জেলা পরিষদ থেকে হত্যা মামলার আসামী, আওয়ামীলীগের দোসরদের প্রত্যাহারের দাবি

প্রকাশঃ ১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০৮:২৬:৫৪ | আপডেটঃ ২১ নভেম্বর, ২০২৪ ০৩:৫৫:৪০
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। চলতি মাসের ৭ নভেম্বর রাঙামাটি জেলা পরিষদের নতুন অর্ন্তবর্তীকালীন পরিষদের বিতর্কিত সদস্যদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে রাঙামাটি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা।

এসময় তারা আরো বলেন, নতুন অর্ন্তবর্তীকালীন  জেলা পরিষদে মনোনীত রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা হলেন ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকার মনোনীত সাবেক অর্ন্তবর্তীকালীন জেলা পরিষদের সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের সাংষ্কৃতিক সম্পাদক রেমলিয়ানা পাংখোয়ার বড় ভাই লাল ছোয়াক পাংখোয়ার স্ত্রী, রয়েছে তারই ভাইপো ড্যানিয়েল লাল মুয়ান সাং পাংখোয়া।  
সদস্য প্রতুল দেওয়ান পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার উপদেষ্টা হওয়ার পর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। সদস্য বৈশাখী চাকমা সুপ্রদীপ চাকমার আত্মীয়। সাগরিকা রোয়াজা এককালে জাতীয় পাটি করতেন  পরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগে যোগ দেন। 

সাবেক ফুটবলার বরুন বিকাশ দেওয়ান বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের দীর্ঘদিন যাবত জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীপংকর তালুকদার তাকে জাতীয় পুরষ্কারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

নারী সদস্য নাইউ প্রু  মারমা জেলা আওয়ামীলীগের নেতা বাচ্চু  মারমার স্ত্রী।  অপর নারী সদস্য লুৎফুন্নেসা বেগম  বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের সাবেক বন ও পরিবেশ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদের পারিবারিক এনজিও সুখী বাংলা ফাউন্ডেশনের পার্টনার সংস্থা পর্বত মানব উন্নয়ন সংস্থা-পাড়ার নির্বাহী পরিচালক আব্বাস উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী। বিগত সময়ে তার কথিত এনজিও পাড়ার মাধ্যমে জলবায়ু ফান্ডের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও রাঙামাটি পৌরসভার সাবেক মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীর বোনের দেবর।


সদস্য দয়াল দাশ নানিয়ারচর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন। নানিয়ারচর উপজেলা থেকে অপর সদস্য প্রণতি রঞ্জন খীসা তিনি বুড়িঘাট ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন।  তিনি হত্যা মামলার চার্জশীট ভুক্ত পলাতক আসামী। তার বিরুদ্ধে  ফৌজদারী মামলা জিআর নং ৩১৯/২০১৮ রাঙামাটির আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।  

সদস্য মিনহাজ মুরশিদ লংগদু উপজেলার বাসিন্দা হলেও ঢাকায় একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে লেখাপড়া কালীন সময়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক ইনানের রুমমেট ছিলো এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো।
হাবিবে আজম পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিল। বাঙ্গালী ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি করলেও তিনি ফ্যাসিষ্ট সরকারের সাবেক সাংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের পৃষ্টপোষকতায় তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মুসা মাতব্বরের ভাতিজি জামাই।

তারা আরও বলেন, নবগঠিত অন্তর্বতীকালীন জেলা পরিষদে সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কাউখালী, বরকল,জুরাছড়ি ও রাজস্থলী উপজেলা থেকে কোন প্রতিনিধি না রেখে ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে  তারা বলেন, রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আওয়ামী ঘরোয়া পিপি, সহকারী পিপি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা ৫ আগষ্ট খুনীদের দোসরদের বসিয়ে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করা হয়েছে।

এসব বিতর্কিত ব্যক্তিদের অপসারণ করতে বৃহস্পতিবার সকালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা আন্দোলনে নামবেন বলে জানানো হয়।
এসময় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা মো. রাকিব হাসান, মো ইমাম হোছাইন, তানভীর রাহাত, শাহীন আল নূর আবছার, শাহজাহান, তুহিন ও রাতুলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।