পাহাড়ে ৪টি গ্রুপ নয়, সরকার চাইলে একটি গ্রুপও থাকবে না : উষাতন তালুকদার

প্রকাশঃ ০৯ অগাস্ট, ২০১৯ ০৮:৩৯:৪১ | আপডেটঃ ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০৮:৫৩:৫৬
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ সভাপতি উষাতন তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির সময় আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি, একটা বুলেটও রেখে আসি নাই , সে সময় ইউপিডিএফ জন্ম নিলো কিভাবে? এরপর সংস্কারসহ ৪টি গ্রুপ কিভাবে জন্ম হয়েছে এর সমাধান সরকারের কাছে। সরকার চাইলে ৪টি কেন, একটা গ্রুপও থাকবে না, এজন্য সরকারকে আন্তরিক হয়ে রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তবে সরকার অন্য পথে হাটলে এটি কারো জন্য মঙ্গলজনক হবে না। পাহাড়ের মানুষ বরাবরই শান্তি প্রিয়, কিন্তু কিছু মানুষ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা চালায়, নষ্ট করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।

আর্ন্তজাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে আদিবাসী ফোরাম, পার্বত্য অঞ্চলের আয়োজিত আলোচনা সভা ও র‌্যালীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উষাতন তালুকদার এসব কথা বলেন।

উষাতন তালুকদার আরো বলেন, পাহাড়ীরা কারো বিরুদ্ধে নয়, আমরা বাংলাদেশী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অখন্ডতায় আমরা বিশ্বাসী, কোন দাবি আমরা সরকারের কাছে জানাতে-ই পারি, কিন্তু সেটা নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার কোন যৌক্তিকতা নেই।
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ীরা শান্তি প্রিয়, যে কেউ একজন সিএনজি চালক সমিতির নেতার কাছে চাঁদা চাইলো, যারা চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক, আমাদের আপত্তি নেই কিন্তু এজন্য সব পাহাড়ীদের দোষারোপ করা ঠিক না।

সকাল ১০টায় রাঙামাটি পৌরসভা চত্ত্বরে কবুতর উড়িয়ে আদিবাসী দিবসটির উদ্ধোধন করেন চাকমা সার্কেলের রাণী য়েন য়েন রায়। এরপর পাহাড়ে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। পরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা।



এতে আরো বক্তব্য রাখেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, রাঙামাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা প্রমুখ। বক্তারা চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন, বাংলাদেশের সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোকে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পাহাড়ীদের দাবি রাষ্ট্র বিরোধী নয়। এটি কোনো জাতির বিরুদ্ধে নয়। এটি আদিবাসীদের অস্থিত্ব রক্ষার দাবি। কিন্তু কিছু মহল আদিবাসীদের এ দাবিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আদিবাসীদের দাবিটি রাষ্ট্র বিরোধী বলে অপপ্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের সংবিধানে আজও আদিবাসীদের জাতিসত্তা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ভূমি অধিকারসহ মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি নেই।

আলোচনা সভা শেষে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি পৌর প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে গিয়ে শেষ হয়।