প্রকাশঃ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১০:৫০:০২
| আপডেটঃ ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০৮:৫৯:৪২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির সাজেকে ‘খোয়াল বুক’ নামে একটি পর্যটন রিসোর্ট চালু করেছে, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। ‘খোয়াল বুক’ ত্রিপুরা ভাষা। যার বাংলা অর্থ অতিথিশালা। সাড়ে চার কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে নির্মিত চার তলাবিশিষ্ট রিসোর্ট ভবনটি সম্প্রতি উদ্বোধন করেছেন, রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। ২২ সেপ্টেম্বর ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমাসহ পরিষদের সদস্য ও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সাজেক ভ্যালির অবস্থান ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে। প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের পাহাড়বেষ্টিত বিশাল উঁচুভূমির সাজেক যেন মেঘে ছোঁয়া। যার দূরত্ব বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এরই মধ্যে পর্যটনের জন্য সাজেক হয়ে উঠেছে বিশাল সম্ভাবনাময়। সাজেকে পর্যটকদের অবকাশ যাপনে বিজিবির মারিশ্যা জোনসহ স্থানীয় উদ্যোক্তা অনেকে স্থাপন করেছেন বেশ কিছু রিসোর্ট। উন্নত মানের আরেকটি রিসোর্ট নির্মাণ করল রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এ পর্যন্ত সাজেকে ছোট বড় মিলে প্রায় ৮০-১০০ রিসোর্ট বা কটেজ গড়ে উঠেছে। তবে এসব রিসোর্টের বেশিরভাগই অনুন্নত ও অপরিকল্পিত হওয়ায় পর্যটন এলাকার পরিবর্তে সাজেক বস্তিতে পরিণত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরাসহ অনেকে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশে পর্যটনে ব্যাপক সম্ভাবনাময় সাজেকভ্যালি কাজে লাগালে হতে পারে বাংলাদেশের দার্জিলিং। তাই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকারের পাশাপাশি সাজেকে পর্যটন জোন গঠনের জন্য এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন উদ্যোক্তা। কিন্তু এতে সমস্যা এখনও অনেক। তা ছড়া আজও গড়ে ওঠেনি উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রকট রয়ে গেছে বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যা। অভাব জরুরি চিকিৎসার। রয়েছে নিরাপত্তাহীনতা। প্রায় সময় দুর্বৃত্তদের কাছে আক্রান্ত হন পর্যটকরা। দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে, পর্যটকবাহী গাড়ি। অথচ এমন পরিস্থিতির মধ্যেও দেশে বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে অঞ্চলটি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাজেকে ঘুরতে যাচ্ছেন প্রচুর মানুষ। কিন্তু পার্বত্য এলাকায় প্রবেশে কড়াকড়ির কারণে ইচ্ছা থাকলেও পাড়ি জমাতে চান না বিদেশীরা।
দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, প্রকৃতির লীলায়িত নন্দনকানন, পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্র সাজেকের রুইলুই নামক জায়গায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্মত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্মিত নতুন রিসোর্ট ‘খোয়াল বুক’ ভ্রমনপিপাসু মানুষের জন্য রাঙামাটির পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। রুইলুই পাহাড়ের চুড়ায় নবনির্মিত ওই রিসোর্টে অবকাশ করে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য লীলা অবগাহন করতে পারবেন দেশী বিদেশী পর্যটকরা। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে আন্তরিক। তার অংশেই সেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যাবস্থার পাশাপাশি এখন পর্যটন খাতে উন্নয়নে নজর দিচ্ছেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত সাজেক ঘিরে তৈরি হওয়া বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগালে এটি হবে বাংলাদেশের দার্জিলিং। আর পর্যটন খাতে অর্জিত হবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন- যাতে স্থানীয় লোকজনসহ বিপুল সুবিধা গড়ে উঠবে দেশের উন্নয়নে। তারই লক্ষ্যে আমরা চালু করেছি একটি রিসোর্ট।