পার্বত্য চুক্তি পুর্নমূল্যায়নের দাবিতে রাঙামাটিতে সাংবাদিক সম্মেলন

প্রকাশঃ ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:৩১:৪৮ | আপডেটঃ ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:২৮:২০

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বৈষম্যমূলক কতিপয় ধারা বাতিল পূর্বক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পুর্নমূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।


সোমবার ( ডিসেম্বর)  রাঙামাটি শহরে স্থানীয় একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলন থেকে দাবি জানানো হয়।

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের রাঙামাটি জেলা কমিটি আয়োজিত সংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি শাব্বির আহমেদ। সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিক, রাঙামাটি পৌর কমিটির সভাপতি ডাঃ মুহাম্মদ ইব্রাহিম পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুর হোসেন।

 

১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর সরকার জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর মধ্যে ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আশা ছিল পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে, তবে চারটি সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে চলছে অস্ত্রের মহড়া, মহা উৎসবে চলছে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।


চুক্তির পর পার্বত্য অঞ্চলে একে একে কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন জেএসএস (সন্তু), জেএসএস (এমএন লারমা), ইউপিডিএফ (প্রসিত) ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) পার্বত্য অঞ্চলে চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তাদের কাছে পাহাড়ি বাঙালিরা জিম্মি।


এতে আরো বলা হয় শান্তি চুক্তি সম্পাদনের সময় বাঙালি জনগোষ্ঠীর জাতিসত্তাকে অস্বীকার করে তাদের-উপজাতি আখ্যা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করেছে। শুধু তাই নয় চুক্তির খন্ডের নং ধারায়  উভয়পক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙালির অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড, সামাজিক রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুবিধায় পার্বত্য উপজাতিদের নানা অগ্রাধিকার শর্তযুক্ত করে বাঙালিদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় প্রথাগত রীতি অনুসরণের বিধান যুক্ত করায় সেখানে বসবাসরত বাঙালিরা ভূমিহীন বাস্তুচ্যুত হবার আশঙ্কায় দিন গুনছে।

 

বাংলাদেশের সংবিধানও ১৬ বার সংশোধিত হয়েছে। কোনো চুক্তি বা আইন তো আর সংবিধানের ঊর্ধ্বে স্থান পেতে পারে না। কেননা, আইন চুক্তি হয়ে থাকে সংবিধানের আওতায়। শান্তিচুক্তিও সেভাবে বাংলাদেশ সংবিধানের আওতায়ই হয়েছে। সেকারণে শান্তিচুক্তিতে সংবিধান বহির্ভূত বা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু থাকা উচিত নয়। শান্তিচুক্তির দুই দশক পরে আজ সময়ের দাবি শান্তিচুক্তি পুনর্মূল্যায়নের।


সময় বক্তারা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বৈষম্যমূলক ধারাগুলো সংশোধণ করে পাহাড়ের উপজাতি-বাঙালির মধ্যে বৈষম্য দূর করে সমতা আনয়ন পূর্বক চুক্তির পূনঃমূল্যায়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি স্থাপনে ব্যর্থ আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার অপসারণ,পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তাবাহিনীর ক্যাম্প পূনঃস্থাপনের জোর দাবী জানান।