওই পাহাড় চূড়ার উচ্চতা প্রায় হাজার ফুট। নির্মাণাধীন এ বুদ্ধধাতু জাদি মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন- বৌদ্ধধর্মীয় গুরু সাধকপ্রবর অরহৎ শ্রীমৎ ধর্মতিয্য মহাস্থবির। তিনি নির্বাণপ্রাপ্ত বৌদ্ধধর্মীয় মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের অন্যতম শিয্য। যিনি ভারত ও বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৪৫ বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তারই উদ্যোগে জেলার মধ্যবর্তী স্থানে সর্বশেষ নির্মিত হচ্ছে, এ বুদ্ধধাতু জাদি ভাবনা কেন্দ্রটি। এর নির্মাণ ব্যয় হবে প্রায় তিন কোটি টাকার অধিক। যেটি নির্মাণে কায়িক ও আর্থিক দান দিয়ে সহায়তা করছেন, পুণ্যার্থীরা। বর্তমানে প্রতিদিন শ’শ’ পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থী গিয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন ওই বুদ্ধধাতু জাদি ভাবনা কেন্দ্রে। এ ছাড়া প্রত্যেক শুক্রবার সেখানে আয়োজন করা হয় সাপ্তাহিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের।  

শুক্রবার মন্দিরটির দ্বিতীয় তলার ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় পুণ্যানুষ্ঠানে সাধকপ্রবর ধর্মীয় গুরু শ্রীমৎ ধর্মতিয্য মহাস্থবির বলেন, তথাগত ভগবান মহামতি গৌতম বুদ্ধের অনুসরণে এবং মহাগুরু বনভান্তের দিক-নির্দেশনায় ২০০৩ সালে এ বুদ্ধধাতু জাদি মন্দিরের কাজ করেন। চলতি বছর হতে আবার নতুন করে পুরোদমে কাজ চলছে। ২০২১ সালের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি নির্মাণে তিন কোটির অধিক টাকা ব্যয় হবে। এটি হবে বুদ্ধের আবিস্কৃত উপায় নির্বাণ লাভের হেতু উৎপন্ন তৈরির ধ্যান-সাধনা ও গবেষণার ভাবনা কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে হাসপাতালসহ বৌদ্ধভিক্ষু- ভিক্ষুনী থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা ও পরিবেশ সম্পন্নভাবে ভাবনা কেন্দ্রটি নির্মাণ করার চেষ্টা চলছে। ২০২১ সালের মধ্যে ৫ হাজার পুণ্যবতী বৌদ্ধ নারীকে প্রব্বজ্যা দিয়ে ভিক্ষুনী করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে শতাধিক পুণ্যবতী বৌদ্ধ নারী প্রব্বজ্যা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যাতে সহজে পুণ্যার্থী ও দর্শনাথী আসতে পারেন, সেই লক্ষ্যে রাঙামাটি জেলার মধ্যবর্তী স্থানে এ জাদি মন্দিরটি নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি মন্দিরটির নির্মাণে পুণ্যার্থীদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি এবং বেসরকারি মহল ও কর্তৃপক্ষের প্রতি সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

শুক্রবার সকালে শুরু হওয়া দিনব্যাপী পুণ্যানুষ্ঠানে রাঙামাটিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পুণ্যার্থী যোগ দিয়েছেন। তারা কায়িক শ্রম ও আর্থিক দান দিয়ে মন্দিরটির নির্মাণকাজে অংশ নিয়েছেন। উপস্থিত ছিলেন, দাতা জ্ঞানায়ন খীসাসহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি। অনুষ্ঠানে প্রব্বজ্যা গ্রহণের প্রস্তুতির জন্য অংশ নিয়েছেন, শতাধিক পুণ্যবতী।