বিবাহ বিচ্ছেদ অস্বীকার স্ত্রীর, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন স্বামী !

প্রকাশঃ ২০ জুনe, ২০১৯ ০৯:০৬:৩১ | আপডেটঃ ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০৭:১৯:১২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। হলফনামা মূলে সম্পাদিত যৌথ বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেও তা অস্বীকার করছেন, স্ত্রী জানকী রানী দে ওরফে বেবী। একের পর এক নালিশ দিচ্ছেন স্বামী স্বপন চন্দ্র দাশের বিরুদ্ধে। মান-সম্মান খুইয়ে স্বামীর নাজেহাল করছেন রাস্তাঘাটে। ফলে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদেও রেহাই পাচ্ছেন না রাঙামাটির অসহায় শ্রমজীবী স্বপন চন্দ্র দাশ।

তিনি স্ত্রীর নির্যাতন ও হয়রানি থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। স্ত্রী জানকী রানীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য এমনটার নির্যাতন হয়রানির অভিযোগ করেছেন, গ্যারেজের শ্রমিক স্বপন চন্দ্র দাশ। এসব নিয়ে প্রকাশ্য সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
বুধবার বিকালে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন নির্যাতন হয়রানির অভিযোগ তুলে ধরেন, ভূক্তভোগী স্বামী স্বপন চন্দ্র দাশ।

রাঙামাটি শহরের ১০২ নম্বর রাঙ্গাপানি মৌজার ভেদভেদী রেডিও কলোনির বাসিন্দা প্রফুল্ল চন্দ্র দাশের ছেলে স্বপন চন্দ্র দাশ বলেন, তাদের একই এলাকার পাশে সনাতন পাড়ার বাসিন্দা মনিন্দ্র দে’র মেয়ে জানকী রানীর সঙ্গে সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী সামাজিকভাবে বিবাহ হয়েছিল ২০০৮ সালে। দাম্পত্য জীবনে আমাদের সংসারে এক ছেলে সন্তান আসে। বর্তমানে ছেলেটির বয়স প্রায় ৭-৮ বছর। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সব সময় অমিল থাকায় এবং কোনো বিষয়ে বনাবনি না হওয়ায় সংসারে ছিল অশান্তি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দরবারে সামাজিক সালিশে যেতে হয়েছে। তবু শান্তি আসে না। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের ৮ আগষ্ট রাঙ্গামাটির বিশিষ্ট আইনজীবী কল্যাণ মিত্র চৌধুরীর নোটারি পাবলিকে আমরা স্বাম-স্ত্রী উভয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে যৌথ বিবাহ বিচ্ছেদের হলফনামায় স্বাক্ষর করি।

স্বপন বলেন, হলফনামায় আমাদের সন্তান সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তার খোরপোষ বাবদ মাসে দুই হাজার টাকা দিতে বাধ্য থাকব বলে অঙ্গিকার করি। আমি প্রতি মাসে সেই টাকা দেই। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদ অস্বীকার করে আদালতে এবং বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক নালিশ ও মামলা দিয়ে আমাকে হেয় ও হয়রানি করে চলেছে জানকী। রাস্তাঘাটে দেখা হলে আমার সব মান-সম্মান সব খুইয়ে চরমভাবে নাজেহাল করে ছাড়ে আমাকে। ফলে তার ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। আমি এখন সম্পূর্ণ নিরুপায় ও অসহায়। এসব নিয়ে বিভিন্ন দরবারে সামাজিক সালিশের মাধ্যমে বহুবার আপস-মিমাংসা হয়। কিন্তু কোনোটাই রক্ষা করে না জানকী। আমি তার নির্যাতন ও হয়রানির হাত থেকে রেহাই পেতে চাই।

স্বপন আরও বলেন, আমি খুবই গরিব ও অসহায় শ্রমজীবী। একটি গ্যারেজে কাজ করে পেট চালাই। জানকী পর-পুরুষ প্রমোদ-লীলায় মত্ত। হাতেনাতে ধরা পড়ে। তবু তার চরিত্র বদলায় না। আমাদের সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ। অথচ প্রতিবন্ধীর সনদ নিয়ে ছেলের নামে সরকারি ভাতা তুলছে জানকী। শহরের হ্যাপির মোড় এলাকার জগদ্ধাত্রী মাত ৃমন্দিরের নিরসন কমিটির সচিব স্বপন কান্তি মহাজনও সালিশ করে দিয়েছেন। কিন্তু কিছুই মানে না জানকী। আদালতে একের পর এক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে সে। এর সর্বশেষ ১৬ জুন রাঙামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যভাবে একটি ফৌজদারি নালিশ দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে।  

এদিকে বিবাহ বিচ্ছেদ অস্বীকার করে স্বামী স্বপন চন্দ্র দাশের বিরুদ্ধে আদালত এবং জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন জায়গায় নালিশ দিয়েছেন জানকী রানী দে। তিনি বলেন, আমি একজন অসহায়, গরিব ও অশিক্ষিত নারী। তা ছাড়া আমার সন্তানটি প্রতিবন্ধী। এ করুণ অবস্থায় আমার বিবাহ বিচ্ছেদের হলফনামা সম্পাদন প্রশ্নই আসে না। এটা আমার স্বামীর সাজানো। এতে সংশ্লিষ্ট নোটারি পাবলিকের আইনজীবী জড়িত। সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বিভিন্ন দরবারে গিয়ে দারস্থ হচ্ছি। অথচ কোথাও সুষ্ঠু সুরাহা মিলছে না। তাই স্বপন চন্দ্রের সঙ্গে আমার যা হবার আইনিভাবে হবে।      

সালিশি বৈঠকের ব্যাপারে জগদ্ধাত্রী মাতৃ মন্দিরের নিরসন কমিটির সচিব স্বপন কান্তি মহাজন বলেন, আমরা কমিটির লোকজন বসে বিষয়টি নিয়ে আপস-মিমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তা মানতে চান না জানক রানী।