নিজের গণ সংবর্ধনার অর্থে শীতবস্ত্র দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য মঙ্গল কামনা করলেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি

প্রকাশঃ ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ ০৭:৪৭:১৪ | আপডেটঃ ০৬ মে, ২০২৪ ০২:৫২:০২
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। সমতলের চেয়ে পাহাড়ে শীতের প্রকোপ বেশি থাকে। বিশেষ করে দূর্গম এলাকার দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষরা নানা বৈরি বাস্তবতা আর ভৌগলিক কারণেও সরকারের সব সেবা নিতে পারেন না। তেমনি শীত মৌসুমেও এসব দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষ সয়ে যান শীতের কষ্টও। সেসব মানুষের ঘরে ঘরে শীতবস্ত্র কম্বল প্রদানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর জন্য আর্শীবাদ কামনার কর্মসূচি শুরু করেছেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
প্রতিমন্ত্রী পদ-মর্যাদায় শরণার্থী টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা স্বস্ত্রীক শনিবার বিকেলে দীঘিনালা উপজেলার দুর্গম নয়মাইল এলাকার গরীব ও দুস্থ পরিবারের মাঝে কয়েক’শ শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপি জেলাজুড়ে এই কর্মসূচি’র আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।
জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগের দু:সময়ের সাহসী অভিভাবক জননেতা কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হবার পরও কোন সংবর্ধনা নেননি। এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জিতেছেন। এর আগেই তিনি প্রতিমন্ত্রী পদ-মর্যাদায় শরণার্থী টাস্কফোর্স-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই আমরা গণ-সংবর্ধনার প্রস্তুতি নিলেও তিনি তা বিনয়ের সাথে নারাজি প্রকাশ করেন।
দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ কাশেম বলেন, ব্যক্তি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা একজন দানশীল ও অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা দরিদ্র মানুষের পাশে যথাসাধ্য দাঁড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ আওয়ামীগ নেতা মংসুইপ্রু চৌধুরী, জেলা ক্রীড়া সংস্থা’র সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা এবং জেলা পরিষদের তরুণতম সদস্য জুয়েল ত্রিপুরাও ব্যক্তিগত অর্থায়নে অনানুষ্ঠানিকভাবে শীতবস্ত্র ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছেন।
এদিকে নতুন শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল হাতে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন পাহাড়ি পল্লীর নারী-পুরুষরা। এসময় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, তাঁর সহ-ধর্মিনী মল্লিকা ত্রিপুরা, প্রবীন ব্যক্তিত্ব তপন ত্রিপুরা, সমাজকর্মী ও শিক্ষক চন্দ্র কিশোর ত্রিপুরা, স্থানীয় ইউপি সদস্য গনেশ ত্রিপুরা এবং সমাজকর্মী মালিনি ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় সোয়া দুই লাখ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ ২২ জানুয়ারি সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে গণ-সংবর্ধনা দেয়ার উদ্যোগ নেন।

কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের এই সভাপতি গণ-সংবর্ধনার কর্মসূচির পেছনে টাকা অপচয় না করে দলের নেতাকর্মীদের সামর্থ্য অনুযায়ী শীতার্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেন। এরপর থেকেই দলের দুই-একজন নেতা শীতবস্ত্র বিতরণে এগিয়ে আসেন। সর্বশেষ শনিবার (গতকাল) থেকে তিনি নিজেই জেলাজুড়ে সপ্তাহব্যাপি শীতবস্ত্র কর্মসূচি সমাপ্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে সকল ক্রান্তিকালে দরিদ্র মানুষের অবদানই বেশি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও দারিদ্র্যতার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করতে জীবনবাজি রেখেছেন।

এছাড়া খাগড়াছড়িতে সবার আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন ও খাগড়াছড়ি পৌরসভাও বিপুল পরিমাণ শীতবস্ত্র প্রদান করেছেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট-এর সদস্য ও কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগের নির্বাহী সদস্য এবং সদ্য সংরক্ষিত নারী আসনে সরকারি দলের মনোনয়ন মনোনীত তিন পার্বত্য জেলার সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা জানান, জননেতা কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা’র সৃজনশীল ও জনকল্যাণমূলক উদ্যোগে সবার শামিল হওয়া উচিত। কারণ, সাধারণ মানুষের মন জয় করার মধ্য দিয়েই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব।