ঈদের ছুটিতে প্রত্যাশিত বুকিং নেই বান্দরবানে, হতাশ ব্যবসায়ীরা

প্রকাশঃ ১১ অগাস্ট, ২০১৯ ১০:২৬:৫৯ | আপডেটঃ ২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০১:৫৬
কৌশিক দাশ, সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। ঈদের টানা ছুটি থাকলেও আগাম রুম বুকিং না হওয়ায় হতাশ বান্দরবানের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে পাহাড় কন্যা বান্দরবানে। আগে থেকে বুকিং হয়ে যায় হোটেল-মোটেল,গেষ্ট হাউস গুলো।

কিন্তু এবার ঈদে ভিন্ন চিত্র। টানা ৯ দিন সরকারি ছুটি থাকলেও আগাম কোন বুকিং হয়নি বান্দরবানের হোটেল-মোটেল,গেষ্ট হাউস গুলোতে। শুক্রবার থেকে টানা ইদের ছুটি শুরু হলেও এখনো ফাঁকা পর্যটন নগরী বান্দরবান। তাই হতাশ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ।

জেলা শহরের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও গেষ্ট হাউস গুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে এবার ঈদে আগাম বুকিং নেই বললেই চলে। টানা ৯ দিন বন্ধ থাকলেও ১৪ ও ১৫ আগস্ট ২ দিন কয়েকটি হোটেলে কিছু সংখ্যক রুম বুকিং রয়েছে, যা একে বারেই নগন্য। অন্যান্য বছর ঈদের ছুটিতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটে। পর্যটন স্পট গুলোতে থাকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়,তিল ধারণের ঠাই হয় না জেলার বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও গেষ্ট হাউস গুলোতে।কিন্তু এবার চিত্র ভিন্ন।
 
বান্দরবান নীলগিরি সড়কে অবস্থিত বন নিবাস রিসোর্ট এর পরিচালক মো: আইয়ুব জানান,এবার ঈদে আমাদের কোন আগাম বুকিং নেই। অন্যান্য বছর ঈদের ছুটিতে আগাম রুম বুকিং হয়ে যেত। আমরা পর্যটকদের রুম দিতে হিমশিম খেতে হত। কিন্তু এবার বুকিং নেই বললেই চলে। আমাদের ১৬টি রুম রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ১৪-১৫ আগস্ট আমাদের ৪/৫ টা রুম বুকিং হয়েছে।

মেঘলার হলিডে ইন রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপক মো:জাহিদ বলেন,এবার ঈদে আশা করছিলাম অনেক পর্যটকের সমাগম ঘটবে।কিন্তু টানা ৯ দিন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ১৪-১৫ আগস্ট কয়েকটি রুম বুকিং হয়েছে। যা আশানুরূপ নয়। শীতের মৌসুম ৩ মাস, পূজা ও ঈদের ছুটিতে পর্যটন ব্যবসা হয়। বাকী ৯ মাস আমাদের তেমন কোন ব্যবসা হয় না। তাই আমরা এসব দিনের আশায় বসে থাকি।


পাহাড়ের কোল ঘেষে মেঘের আনাগোনা, আঁকা-বাকা সর্পিল রাস্তা, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য পাহাড়ী বাঙ্গালীসহ ১১টি ক্ষুদ্র  নৃগোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ বসবাস পাহাড় কন্যা বান্দরবানে। তাই প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য্য কাছে ডাকে পর্যটকদের। প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে প্রকৃতির কন্যা বান্দরবানের সৌন্দর্য্য দেখতে হাজারো পর্যটক ছুটে আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। কিন্তু এবার ঈদের ছুটিতে জেলার হোটেল-মোটেল ও গেষ্ট হাউস গুলোতে আগাম কোন রুম বুকিং না হলেও আশা করছি ঈদের দিন তার পরবর্তী সময়ে পর্যটকের ব্যাপক সমাগম ঘটবে।

পরিবার পরিজন,বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ভ্রমন পিপাসুরা ছুটে যাবে এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে।এখানে রয়েছে অসংখ্য ঝিরি-ঝর্ণা,মেঘলার লেক,নজরকারা স্বর্ণ মন্দির, নীলাচল, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, বগালেক, রেমাক্রী, নাফাকুম, বড় পাথরসহ সরকারী-বেসরকারী অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্র ।




তবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পর্যটক না আশার কারণ হিসেবে দেখছেন ডেগু,বন্যা ও পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিবেশ। বর্তমানে চারিদিকে মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এজন্য মানুষ কোথাও যাচ্ছে না। অনেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। তাই হয়তো সেই ভয়ে কেউ ঘুরতে আসছে না। অন্যদিকে পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিবেশকেও পর্যটক না আশার কারণ হিসেবে দেখছেন এসব ব্যবসায়ীরা। 

বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন,এবছর ঈদে আশানুরূপ পর্যটকের আগমন হয়নি।এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী হতাশ।আমরা আশা করছিলাম টানা বন্ধ থাকায় এবার পর্যটকদের বেশ সমাগম হবে। কিন্তু তা একেবারেই ভিন্ন।



এদিকে পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার জানান,পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ভ্রমন করতে পারে সে লক্ষে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।এছাড়াও পর্যাপ্ত টুরিস্ট পুলিশ রয়েছে,তারা সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে, আর এখানে এসে কোনো পর্যটক যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেই দিক সজাগ দৃষ্টি রাখছে   পুলিশের সদস্যরা।